সদরুল আইনঃ
গাজীপুরের শ্রীপুর থানা আ,লীগ প্রতিষ্ঠার অনন্য পথিকৃত আলহাজ্ব মিজানুর রহমান খানের ২০ তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ।
বিগত ২০০২ সালের আজকের দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন,বিশ্বস্ত সহচর মিজানুর রহমান খান বৈরাগীরচালায় তার নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন।
বৈরাগীরচালায় তাঁর প্রতিষ্ঠিত বৈরাগীরচালা উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে তিনি চির নিদ্রায় শায়িত আছেন।
আলহাজ্ব মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ অত্র অঞ্চলের মসজিদগুলোতে জুম্মার নামাজের পর বিশেষ মোনাজাত, দোয়া-খায়ের ও তবারক বিতরণ করা হয় এবং তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করে সমাধীস্থলে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
সুদীর্ঘ ১৯ বছর পর গত বছর আজকের এ দিনে শ্রীপুর উপজেলা আ.লীগের উদ্যোগে বিশেষ কর্মসূচি,আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।তাঁর সমাধীতে ফুল দিয়ে দোয়া করতে আসেন তারই রাজনৈতিক পুত্র গাজীপুর-৩ আসনের এমপি ও জেলা আ.লীগের সফল সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ।
মিজানুর রহমান খান শ্রীপুর থানা আ.লীগ প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম রুপকার।সুদীর্ঘ ২৬ বছর তিনি সাধারন সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালনসহ তৎকালিন শ্রীপুর ইউনিয়নের দু'বারের নির্বাচিত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন।
মিজানুর রহমান খানের সাথে গভীর রাজনৈতিক সুসম্পর্ক ও পারিবারিক বন্ধন ছিল আজকের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা'র।যে কারনে ১৯৮৪ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিজানুর রহমান খানের বৈরাগীরচালার বাড়িতে অতিথি হয়ে আসেন এবং নিজ হাতে আম পেড়েও খান।
তাছাড়া যতবার তিনি শ্রীপুরে এসেছেন ততবারই তাকে ফুলেল অভ্যর্থনা জানাতেন মিজানুর রহমান খান।তাঁর মৃত্যুর পর পিতার অসম্পন্ন কাজ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গণে পিতার রাজনৈতিক পুত্র ইকবাল হোসেন সবুজ এমপির সহযোদ্ধা হয়েছেন আলহাজ্ব সাখাওয়াত হোসেন খান।
মিজানুর রহমান খানের প্রখর দুরদৃষ্টি ও রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তার কারনে ১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ডের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ বৈরাগীরচালা স্বনির্ভর গ্রাম ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শণ করে মুগ্ধ হন।সারা বিশ্বে পরিচিতি পান তিনি এবং বৈরাগীরচালা স্বনির্ভর গ্রামটি।
জীবদ্দশায় তিনি বৈরাগীরচালা উচ্চ বিদ্যালয়,প্রাথমিক বিদ্যালয়,মিজানুর রহমান খান ডিগ্রী মহিলা কলেজ, শ্রীপুর রেজিস্ট্রি অফিস সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বহু রাস্তা ঘাট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এতিমখানা মাদরাসায় জমি ও অর্থ সাহায্য করে গেছেন।
এমনকি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষিণ-পূর্ব কোনের জমির দাতাও মিজানুর রহমান খান।
এরশাদ সরকারের সময় তৎকালিন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ আ.লীগ ত্যাগ করে জাপায় এসে মন্ত্রীত্ব গ্রহনের অনুরোধ জানালেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
শ্রীপুর উপজেলা আ.লীগের তৎকালিন শাসকগোষ্ঠি সেসময় এই মহান মানুষটিকে নিয়ে ঘৃণ্য রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে তার পদ পদবি কেড়ে নেয়।কোনঠাঁসা করে রাখে তাকে রাজনৈতিকভাবে।
তাঁর শেষ ইচ্ছে ছিল ক্ষমতাসীন আ.লীগের উপজেলা কমিটির সভাপতি ও জেলা আ.লীগের সদস্য হয়ে মৃত্যুবরণ করা।কিন্তু সে সময়ের ক্ষমতাসীনরা মিজানুর রহমান খানকে এত ভয় পেতেন যে, তারা তার শেষ ইচ্ছেও পূরণ করেনি।
বুকভরা অপূর্ণতা ও অব্যক্ত বেদনা নিয়ে তাঁকে বিদায় নিতে হয়েছে নিঠুর এ পৃথিবী থেকে।শ্রমে ত্যাগে হাতে গড়া শ্রীপুরের প্রিয় রাজনৈতিক অঙ্গণ থেকে।