চাঁপাইনবাবগঞ্জের
সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে দ্বিতীয় দিনে ৫১৮ মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়েছে। ৪
নভেম্বর দুপুরের পর থেকে আলুবাহী ভারতীয় ট্রাক বন্দরের ইয়ার্ডে প্রবেশ করতে শুরু
করে। এ নিয়ে দুই দিনে দেশের অন্যতম এই স্থলবন্দরে ২১টি ট্রাকে মোট ৫৭০ মেট্রিক টন
আলু আমদানি হয়েছে।
স্বস্তি ফিরছে
ক্রেতাদের মাঝে। কেননা আমদানির পর থেকেই কমতে শুরু করেছে দাম। ২ নভেম্বর ৫০ থেকে
৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও শনিবার দুপুরে জেলার বিভিন্ন বাজারে আলু বিক্রি
হয়েছে ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে। আমদানি অব্যাহত থাকলে আরও দাম কমবে, বলছেন
ব্যবসায়ীরা।
শনিবার দুপুরে জেলার সবচেয়ে বড় আলুর আড়ৎ পুরানো বাজারে গিয়ে দেখা যায় প্রতি কেজি
আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে। এখানকার এক খুচরা বিক্রেতা সামশুল আলম
বলেন, ‘এক দিনের ব্যবধানে প্রতি বস্তায় আলুর দাম কমেছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।
হঠাৎ করেই ভারতীয় আলু আমদানির খবর পেয়ে স্টকে থাকা আলুর দাম কমিয়ে ছেড়ে দিচ্ছেন কোল্ড
স্টোরেজে রাখা ব্যবসায়ীরা।
বাজারে আলু কিনতে আসা
আলী আশরাফ বলেন, ‘কয়েকদিন আগেই কেজিপ্রতি আলু কিনতে
হয়েছে ৬০ টাকা করে। এমন দাম অস্বাভাবিক। সাধারণ মানুষের এই দামে আলু কিনে খাওয়া অনেক
কষ্টকর। তাই ভারত থেকে আলু আমদানির সিন্ধান্তটি অত্যন্ত যৌক্তিক। এভাবে কয়েকদিন আলু
আমদানি অব্যাহত থাকলে এমনিতেই আলুর দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এ ছাড়াও আলুর বাজার যারা
অস্থিতিশীল করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে
হবে।
পাইকারি আলু বিক্রেতা আজম আলী জানান, কয়েকদিন আগে আমরা বেশি দামে কিনছিলাম, তাই
বেশি দামে বিক্রিও করতে হয়েছে। এখন কম দামে পাচ্ছি, তাই বিক্রিও করছি কম দামে। গত
কয়েকদিনে ব্যাপকহারে বেচাকেনা কমে গিয়েছিল। এখন দাম কমতে শুরু করেছে, আবারও বিক্রি
বেশি হবে।
আড়তদার রহমত আলী বলেন,
বৃহস্পতিবার বিকেলে সোনামসজিদ ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি শুরুর খবর পেয়েই
মজুতদাররা ২ থেকে ৪ টাকা কেজিপ্রতি দাম কমিয়েছিল। মাঝে এক দিন যাওয়াতেই এক লাফে ৮
থেকে ১০ টাকা করে দাম কমেছে। আমদানি অব্যাহত থাকলে আরও দাম কমবে।
ভারতীয় এক রফতানিকারক মোবাইল ফোনে জানান, বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আলু বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে। বাংলাদেশে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানিকারকরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আলু আমদানি করছে। আগামী কয়েকদিনে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আলু রফতানি করতে ট্রাক ভর্তি করা হচ্ছে। আলু আমদানিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় স্থলবন্দর কাস্টমস।
সোনামসজিদ পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের পোর্ট ম্যানেজার মো. মাইনুল ইসলাম জানান, সরকারের আলু আমদানির সিন্ধান্তের পর বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আলু আসছে। মাঝে শুক্রবার ছুটির দিনে হওয়ায় বন্ধ ছিল। শনিবার আবারও আলু আমদানি শুরু হয়েছে।
এর আগে দেশে
প্রথমবারের মতো গত বৃহস্পতিবার দুটি ট্রাকে আসে ৫২ মেট্রিক টন আলু। সোনামসজিদ
স্থলবন্দর দিয়ে ২১ জন আমদানিকারক ১৫ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন আলু আমদানির অনুমতি
পেয়েছেন।