Logo
শিরোনাম

ধ্বংসের মুখে দেশীয় শিল্প খাত

প্রকাশিত:শুক্রবার ১১ আগস্ট ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

ফেব্রিক আমদানিতে ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্যের সুযোগ নিয়ে দিনের পর দিন সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে কিছু স্থানীয় অসাধু ব্যবসায়ী। এতে দেশে উৎপাদিত ফেব্রিক মূল্য তুলনামূলক বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতার বাজারে পিছিয়ে পড়ছে। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে আমদানি করা ফেব্রিকের মূল্য ট্যারিফ ভ্যালুর চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি।

ফলে একদিকে যেমন দেশীয় টেক্সটাইল মিলগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে, অপরদিকে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। তাছাড়া কর্মসংস্থানহীন হয়ে পড়ছে লাখো মানুষ এবং সঠিক এলসি না হওয়ায় যথাযথ চার্জ ও কমিশন বঞ্চিত হচ্ছে ব্যাংক এবং বিমা খাত। এক্ষেত্রে ট্যারিফ ভ্যালু পরিবর্তনে বারবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি দেওয়া হলেও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির। এমন প্রেক্ষাপটে সবকিছুর জন্য এনবিআরের উদাসীনতা ও নির্লিপ্ততাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। তাদের অভিমত, এনবিআরের উদাসীনতায় দেশীয় অর্থনীতি প্রতিনিয়ত বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৩০ মে প্রকাশিত ১৬৩-আইন/২০১৯ ৩২ কাস্টমস এসআরও-তে কটন ফেব্রিক, পলিস্টার/সিনথেটিক ফেব্রিক, শার্টিং ফেব্রিক, রেয়ন ফেব্রিক, সার্টেইন ফেব্রিকসহ বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিকের ট্যারিফ মূল্য ২.২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫.৫০ ডলার ধার্য করা হয়েছে। ট্যারিফ মূল্য হলো উৎপাদন ও প্রস্তুত পর্যায়ে পণ্যের ন্যূনতম খরচের নির্ধারণ। মূলত শুল্ক ও কর ফাঁকি রোধে এবং ভোক্তা পর্যায়ে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্যের নিশ্চয়তা দিতে সরকার ট্যারিফ মূল্য নির্ধারণ করে। অর্থাৎ এই দামের নিচে কোনো পণ্য আনা যাবে না, আনা গেলেও ন্যূনতম খরচ অনুসারে শুল্ক ও কর দিতে হবে।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে এসব ফেব্রিকের মূল্য প্রকারভেদে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ৭.৩৮ ইউএস ডলার থেকে ১৮.৯০ ডলার পর্যন্ত। ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিক্রেতাদের যোগসাজশে আন্ডার ইনভয়েস (কম মূল্য) বা ন্যূনতম মূল্য দেখিয়ে এসব ফেব্রিক আমদানি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এতে তাদের ন্যূনতম মূল্যের শুল্ক ও কর দিতে হয়। ফলে উপযুক্ত শুল্ক ও কর থেকে বঞ্চিত হয় সরকার। তবে আন্ডার ইনভয়েস বা ন্যূনতম মূল্য দেখালেও যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচলিত দর হিসেবেই বিক্রেতাকে মূল্য পরিশোধ করতে হবে, তাই ন্যূনতম মূল্যের পর যে অর্থ বাকি থাকে তা হুন্ডির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিক্রেতাকে পরিশোধ করতে হয়। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের দিকে নজর দিলেই তা স্পষ্ট হয়। বিলাসী পণ্য আমদানিতে সরকার নিষেধাজ্ঞা দিলেও ফরেক্স মার্কেটে ডলার ক্রয়-বিক্রয় বেড়েছে।

এই কর্মকাণ্ডের ফলে একই মানসম্পন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে দেশীয় উৎপাদকদের তুলনায় কম মূল্যে পণ্য আমদানি করছেন আমদানিকারকরা। পরবর্তী সময়ে সেই পণ্য নামমাত্র মুনাফায় বিক্রি করে দিচ্ছেন স্থানীয় বাজারে। এতে আইন ভঙ্গ হলেও কম মূল্যে বিদেশি পণ্য পেয়ে মানুষও তা কিনছে দেদার। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় উৎপাদক কারখানা ও সংশ্লিষ্টরা। কারণ দেশীয় উৎপাদকদের প্রতি কেজি সুতার মানভেদে ন্যূনতম উৎপাদন খরচ ২.৯০ ইউএস ডলার বা তার চেয়েও বেশি। এর সঙ্গে পরিবহন, ব্যাংক সুদ, সাইজিং খরচ, ইয়ার্ন ডায়িং খরচ, উইভিং, ডায়িং ও ফিনিশিং খরচ যোগ করলে ন্যূনতম ব্যয় দাঁড়ায় ৫.৪০ ডলার। ক্ষেত্র বিশেষে তা ৮-১০ ইউএস ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এ কারণে আমদানিকারদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেন না স্থানীয় উৎপাদকরা। এমনিতেই বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে কারখানাগুলোতে উৎপাদন নেই বললেই চলে, এর মধ্যে যদি আমদানিকারদের সঙ্গে এমন অসম প্রতিযোগিতায় নামতে হয় তবে কয়েক হাজার কারখানা বন্ধ হওয়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে এসব কারখানার সঙ্গে জড়িত লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন বা বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই ট্যারিফ মূল্য আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের ওপর ভিত্তি করে পুনর্নির্ধারণ বা এই সুবিধা উঠিয়ে দেওয়ার জন্য ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।

একই বছরের মার্চ মাসে ট্যারিফ মূল্য পুনর্নির্ধারণের পাশাপাশি এসব ফেব্রিক ও ইয়ার্ন কেজির পরিবর্তে মিটারে হিসাবায়ন করতেও বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল সংগঠনটি। সে সময় সংগঠনটি জানায়, আমদানিকৃত পলিস্টার টুইস্টেড ইয়ার্ন দিয়ে জর্জেট ও হিজাবের জন্য ফেব্রিক তৈরি হয়। একই পরিমাণ ১ কেজি কটন ইয়ার্নের চেয়ে পলিস্টার টুইস্টেড ইয়ার্নের আয়তন ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি হয়। ফলে এই সুতা দিয়ে বেশি পরিমাণ কাপড় উৎপাদন করা যায়, যা কটন ইয়ার্নের ক্ষেত্রে পরিমাণ খুবই কম। বিটিএমএ জানায়, ফেব্রিকের ট্যারিফ ভ্যালু কেজির পরিবর্তে মিটারে নির্ধারিত হলে আমদানিকৃত ফেব্রিক বন্ড সুবিধায় বা বাণিজ্যিক, যেভাবেই আমদানি করা হোক না কেন; অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের সুযোগ হ্রাস পাবে।

বিষয়গুলোতে নিজেদের পর্যালোচনা ও মতামত দিয়ে এর সঙ্গে একাত্মতা জানায় ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের বাণিজ্যনীতি বিভাগের সদস্য শাহ মো. আবু রায়হান আলবেরুনী। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে নির্দেশক্রমে চিঠি পাঠায় কমিশনের সহকারী প্রধান মাহমুদুল হাসান। পরে এ নিয়ে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি তৎকালীন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এনবিআরের চেয়ারম্যান, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএর প্রেসিডেন্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর ২৩ জানুয়ারি ২০২১ ট্যারিফ ভ্যালু পুনর্নির্ধারণে এনবিআরের তৎকালীন দ্বিতীয় সচিব রকিবুল হাসানকে চিঠি লেখেন বিটিএমএর সদস্য সচিব মনসুর আহমেদ। এরপর পেরিয়ে গেছে চারটি বছর। পাস হয়েছে ৪টি জাতীয় বাজেট। এরই মধ্যে আরো অনেক ব্যবসায়ী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান থেকে এ বিষয়ে এনবিআরকে চিঠি দিলেও অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখেনি ট্যারিফ পুনর্নির্ধারণের এই প্রস্তাবনা। ফলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদাসীনতায় হুমকির মুখে দেশীয় শিল্প-কারখানাগুলো, কর্ম হারাবে লাখ মানুষ।

এ বিষয়ে বিটিএমএ সচিব মনসুর আহমেদ বলেন, আমরা ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর এ নিয়ে এনবিআরকে চিঠি দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বাজেটেই তার প্রতিফলন দেখিনি। ট্যারিফ ভ্যালু পরিবর্তন বা ট্যারিফ নির্ধারণে ইউনিট হিসেবে কেজির পরিবর্তে মিটারে হিসাবায়নের প্রস্তাব কেন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না, সে সম্পর্কেও তারা কিছু বলেন না।

অপরদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস অটোমেশন বিভাগের প্রথম সচিব রাকিবুল হাসানের সঙ্গে কথা বললে তিনি প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, সাধারণত আমাদের যখন চিঠি দেওয়া হয় তখনই বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হয়। এটা দুই বছর আগের একটি চিঠি, তাই এটা নিয়ে এখন আমাদের কোনো পদক্ষেপ নেই।

দেশীয় অর্থনীতির ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি কেন বাজেটে প্রতিফলিত হলো না জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, তারা চিঠিটি এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে দিয়েছেন। তাই তিনিই এ নিয়ে ভালো বলতে পারবেন।


আরও খবর



কক্সবাজারে বন কর্মকর্তা সজল হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ |

Image

উচিংছা রাখাইন কায়েস, রাঙ্গামাটি : 

পাহাড়খেকোর ডাম্প ট্রাকের চাপায় নিহত কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বিটের বিট কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদুজ্জামান সজল হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে রাঙ্গামাটি বন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

আজ রাঙ্গামাটি বন বিভাগের সম্মুখে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মোঃ জাহিদুল রহমান মিয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী, ইউ এস এফ বন বিভাগের মোঃ সোহেল রানা সহ বন বিভাগের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

বক্তারা বলেন কক্সবাজার জেলার উখিয়ায় চিহ্নিত পাহাড় খেকো চক্র তাদের অপকর্ম বিনাবাধায় চালিয়ে যেতে এবং বন বিভাগকে হুমকি বার্তা দিতে পরিকল্পিতভাবে এই সজলকে হত্যা করেছে। 

এই নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূল শাস্তি নিশ্চিত করা দাবি জানান রাঙ্গামাটির বন বিভাগের কর্মরত সকল কর্মকর্তাও কর্মচারী। 


আরও খবর



৩৫ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ইউজিসির নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) দেশের ৩৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে। এরমধ্যে ৩০টিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য না থাকায় শিক্ষার্থীদের সনদে সাক্ষর করার বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই।

এছাড়া অবৈধভাবে ক্যাম্পাস ও অবৈধ শিক্ষা কাযক্রমে পরিচালনার জন্য দায়ে ৩টি, নির্ধারিত সময় স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ায় একটি এবং সাময়িক অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ ও আদালতে মামলা থাকায় আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি। ভর্তি হয়ে কেউ প্রতারিত হলে ইউজিসি কোনো দায়-দায়িত্ব নেবে না বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

গত ১ এপ্রিল সাক্ষরিত এক চিঠিতে এমন সতর্কতা জারি করে ইউজিসি। যদিও চিঠি সোমবার (৩ এপ্রিল) ইউজিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম ইউজিসির ওয়েবসাইট থেকে দেখে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত সতর্কীকরণ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী ১০৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭৪টিতে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত উপাচার্য রয়েছেন। বাকি ৩০টি বৈধ কোনো উপচার্য নেই।

ইউজিসি জানিয়েছে, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ ও কমিশনের নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে অননুমোদিত ক্যাম্পাস, অননুমোদিত প্রোগ্রাম বা অনুমোদিত প্রোগ্রামে কমিশন নির্ধারিত আসন সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত আসনে শিক্ষার্থী ভর্তিপূর্বক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এ সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে অননুমোদিত/অবৈধভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা থেকে বিরত থাকার জন্য কমিশন থেকে ইতোমধ্যে একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত ডিগ্রির মূল সার্টিফিকেট-এ স্বাক্ষরকারী হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কর্তৃক নিয়োগকৃত ভাইস-চ্যান্সেলর এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেউ কোনো অননুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অননুমোদিত ক্যাম্পাস, অননুমোদিত প্রোগ্রামে বা অনুমোদিত প্রোগ্রামে কমিশন নির্ধারিত আসন সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত আসনে ভর্তি হয়ে প্রতারিত হলে এবং পরবর্তীতে কোনো আইনগত সমস্যা সৃষ্টি হলে তার দায় কমিশনের উপর বর্তাবে না।

অবৈধ ক্যাম্পাস ও শিক্ষাকাযক্রম চালাচ্ছে তিন বিশ্ববিদ্যালয়

ইউজিসি বলছে, অবৈধ ক্যাম্পাস ও অবৈধভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে রেড এলার্ড জারি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো-ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা।

এই তিন বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাপারে ইউজিসির রেড এলার্ডে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রমের আর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।

এ বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুমোদিত কোনো ক্যাম্পাস ও ঠিকানা এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ, কৃত কোনো ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়টির বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই।

এছাড়া বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং আদালতে মামলা রয়েছে। ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভাসিটি ও দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা এর একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা ও ফলাফল এবং প্রদত্ত একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।

স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি একটি

এছাড়াও ভিক্টোরিয়া ই্উনিভাসিটি ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রয়েছে।

স্থায়ী সনদ নবায়ন নেই একটির

স্থায়ী সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া, শুরু থেকে মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব, মামলা, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগে বৈধ ভিসি-প্রো-ভিসি ও ট্রেজারায় না থাকা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক কোনো অডিট ফার্ম দ্বারা অডিট না করার কারণে মিরপুরে অবস্থিত সেন্ট্রাল ইউনিভাসিটির অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত বিভাগের অনুমোদন আছে কি নাসেটিও ইউজিসির ওয়েবসাইটে দেখে নেওয়ার আহ্বান মঞ্জুরি কমিশনের।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ওমর ফারুক বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা যেন সচেতন থাকেন এবং জেনে-শুনে তাদের সন্তানদের ভর্তি করাতে পারেন সেজন্য প্রতি সেমিস্টারের আগে এ ধরনের সতর্কতা বা গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত উপচার্য, প্রো-উপচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অভিহিত করা হয়। সবাইকে ইউজিসির সার্কুলার ও ওয়েবসাইট দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।


আরও খবর



ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে অনীহা বাড়াচ্ছে দুর্ঘটনা

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ |

Image

রাজধানী ঢাকায় প্রতি বছর যে পরিমাণ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় তার প্রায় অর্ধেকই পথচারী। সংখ্যার হিসাবে বছর শেষে যা ২৫০ থেকে ২৮০। সড়কে বেপরোয়া বাহনের পাশাপাশি সমানতালে বেপরোয়া পথচারীও। যত্রতত্র পারাপার আর ফুটওভার ব্রিজে অনীহা বাড়াচ্ছে দুর্ঘটনা। তবে ট্রাফিক বিভাগ বলছে, সড়ক আর ফুটপাতের অব্যবস্থাপনা উসকে দেয় এমন দুর্ঘটনা। নগর কর্তৃপক্ষ এর জন্য দায়ী করছে অসচেতনতাকে।

ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৩- খবরের এমন শিরোনাম যেন নিত্যদিনের। বলতে গেলে প্রতিদিনই এই নগরের কোথাও না কোথাও ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।

তবু থামছে কই। কারণে অকারণে নানা অজুহাতে একটু সময় বাঁচাতে প্রাণ হাতে নিয়েই পাড়ি দিচ্ছে নগরের পথ। যেনো দুই এক মিনিট সময় বাঁচিয়েই করা যাবে বিশ্বজয়। সবই জানা, তবু যেনো মানতে মানা।

পরিসংখ্যান বলছে, রাজধানী ঢাকায় প্রতিবছর অর্থাৎ প্রতি ৩৬৫ দিনে পাঁচ থেকে সাড়ে ৫০০ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তবে অবার করার মতো তথ্য হচ্ছে এর ৪৭ থেকে ৪৯ ভাগই পথচারী। অর্থাৎ চলার পথে পেছন থেকে ধাক্কা কিংবা সড়ক পারাপারেই প্রাণ রাজধানীতে ঘটছে অধিকাংশ দুর্ঘটনা। এরপরেই ২৪ ভাগ দুর্ঘটনার কারণ পেছন থেকে ধাক্কা যা বিশৃঙ্খল গণপরিবহনেরই চিত্র তুলে ধরে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, পথচারীদের সঙ্গে দুর্ঘটনার জন্য বেশিরভাব সম্পৃক্ত বাস-ট্রাকের মতো ভারী যানবাহনগুলো। অনুপাত হিসাব করলে ২২ থেকে ২৩ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে মোটরসাইকেল আরোহী বা মোটরসাইকেল কেন্দ্রিক।

ট্রাফিক বিভাগ বলছে, এমন দুর্গটনার অন্যতম কারণ রোড ইঞ্জিনিরয়ারিং। তার মানে গলদ আছে সড়ক ব্যবস্থাপনায়। তাছাড়া বেদল আর পথচারী বান্ধব না হওয়ায় ফুটপাত, পুট ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহারেও রয়েছে অনীহা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম কমিশনার এসএম মেহেদী হাসান বলেন, সড়ক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিষয়গুলো আমাদের জন্য আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি ফুটপাতগুলোও পথচারী বান্ধব নয়।

তবে নগর কর্তৃপক্ষ সরাসরি দায়ী করছে অসেচতনাকে। বলছে, কাজ করতে হবে সব পক্ষের সচেতনতায়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, অনেকে হঠাৎ করেই রাস্তার মাঝখান দিয়ে দৌড় দেয়। শর্টকাট করলে কিন্তু হবে না। গাড়ির চালক ও পথচারী সবাই নিয়ম মেনে চললে এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে অনেকখানি রক্ষা পাওয়া যাবে। দেশে মোট সড়ক দুর্ঘটনার ২৩ ভাগই হয় শহরে। আর তার ৭৪ ভাগই রাজধানী ঢাকায়।


আরও খবর



গরমে বাড়ছে নিউমোনিয়ার প্রকোপ

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

তীব্র তাপপ্রবাহে বেশি অসুস্থ হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। রাজধানী ঢাকার শিশু হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। আউটডোরে গত কয়েকদিনে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে গড়ে তিন থেকে চারশ। জ্বর-সর্দি ও ডায়রিয়া নিয়ে বেশি শিশু আসছে হাসপাতালটিতে। তবে ভর্তি হচ্ছে বেশি নিউমোনিয়া নিয়ে। নিউমোনিয়ার প্রকোপ সাধারণত শীতে বাড়লেও এবার গরমের কারণেও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।


হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, গরমের তীব্রতা বাড়ার আগে দৈনিক ৭শ থেকে ৮শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসতো। তবে এই মুহূর্তে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অ্যাজমা, সাধারণ ঠান্ডা সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১১শ থেকে ১৩শ রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছে। এই মুহূর্তে হাসপাতালটিতে নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি ৮৭ জন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান গেটে ঢুকতেই হাতের বাম দিকে থাকা ভবনে টিকিটের জন্য অপেক্ষমাণ স্বজনরা। ভবনের টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রচুর ভিড়। এখান থেকে অভিভাবকরা তাদের সন্তানের জন্য টিকিট কেটে জরুরি বিভাগ কিংবা আউটডোরে দেখাতে অপেক্ষা করছেন। অনেকে আবার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য টাকা পরিশোধ করে টেস্টের জন্য বসে আছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, সবগুলো ওয়ার্ডই রোগীতে পূর্ণ।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের দুই নম্বর ওয়ার্ডের ১৬ নম্বর সিটে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ৯ মাস বয়সী তাহমিদা আক্তার। তার দেখভাল করছেন মা। পাশে দাঁড়িয়ে আছেন চাচা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, আমরা ভোলা থেকে এসেছি। একমাস ধরে নিউমোনিয়ায় ভুগছে তাহমিদা। প্রথমে অসুস্থ হলে তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কিছুদিন পর সুস্থতা অনুভব করলে বাসায় চলে আসে। এর কিছুদিন পর আবারও সমস্যা দেখা দেয়। এরপর শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে ছয়দিনের মতো ভর্তি আছে।

ঠান্ডা-জ্বর নিয়ে হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ১৫ নম্বর সিটে চিকিৎসা নিচ্ছে দুই বছর চার মাস বয়সী হুমাইরা। ঢাকায় মহাখালী ডিওএইচএস এলাকার বাসিন্দা তারা। পাশে বসা মা সাবিনা আক্তার। তিনি বলেন, মেয়ের হঠাৎ করে জ্বর-সর্দি কাশি শুরু হয়। এরপর পাতলা পায়খানা হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেক শিশু। এদের মধ্যে পাঁচ ধরনের সমস্যা নিয়ে বেশি আসছে রোগীরা। যেমন সর্দি-জ্বর, শরীরে র্যাশ ওঠা, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও অ্যাজমা। এসব রোগীর মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্তরা বেশি ভর্তি হচ্ছে। শয্যা সংকটের কারণে বেশির ভাগ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অন্য সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

শিশু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফারহানা আহমেদ বলেন, তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন শিশু ও বৃদ্ধরা। এসময়ে শিশুদের জ্বর, ঠান্ডা-কাশি, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, গরমে হওয়া বিভিন্ন চর্মরোগ, নিউমোনিয়া আমরা বেশি পাচ্ছি। গত কিছুদিনের দাবদাহে সমস্যাটা আরও বেশি বেড়েছে।

গরমে শিশুদের প্রচুর ঘাম হয়। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয় দ্রুত। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও থাকে কম। যে কোনো কিছু মুখে দেয়, সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করে খায় না, বাইরের বিভিন্ন খাবারে তাদের আগ্রহ বেশি থাকে। এসব কারণে বাচ্চারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এছাড়া ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি তো হচ্ছেই।

তিনি বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি মানতে হবে। যেমন ফুটানো পানি পান করা, একদম ঠান্ডা পানি না পান করে হালকা ঠান্ডা পানি মিশিয়ে খাওয়া, বাইরে যাওয়ার সময় পানির বোতল নিয়ে যাওয়া এবং বাইরের খাবার না খাওয়ানো। বাইরে থেকে এসে ঘাম মুছে দেওয়া। প্রতিদিন নরমাল পানি দিয়ে গোসল করানো। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির পাশাপাশি বাচ্চাদের মৌসুমি ফলের রস খাওয়ানো উচিত।

শিশু হাসপাতালে রোগীর চাপ সামাল দিতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গরম এলে আমাদের হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যায়। ভর্তিও হচ্ছে অনেক বেশি রোগী। এই বাড়তি চাপ সামাল দিতে আমরা রোগীদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করি।

নিউমোনিয়া রোগীদের ক্ষেত্রে আমরা ৭-৮ দিন চিকিৎসা দেই। বর্তমানে পাঁচদিনের মধ্যে তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে গেলে ছুটি দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এতে পরিবারের জন্যও ভালো এবং অন্য নতুন রোগীও ভর্তি হতে পারে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় গড়ে শতাধিক রোগী আমাদের ভর্তি করানোর প্রয়োজন হচ্ছে। তাদের জন্য আসন খালি করতে অন্য একশজনকে ছাড়তে হয়। আমাদের একটা ওয়ার্ডের কাজ চলছিল। সেখানে ২৬টি সিট আছে। সেগুলো আজ থেকে চালু হলে আরও ২৬ জন রোগী ভর্তি হতে পারবে।

তিনি বলেন, আমরা ইমার্জেন্সি অবস্থার জন্য একটা ইমার্জেন্সি ফাইটার্স নামে দল গঠন করেছি। তারা জরুরি অবস্থায় চিকিৎসা দেবে। এছাড়া রিজার্ভ চিকিৎসকও রাখা হয়েছে। এক মাসের শিশুদের ক্ষেত্রে যেন কোনো লাইন না থাকে সে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এই গরমে তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।

পরিচালক বলেন, ১৯ জনের মতো নিউমোনিয়া রোগী গত ২৪ ঘণ্টায় (২২ এপ্রিল) ভর্তি হয়েছে। এখন ৮৭ জন নিউমোনিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি। আমরা এবছর বেশি নিউমোনিয়া রোগীর চিকিৎসা করছি। জানুয়ারি মাসে ৫১৪ জনের মতো, ফেব্রুয়ারিতে ৫৫৫, মার্চে ৫৩৩ আর চলতি মাসে এখন পর্যন্ত তিনশজনের মতো নিউমোনিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। এটি পাঁচশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সে তুলনায় আমাদের হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি কম। এ মাসে মাত্র পাঁচজন ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই মুহূর্তে ডায়রিয়া রোগী তেমন ভর্তি হচ্ছে না। যারা আসছেন তাদের আউটডোরে চিকিৎসা দিচ্ছি। গতকাল ৫৩ জন রোগী আউটডোরে ডায়রিয়া সমস্যা নিয়ে এসেছিল। তাদের মধ্যে থেকে মাত্র একজনকে ভর্তি করা হয়েছে।

নিউমোনিয়া সাধারণত ঠান্ডাজনিত সমস্যা। এখন গরমের সময়ে নিউমোনিয়ার সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০২২ সালের পর থেকে নিউমোনিয়া রোগী আমাদের এখানে বাড়ছে। তবে এটা পুরো বাংলাদেশের চিত্র নাও হতে পারে। এত বেশি নিউমোনিয়া রোগী আসার পেছনে একটি বড় কারণ হতে পারে আমাদের হাসপাতালে নিউমোনিয়ার জন্য একটি তলা ডেডিকেটেড করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে ৩৩টি বিছানা আছে। এর মধ্যে ১৬টি সাধারণ বিছানা, বাকিগুলো রেসপিরিটরি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র। আর তিনটি কেবিন আছে।

তিনি বলেন, সাধারণত ঠান্ডায় নিউমোনিয়া হলেও গরমেও নিউমোনিয়া বাড়ছে। ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যায় যেসব শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের নিউমোনিয়া হয়ে যায়। এছাড়া গরমে শিশুরা ঘামে। আর বাবা-মা যদি সেটায় নজর না দেয় ঘাম শরীরে শুকিয়ে যাবে। এতে শরীরের ভেতর ঠান্ডা হয়ে আসে। তখন রক্ত চলাচল কম হয়। এসময় ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে শিশুদের নিউমোনিয়া হতে পারে।

পরিচালক আরও বলেন, গরমে অনেক শিশুর আইসক্রিম, বরফের মতো ঠান্ডা খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এতে গলা ঠান্ডা হয়ে যায়, পরে সেখানে ব্যাকটেরিয়া বা আভাইরাস আক্রমণ করে। সেখান থেকে ফুসফুসে যায়। এতেও নিউমোনিয়া হতে পারে শিশুদের।

 


আরও খবর



সাত ধরনের মোটরযানের কর মওকুফ

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

মোটরযান নিবন্ধন বা ফিটনেস নবায়নকালে ৭ ধরনের মোটরযানের অগ্রিম কর মওকুফ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ৮ এপ্রিল এনবিআর করনীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত স্পষ্টীকরণ চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ১৫৩ (৫) অনুযায়ী ওই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ধারা মোটরযান নিবন্ধন বা ফিটনেস নবায়নকালে কোনো প্রকার অগ্রিম কর সংগ্রহ প্রযোজ্য হবে না। আর ওই সুবিধা পাওয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কোনো সনদের প্রয়োজন হবে না।

জানা গেছে, সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ (স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলতে সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ); সরকার বা স্থানীয় সরকারের অধীন কোনো প্রকল্প, কর্মসূচি বা কার্যক্রম; কোনো বৈদেশিক কূটনীতিক, বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘ ও ইহার অঙ্গ সংগঠনের দপ্তরসমূহ; বাংলাদেশের কোনো বিদেশি উন্নয়ন অংশীদার এবং ইহার সংযুক্ত দপ্তর বা দপ্তরসমূহ; সরকারের এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান; সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা অগ্রিম কর সুবিধার তালিকায় আছে।

উল্লেখ্য, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫০০ সিসি পর্যন্ত ব্যক্তিগত গাড়ির অগ্রিম কর ১৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার, ১৫০০ সিসির বেশি; কিন্তু ২০০০ হাজার সিসির কম এমন গাড়ির অগ্রিম কর ৩০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার, ২০০০ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির জন্য ১ লাখ, ৩০০০ সিসি থেকে ৩৫০০ সিসি পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং এর বেশি সিসি হলে দুই লাখ টাকা অগ্রিম কর দিতে হয়।

তবে, দেশে ব্যবহৃত গাড়ির প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি ১৫০০ সিসির কম।


আরও খবর