Logo
শিরোনাম

সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভান্ডারী (কঃ) জীবনি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১১ জুলাই ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

মাজহারুল ইসলাম মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক গবেষক :

শাহসূফী হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভান্ডারি পাকভারতে মুসলিম রাজত্বের আমলে বাগদাদ নগর নিবাসী এক বিশিষ্ট সৈয়দ পরিবার দিল্লী শহরে আগমন করেন। কিন্তু সেখানকার আবহাওয়া তাঁদের স্বাস্থ্যের প্রতিকূল হওয়ায় তাঁরা সেই স্থান থেকে বাংলার রাজধানী গৌড় নগরে পদার্পণ করেন।তখন ইলিয়াস শাহী বংশের বিখ্যাত বাদশাহ গিয়াসুদ্দিন আজম শাহ বাংলার পরাক্রমশালী স্বাধীন নরপতি ছিলেন। তাঁর রাজত্বকাল ১৩৮৯ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৪০৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছিল। তিনি অতি ধর্মভীরু ন্যায়পরায়ণ রাজা ছিলেন।

তিনি জগদ্বিখ্যাত পারস্য কবি মাননীয় হাফেজের সাথে পত্রালাপ করতেন। তাঁর সভাসদগণের সকলেই জ্ঞানবান ছিলেন। দরবারে ধার্মিক জ্ঞানীর যথেষ্ট সমাদর ছিল।

কথিত আছে যে, উপরোক্ত বাগদাদ নগর নিবাসী সৈয়দ পরিবারে বহু লোক ধার্মিক, জ্ঞানী, যুদ্ধ-নিপুণ, খোদাভীরু অলি দরবেশ ছিলেন। বাদশাহ তাঁদের অতি সম্মান আদরের সাথে গ্রহণ করেন এবং ব্যক্তিগত উপযুক্ততা অনুসারে শাহী খান্দানের গৃহশিক্ষক, শাহী মসজিদের ইমাম, বিচারালয়ের কাজী এবং সেনানায়ক পদে নিযুক্ত করেন। এইভাবে তাঁরা বংশানুক্রমে প্রায় দুইশত বৎসরের অধিককাল বাংলার রাজধানী গৌড় নগরে পরম সুখে সম্মানের সাথে কালাতিপাত করেন। একসময় গৌড়ের সুলতান যুদ্ধে পরাজিত হন এবং গৌড় নগরে বসন্তরোগ মহামারী রূপে দেখা দেয়। দলে দলে নগরবাসী গৌড় ছাড়তে থাকে। পূর্ব থেকেই গৌড় নগরবাসী সৈয়দ পরিবারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চট্টলা। উপরোক্ত গৌড়ীয় সৈয়দ পরিবারের অপর সদস্য সৈয়দ সুলতান (১৫৫০খ্রি.-১৬৪৮খ্রি.) মতান্তরে কাজী সৈয়দ হামিদুদ্দিন শাহ গৌড় নগর থেকে চট্টগ্রাম এসে পটিয়া থানার অন্তর্গত চক্রশালায় বসবাস শুরু করেন।

তিনি একজন ইসলাম ধর্ম প্রচারক, প্রসিদ্ধ কামেল পীর ছিলেন। তাঁর বংশধরের মধ্যে সৈয়দ আব্দুল কাদের শাহ অন্যতম। একদা তিনি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত আজিম নগর গ্রামে হিজরত করেন। তাঁরই পুত্র সৈয়দ আতাউল্লাহ শাহ। সৈয়দ আতাউল্লাহ শাহের পুত্র সৈয়দ তৈয়বুল্লাহ শাহ। সৈয়দ তৈয়বুল্লাহ শাহের তিন পুত্রের মধ্যে মধ্যম পুত্র সৈয়দ মতিউল্লাহ শাহ মাইজভান্ডার গ্রামে বসবাস করেন। এই স্থানে সৈয়দ মতিউল্লাহ শাহের তিনপুত্র জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর তিন পুত্রের মধ্যে সৈয়দ আবদুল করিম আল হাসানী আল মাইজভান্ডারী সৈয়দা মোশাররফ জান বিবির কোলে ২৭ আশ্বিন হযরত শাহসূফী আল সৈয়দ গোলামুর রহমান আল হাসানী আল মাইজভান্ডারী প্রকাশ বাবা ভান্ডারী কেবলা জন্মগ্রহণ করেন। হযরত শাহসূফী মাওলানা আল সৈয়দ গোলামুর রহমান আল হাসানী আল মাইজভান্ডারী কেবলা কাবা (.) হযরত কেবলা কাবা (.)-এর স্থলাভিষিক্ত ত্বরীকা- মাইজভান্ডারীয়ার পূর্ণ প্রতিষ্ঠাতা।

 আল্লাহ প্রেমে বিভোর জন সমাগমের মহা স্বর্গীয় সমারোহে মাইজভান্ডার শরীফে প্রতিবছর ২৭ শে আশ্বিন পবিত্র খোশরোজ উদযাপিত হয়ে থাকে। তিনি শৈশব থেকেই ধর্মের প্রতি আসক্ত ছিলেন। সাত বৎসর বয়স থেকে তাকে নামাজ রোজা অভ্যস্ত দেখা গিয়েছিল। নির্জনতায় প্রিয় শিশু গাউছ গ্রাম্য মক্তবের শিক্ষা সমাপন করে উচ্চতর দ্বীনি এলেম, শিক্ষাকালে ১৫ বৎসর বয়সেছায়েমুদ্দায়ারঅর্থাৎ সারা বৎসর রোজা রাখতেন। মাদ্রাসার ছুটির ফাঁকে ফাঁকে তাঁর জেঠা পীর হযরত কেবলা কাবা (.) এর নিকট প্রায়শঃ হাজির থাকতেন।

করুণাময়ের সান্নিধ্য লাভের অভিলাষে পাঠ্যাবস্থা থেকেই কঠোর সাধনায় রত থাকতেন এবং ২৮ বৎসর বয়সে পীরের রুহানীয়তের যাবতীয় আধ্যাত্মিক শক্তি তাঁর আত্মায় সঞ্চারিত হয়। হযরত ছাহেব কেবলা কাবা (.) নিজ হস্তে স্বীয় জোববা মোবারক তাকে পরিয়ে দেন। অতঃপর বাবাজান কেবলা কাবা (.) আল্লাহ পাকের একত্বের তৌহিদ আহরণে চলে গেলেন পার্বত্য অঞ্চলের গভীর অরণ্যে।

দীর্ঘ ১২ বৎসরকাল সাধনা পরিপূর্ণ করে ফিরে আসেন নিজ বাসস্থান মাইজভান্ডার শরীফে। সাধনা, সংযম আধ্যত্মিক শক্তির প্রভাবে সংসারের সাথে সকল সম্পর্ক ছেদ করে গোশানশীল অবস্থায় থাকেন। দুই বৎসর পর থেকে ২৩ বৎসর যাবত জবান মোবারক বন্ধ রাখেন। সবাই বিস্ময়ে নির্বাক, তাঁর হস্ত মোবারকদ্বয়ে পানি ঢালার অপরূপ দৃশ্য দেখে। পানির উছিলায় মকছুদ পূরণ কত না বেদনা উপশম হত। তিনি আল কোরআনের মর্মকথা, তৌহিদের মূলমন্ত্রে প্রণীত ত্বরীকা মাইজভান্ডারীয়ার নির্দেশিত পথে মানুষকে দিয়েছেন খোদাপ্রাপ্তির সহজ সরল পথের দিশা, জানিয়েছেন রহমানুর রাহিমের অফুরন্ত সওগাত। বাবা ভান্ডারী কেবলা (.) বেলায়ত প্রাপ্তি এবং বুজুর্গীয় গৌরবোজ্জ্বল পূণ্যে মাইজভান্ডার শরীফ ধন্য।

তাঁর আধ্যত্মিক ছোঁয়ায় এসে দ্বীন দুনিয়া দো-জাহানের ত্বরক্কী লাভ করতে দরবারে পাকে আগত মুসলমান ছাড়াও ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সর্বকালের সকল জায়েরীনদের একমাত্র উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। মাইজভান্ডারী ত্বরীকা নবুয়্যতে মোহাম্মদীয় জাতে পাকে আত্মপ্রকাশ। সেইরূপ এই বেলায়তের ধারা পদ্ধতি অনুযায়ী ফয়েজ বিতরণে সমর্থ। হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা (.) ২২ চৈত্র ১৩৪৩ বাংলা, এপ্রিল ১৯৩৭ ইংরেজী, ২২ মহরম ১৩৫৩ হিজরী রোজ সোমবার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ৭১ বৎসর মাস বয়সে তাঁর প্রভুর সাথে মহামিলনের ইচ্ছায় চলে গেলেন (ইনালিল্লাহে……..রাজেউন) প্রতি বৎসরই ২২শে চৈত্র লক্ষ লক্ষ শোকাতুর আশেকের আগমনে ভরে উঠে মাইজভান্ডার শরীফের প্রাঙ্গণ। এই পবিত্র দিনে প্রতিটি মুহূর্তে আসক্তজন ‘‘আল্লাহু আল্লাহু’’ জিকিরে মত্ত থেকে স্ব স্ব কামনা বাসনা পূর্ণ করে নিজ নিজ স্থানে ফিরে যায়।


‘‘বায়াত’’ শব্দটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ বিক্রি হওয়া। যাকে ত্বরীকতের পরিভাষায় পীরের হাতে হাত রেখে চাদর ধরে বা পাগড়ী ধরে গুনাহ হতে তাওবাকরতঃ আবদ্ধ হওয়াকে কথ্য ভাষায় মুরিদ বলা হয়। এই মুরিদ আল্লাহ রাসূলের সমস্ত নিয়মনীতির মাধ্যমে পীরের নির্দেশনা পরামর্শ মেনে চলে।


ত্বরীকাতে কামিয়াব হওয়ার পূর্বশর্ত হল নিজ মুর্শিদের প্রতি একান্ত মহববত। একত্ববাদ আন্তরিক আকর্ষণ থাকা। মুর্শিদের প্রতি ভক্তি তাজিমে থাকাই প্রধান আদর্শ বা শর্ত। ‘‘হযরত মাওলানা আল সৈয়দ গোলামুর রহমান আল হাসানী আল মাইজভান্ডারী প্রকাশ বাবা ভান্ডারী কেবলার দেখানো সহজ-সরল পথ অবলম্বন করে সেই সংস্পর্শ তৌহিদের অনুকূলে যে গমন করতে থাকবে ‘‘ইনশাল্লাহ’’ অনতিবিলম্বে সেই নূরে মোহাম্মদীর নূরকে চিনতে সক্ষম হব।
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় করো, তাঁর সকল নবী আসমানী কিতাব, কেয়ামত তকদীরের উপর পরিপূর্ণ ঈমান আনয়ন কর। খাঁটি অন্তরে দ্বীন ইসলাম তাওহীদে সমর্পিত হও এবং তৎ পর্যন্ত পৌঁছিতে উছিলা বা অবলম্বন খোঁজ। আল্লাহ মাদের সবাইকে সেই তওফীক দান করুন।


আরও খবর



৪০ ডিগ্রি ছাড়াল তাপমাত্রা

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

দেশে তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে খেপুপাড়ায় (পটুয়াখালীর কলাপাড়া) ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আজকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে খেপুপাড়ায় (পটুয়াখালীর কলাপাড়া) ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খেপুপাড়ায় একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার খেপুপাড়ায় সর্বোচ্চ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রোববার রাঙ্গামাটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি আরও বলেন, আজ রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রাও কিছুটা বেড়েছে। ঢাকায় আজ সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে; যা গতকাল ছিল ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে রংপুর ও নীলফামারী জেলাসহ রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এর ফলে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়।


আরও খবর



৬৩ বছরের ইতিহাসে লবণ উৎপাদনের রেকর্ড

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

চলতি মৌসুমে দেশে গত ৬৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লবণ উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।

সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিক জানায়, চলতি মৌসুমে (২৮ এপ্রিল পর্যন্ত) ২২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫৮ টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। যা বিগত বছরের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। এখনো লবণ উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। এর আগে গত বছর (২০২২-২৩ অর্থবছর) ৬২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লবণ উৎপাদন হয়েছিল। সে সময় পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল ২২ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ টন।

সংস্থাটি জানায়, চলতি লবণ মৌসুমে লবণ চাষকৃত মোট জমির পরিমাণ ৬৮ হাজার ৩৫৭ একর। গত বছর ছিল ৬৬ হাজার ৪২৪ একর। গত বছরের তুলনায় এ বছর লবণ চাষের জমি বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ৯৩৩ একর।

চলতি লবণ মৌসুমে লবণ চাষির সংখ্যা ৪০ হাজার ৬৯৫ জন, যা গত বছর ছিল ৩৯ হাজার ৪৬৭ জন। গত বছরের তুলনায় এ বছর লবণ চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ২২৮ জন। বর্তমানে লবণ মাঠ পর্যায়ে মণপ্রতি ক্রুড লবণের গড় মূল্য ৩১২ টাকা, যা গত বছর ছিল ৪২০ টাকা।

চলতি লবণ মৌসুমে লবণ উৎপাদন চলমান রয়েছে, যা মে মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ও চাহিদা অনুযায়ী লবণ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

বিসিকের কক্সবাজার লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, মৌসুমজুড়ে দাবদাহ, ৬৮ হাজার ৩৫৭ একর জমির শতভাগে আধুনিক পলিথিন প্রযুক্তিতে চাষাবাদ এবং অতিরিক্ত ১ হাজার ৯৩৩ একরের বেশি জমিতে লবণ চাষের কারণে উৎপাদনে নতুন রেকর্ড হয়েছে।


আরও খবর

কমেছে মুরগির দাম, চড়া সবজির বাজার

শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪




ইতালিয়ানদের সম্মানে ভেনিস বাংলা স্কুলের ইফতার ও আলোচনা

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক, ইতালি :

ইসলাম দাঁড়িয়ে আছে পাঁচটি স্তম্ভের উপর। প্রথমটি হলো কালিমা বা শাহাদা। অর্থাৎ এক আল্লাহ এবং নবী রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। যারা এটি করবে তারা মুসলিম। আর একজন মুসলিমের উপর আল্লাহ রোজার বাধ্যবাধকতা দিয়েছেন, যেমন দিয়েছিলেন অন্যান্য নবী রাসুলগণের অনুসারীদের উপর। সুতরাং রোজা শুধু মুসলিমদের জন্য নয় বা নবী মোহাম্মদ প্রদত্ত নতুন কিছু নয়। অন্যান্য ধর্ম অবলম্বীদের জন্যও রোজার বাধ্যবাধকতা আছে বা ছিলো। যেমন, বাইবেল অনুসারীরাও ৪০ দিন উপবাস করেন। ভেনিস বাংলা স্কুলের আয়োজনে ইতালিয়ানদের সম্মানে ইফতার ও আলোচনায় এসব কথা বলেন, প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাছান।

ভেনিস বাংলা স্কুলের সভাপতি সৈয়দ কামরুল সরোয়ারের সভাপত্বি আয়োজিত আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠিত হয় ৬ এপ্রিল, শনিবার ভেনিস বাংলা স্কুলের মেসত্রেস্থ নিজস্ব কার্যালয়ে। এ সময় প্রায় ৩০ জন ইতালিয় শিক্ষক, সাংবাদিক এবং অন্যান্য পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাছান বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে ইতালিয় বন্ধুদের কাছ থেকে কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হই। যেমন, বর্তমান সময়ে যুদ্ধ-বিগ্রহের কারণে জিহাদ শব্দটা বার বার সামনে আসছে। আমাদের বুঝতে হবে জিহাদ অর্থ ধর্ম যুদ্ধ নয়। জিহাদের অনেক রুপ আছে। কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়, ইনসাফ, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টার নাম জিহাদ। হুট করে অস্ত্র-পাতি, বোমা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার নাম জিহাদ নয়, ওটা সন্ত্রাস। জিহাদ এবং সন্ত্রাস দুইটা আলাদা বিষয়। কেউ জিহাদ করতে চাইলে ইসলামের বিধান মেনে করতে হবে। মনগড়া কোনো মতবাদে হিজাদ হয় না। অন্যায় ভাবে কাউকে হত্যা করলে তা গোটা মানবজাতীকে হত্যার সামিল অপরাধ হিসাবে গণ্য করে ইসলাম।

তিনি রোজার আধ্যাতিক ও সাইন্টিফিক দিকসহ মুসলিম নারীদের হিজাব ব্যবহারের বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করেন।

কামরুল হাছান যোগ করেন, ইতালিয় সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ইতালিতে বসবাসকারী সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম স্বাধীন ভাবে পালন, প্রচার এবং উদযাপন করতে পারবে। কিন্তু মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব ঈদের দিনে মুসলিম শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয়া হয় না। কর্মজীবীদের বাধ্যতামূলক কাজে যেতে হয়। এতে সামাজিক এবং ধর্মীয় বৈষম্য সৃষ্টি হয়। যা মুসলিমদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। ইতালিয় সরকারের উচিৎ এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা। 

অপর আলোচক ইঞ্জিনিয়ার লিয়ন শরিফ বলেন, মিডিয়ার প্রপাকান্ডায় বিভ্রান্ত হয়ে অনেকে হয়তো মনে করেন মুসলিমরা সন্ত্রাসী বা ইসলাম সন্ত্রাসীদের ধর্ম। আসলে তা নয়। বিশ্বমুসলিম কম্যুনিটিকে কোনো জাতী বা গোষ্ঠীর নিজস্ব কর্ম দিয়ে বিচার করলে তা সুবিচার হবে না। ইসলাম বুঝতে হলে কোরান, হাদিসের কাছে যেতে হবে। পড়াশুনা করতে হবে।

তিনি উপস্থিত ইতালিয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের বুঝতে হবে, যারা ইসলামের নামে সন্ত্রাস করে তারা যেসব অস্ত্র, যানবাহন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেগুলো তারা বা কোনো মুসলিম রাষ্ট্র বানায় না। যারা তাদের কাছে ওসব অস্ত্র, গাড়ি, প্রযুক্তি বিক্রি করে তারাই আবার মিডিয়ার মাধ্যমে ইসলামের গায়ে সন্ত্রাসের ট্যাগ লাগায়। সুতরাং যেসব গোষ্ঠি সন্ত্রাস করে এবং তাদের কাছে যারা অস্ত্র বিক্রি করে উভয়ই বিশ্বমানবতা বিরোধী অপরাধী। উভয়ই সমান ভাবে সন্ত্রাসের অংশীদার।

লিয়ন বলেন, এক সাথে বসবাসের জন্য, ইন্টিগ্রেশনের জন্য সবার মধ্যেই মেনে নেয়ার, মানিয়ে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ভৌগলিক কারণে, ধর্মীয় কারণে বাংলাদেশি এবং ইতালিয় বা ইউরোপিয়দের কালচার এক নয়। এক হওয়া সম্ভবও নয়। সুতরাং কাউকে তিরস্কার করে, অধিকার বঞ্চিত করে, সন্ত্রাসের ট্যাগ লাগিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়ে।

তিনি যোগ করেন, ইতালিয় মিডিয়ায় রোজাকে 'রমাদান' হিসাবে উল্লেখ করা হয়, যা সঠিক নয়। রমাদান একটি মাসের নাম। এ মাসে মুসলিমরা রোজা রাখেন। সুতরাং রোজা বা সওম বললে তা সঠিক হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ছিলেন, পলাশ রহমান, মারতা লাভারা ফাচ্চিনি, জাকমো বেল্লাতো, সোহেলা আক্তার বিপ্লবী, আনতোনিয় স্পানো, আলেসসানদ্রো, জান্নি দাল্লা পেল্লেগ্রিনা, জাদা, ক্লাউদিয়া মানতোভান, মানুয়েলা যোরদানা, আকতার উদ্দিন, মোহাম্মদ উল্লাহ সোহেল, আনদ্রেয়া অনোরি, ভালেরিয়া তোনিয়লি, আলেসসানদ্রা বারদেল্লি, গাবরিয়েলে মালুতা, মারিয়া কারমেলা, সেরজো, ফাবরিচ্ছিয়, লাওরা, মিকেয়লা, কাজী টিপু, জানফ্রাংকো বোনেচ্ছো, ইকবাল হাসান, ফিয়রিনা মাসুম, লোরেনছো পোরচিলে, প্রমূখ।

আলোচনা শেষে ফিলিস্তিনির মাজলুমদের জন্য এবং বিশ্বশান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। বিরিয়ানিসহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহি বিভিন্ন পদের ইফতার পরিবেশন করা হয়।


আরও খবর



বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকে লুট ও ম্যানাজারকে অপহরণ

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল হানা দিয়ে অস্ত্র ও টাকা লুট করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। অপহরণ করা হয়েছে ব্যাংকের ম্যানেজার মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনকে। জানা যায়, ৬০-৭০ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল এ ঘটনা ঘটায়। ঘটনার সময় ব্যাংকের নিরাপত্তারক্ষী এবং কর্মচারীরা নামাজে ব্যস্ত ছিল। ঠিক এই সময়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যাংকে হানা দিয়ে এ ঘটনা ঘটায়।
রুমা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল আলম জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ টহল দিচ্ছে। তবে কত টাকা লুট করে নিয়ে গেছে এ বিষয়ে এখনও তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। সেই সাথে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছে থাকা অস্ত্রগুলো নিয়ে গেছে তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মাসের প্রথম দিকে উপজেলার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার জন্য ওই ব্যাংকে প্রচুর টাকা জমা ছিল।
পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জানিয়েছেন, একটি সন্ত্রাসী দল ব্যাংকে হামলা করে টাকা এবং অস্ত্র লুট করে নিয়ে গেছে। তবে কত টাকা লুট করা হয়েছে এবং কোন সন্ত্রাসী দল এ বিষয়ে তিনি এখনো বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় রুমা উপজেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। এবং সেই সাথে ওই সময়ে নামাজে ব্যস্ত ছিল ব্যাংকের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত পুলিশ এবং কর্মচারীরা। ঠিক এই সময়ে উপজেলা সদরের ব্যাথেল পাড়া এলাকা থেকে ৬০-৭০ জনের সশস্ত্র একটি সন্ত্রাসী দল উপজেলা কমপ্লেক্সের পাশে সোনালী ব্যাংকে হানা দিয়ে অস্ত্র ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ওই এলাকায় যারা ছিল তাদেরকে মারধর করে সন্ত্রাসীরা। তাদের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। রুমা উপজেলা বাজার থেকে উপজেলা কমপ্লেক্স এবং সোনালী ব্যাংকটি প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি থাকায় সন্ত্রাসীরা এই সুযোগটি নিয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।

স্থানীয়রা মনে করছেন, ঘটনাটি কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ঘটিয়ে থাকতে পারে। তবে এর আগে এই সংগঠনটি ব্যাংক ডাকাতি করবে বলে এরকম একটি কথা রটিয়ে পড়েছিল এলাকায়। এদিকে এ ঘটনার পর এলাকায় জনমনে আতঙ্ক উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।


আরও খবর



রাণীনগর-আত্রাইয়ে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ)  

 নওগাঁর রাণীনগর এবং আত্রাই উপজেলায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। "প্রাণিসম্পদে ভরবো দেশ, গড়বো স্মাট বাংলাদেশ" এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার দুই উপজেলায় পৃথক পৃথকভাবে উদ্বোধনী ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উভয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ-৬,(আত্রাই-রাণীনগর) আসনের এমপি এ্যাড: ওমর ফারুক সুমন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। 

রাণীনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ প্রাঙ্গনে প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের বাস্তবায়নে এবং প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রাণালয় এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এমপি ওমর ফারুক সুমনসহ অন্যদের মধ্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ দুলু,থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ,উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর কর্মকর্তা রফি ফয়সাল তালুকদার,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা হক,মৎস্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। 

অপর দিকে আত্রাই উপজেলায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধন ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,এমপি এ্যাড: ওমর ফারুক সুমন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান প্রামানিক,জেলা পরিষদ  সদস্য চৌধুরী গোলাম মোস্তফা বাদল,ভাইস চেয়ারম্যান শেখ হাফিজুর রহমান,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম,উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর কর্মকর্তা ডা. আবু আনাছসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ  উপস্থিত ছিলেন। প্রদর্শনীতে খামারিরা রাণীনগরে ৩০টি এবং আত্রাই উপজেলায় ৩০টি স্টলে বিভিন্ন জাতের পশু-পাখি প্রদর্শনে অংশ নেয়। অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।


আরও খবর