মুজাহিদ সরকার: পবিত্র রমজান মাসে রাজধানী ঢাকার মানুষকে ঘর থেকে বের হয়েই যানজটে পরতে হয়। হাজার হাজার বৈধ-অবৈধ রিকশা অলিগলিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কাউকে দেখলেই হাঁক ছাড়েন ‘স্যার যাবেন’। হঠাৎ করে রমজানে লাখ লাখ রিকশা ঢাকায় নামায় সড়কে যানজট লেগেই রয়েছে। ফলে পবিত্র রমজান মাসে কর্মজীবী রোজাদারদের দিন শুরু হয় যানজট দিয়ে; শেষও হয় যানজটেই মধ্যেই। ইঞ্জিনচালিত গণপরিবহনের পাশাপাশি পেডেল চালিত রিকশা-ব্যাটারি চালিত রিকশা, ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা ও মধ্যম গতির সিএনজি চালিত অটো রিকশা চলাচল করায় এ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। শহর কার্যত রিকশার দখলে চলে গেছে। সড়কে দাঁড়িয়ে যেদিকে চোখ যায় চোখে পড়ে শুধু রিকশা আর রিকশা। এ ছাড়াও সড়কে ট্রাফিক পুলিশের অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি পাড়া মহল্লার রাস্তার ফুটপাথে দোকান বাসিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের চাঁদা আদায় করায় যানজট লেগেই আছে।
মেট্রোরেল, ফ্লাইওভারের উন্নয়নের জোয়ারে রাজধানী ঢাকা শহর এগিয়ে যাচ্ছে না পিছিয়ে পড়ছে তা গবেষণার বিষয় হয়ে গেছে। মহানগরের যে পাড়ায় থাকুন ঘর থেকে বেরিয়েই রাজধানীবাসীকে পড়তে হচ্ছে যানজটে। এমনিতেই যানজট তারপর হঠাৎ করে প্যাডেলচালিত ও ব্যাটারিচালিত এতো বিপুলসংখ্যক রিকশা রাস্তায় নামতে দেয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। গণপরিবহন চালকদের অরাজকতা আর অবৈধ রিকশার কারণে সকাল-বিকেল রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো যেমন যানজটে স্থবির; পাড়া-মহল্লা, গলিঅলিতেও একই চিত্র। ২০ মিনিটের পথ এখন ঘণ্টায় অতিক্রম করা কঠিন। রোজা আর চৈত্রের দাবদাহে যানজটে অতিষ্ঠ জনজীবন। মানুষের প্রশ্ন এই ভোগান্তির শেষ কোথায়? কবে মুক্তি মিলবে? রাজধানীতে এতো রিকশা কারা নামালেন?
জানতে চাইলে ডিএমপির মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার তারেক আহমেদ
বলেন, অন্যান্য রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। কিন্তু এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে। এতে রাস্তায় রিকশা ও গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও গত ২ বছর করোনা মহামারিতে লকডাউন ছিল। তাই যানজটও ছিল না। এবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন কাজও চলছে। এতে করে যানজটের পরিমাণও বেড়েছে। তবে রাস্তা ও ফুটপাথ দখল করে ব্যবসার ব্যাপারে তিনি বলেন, এবার হকারের তৎপরতা অন্য বছর থেকে অনেক কম রয়েছে। রাজধানীর যানজট নিয়ে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন গতকাল বলেছেন, যানজট নিরসনে দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। আমাদের সরকারি সংস্থাগুলো রাস্তায় গাড়ি রাখে। সরকারের দায়িত্বটা কে নেবে এটা আমি বুঝতে পারলাম না। মন্ত্রী সাহেবরাও তো রাস্তার ওপর গাড়ি পার্কিং করে রাখেন।
গতকাল রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঢাকা ইউলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ‘অসহনীয় যানজট : সমাধান কী?’ শীর্ষক সংলাপে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশে অনেক উন্নতি হওয়ায় যানবাহন বেড়েছে, যানজটও বেড়েছে। বর্তমান সরকার টানা ১৩ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকায় দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে। এ ১৩ বছরে অনেকগুলো উন্নতির কারণেই ট্রাফিক সিস্টেম টা, ট্রাফিক সমস্যাটা আমাদের কাছে একটা হেডেক হয়ে গেছে।