মুজাহিদ সরকার: পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কিশোরগঞ্জের হাওরের বোরো ধান। তলিয়েছে সোনালী ফসল ঘরে তোলার স্বপ্নটাও। তবুও চেষ্টা থামেনি। কোমর পানিতে নেমে আধা পাকা ধানই কাটছেন চাষিরা।উজান থেকে নামা পানিতে ডুবতে শুরু করেছে ইটনা উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল। পানিতে তলিয়ে গেছে কাঁচা-পাকা বোরো ধান। এমন অবস্থায় কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। পানিতে ডুবে তারা ধান কাটতে শুরু করেছে। খড় ও ধান পাওয়ার আশায় তাড়াহুড়া করে পানিতে নেমে বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা । এতে ২৫ হাজার কৃষকের ৬৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ছাইফুল আলম। তিনি জানান, ভারতের আসামের চেরাপুঞ্জিতে অতিরিক্ত বৃষ্টি কারণে সেখানকার পানি হাওরে ঢুকতে শুরু করেছে। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ হয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে ইটনা উপজেলার হাওরে।
উপ-পরিচালক মো. ছাইফুল আলম আরও জানান, ইটনার ধনু নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে উপজেলার চর এলাকার নিচু জমি তলিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে। ফসলরক্ষা বাঁধ মেরামতের জন্য মসজিদে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। তবে ঠিক কী পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হতে পারে, সেটি সরেজমিন পরিদর্শন শেষে বলা যাবে।
ইটনা উপজেলার কৃষক রমিজ উদ্দিন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসল রক্ষা বাঁধ সঠিক সময়ের মধ্যে মেরামত না হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানি সহজে ফসলি ক্ষেতে ঢুকে পড়ছে। এতে নিচু জমির অনেক ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের দাবি জানান।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, বিস্তীর্ণ হাওর এলাকার প্রায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ ১২টি বড় ফসল রক্ষা বাঁধ প্রকল্প এখনও শেষ করা সম্ভব হয়নি। কারণ এসব জায়গায় ভূমি অধিগ্রহণ কাজ বাকি রয়েছে। তবে ওইসব জায়গায় কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া হাওরের ৭৩টি ফসল রক্ষা বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে।