Logo
শিরোনাম

ছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

নাটোরের গুরুদাসপুরে কলেজছাত্রকে বিয়ে করা শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রবিবার ভোরে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

খাইরুন নাহার গুরুদাসপুর খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তার স্বামী মামুন নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। 

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মরদেহ উদ্ধারের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এলাকাবাসী জানান, রাত ৩টার দিকে স্বামী মামুন এলাকাবাসীকে ডেকে বলেন, তার স্ত্রী খায়রুন নাহার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে তার ঘরে মরদেহ মেঝেতে সোয়ানো অবস্থায় দেখতে পান। কিন্তু সন্দেহ হলে এলাকাবাসী মামুনকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। 

এর আগে, গত ৩১ জুলাই কলেজছাত্র ও ওই শিক্ষিকার বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক বছর আগে ফেসবুকে শিক্ষিকা নাহারের সঙ্গে একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের কলেজছাত্র মামুনের পরিচয় হয়। পরে তাদের দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর কাউকে না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের ৬ মাস পর তাদের সম্পর্ক জানাজানি হলে ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ের পরিবার থেকে বিয়ে মেনে নেয়নি। এর আগে ওই শিক্ষিকা বিয়ে করেছিলেন রাজশাহী বাঘা উপজেলার এক ছেলেকে। পারিবারিক কলহে সেই সংসার বেশি দিন টেকেনি। প্রথম স্বামীর ঘরে এক সন্তান রয়েছে বলেও জানা গেছে।

খাইরুন নাহার জানিয়েছিলেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ওই সময় ফেসবুকে পরিচয় হয় মামুনের সঙ্গে। মামুন আমার খারাপ সময় পাশে থেকে উৎসাহ দিয়েছে এবং নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছে। পরে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। তবে ছাত্রকে বিয়ে করা খাইরুন নাহার এখন কেবলই ইতিহাস।


আরও খবর



আবারো বাড়লো গ্যাসের দাম

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ |

Image

আবারও বাড়লো বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম এবং কলকারখানায় ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম। দুই মাসের মাথায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাসের দাম ইউনিটপ্রতি আরও ৭৫ পয়সা বাড়ানো হলো। পরিবহন খাতে ব্যবহৃত সিএনজি ও আবাসিকের গ্যাসের দাম বাড়ায়নি সরকার।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনটি মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে প্রকাশিত হয়েছে। আজ বুধবার (১ মে) থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর হয়েছে।

নতুন দর অনুযায়ী, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য ১৪ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে ৭৫ পয়সা বাড়িয়ে ১৫ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। আর ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ শ্রেণির গ্রাহকদের জন্য প্রতি ঘনমিটারের মূল্য ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে ৭৫ পয়সা বাড়িয়ে ৩১ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। তবে অন্যান্য শ্রেণিতে গ্যাসের মূল্য অপরিবর্তিত থাকবে।

জ্বালানি বিভাগের উপসচিব শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি, আইপিপি ও রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য নতুন এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের জানুয়ারিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে ৫ টাকা ৮ পয়সা থেকে বাড়িতে ১৪ টাকা এবং ক্যাপটিভ ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছিল। তখন শিল্প, বিদ্যুৎ ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। তবে পরিবহন খাতে ব্যবহৃত সিএনজি ও আবাসিকের গ্যাসের দাম বাড়ায়নি সরকার।


আরও খবর



করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার অ্যাস্ট্রাজেনেকার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

করোনাভাইরাসের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এক আইনি লড়াইয়ে সম্প্রতি এমনটাই স্বীকার করে নিয়েছে ব্রিটিশ-সুইস ওষুধ নির্মাতা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এক বছর ধরে ভ্যাকসিনের ক্ষতিকারক প্রভাব মামলায় জর্জরিত রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এত দিন কোম্পানি বলে এসেছিল যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় তৈরি করা এই কোভিড ভ্যাকসিন ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু দাবি উঠেছিল যে এই ভ্যাকসিনের জন্যই কয়েকজনের মৃত্যু এবং কেউ কেউ গুরুতর অসুস্থতার মুখে পড়েছেন। অ্যাটর্নিদের মতে, কিছু পরিবার টিকা দেয়ার একটি বিধ্বংসী প্রভাবের মুখোমুখি হয়েছিল। সবটা দেখে শুনে অবশেষে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে যে তার কোভিড ভ্যাকসিন খুব বিরল ক্ষেত্রে হলেও, টিটিএস-এর কারণ হতে পারে।


টিটিএস কী


টিটিএস-এর সম্পূর্ণ রূপ হলো থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম (টিটিএস)। এটি একটি খুব বিরল সিন্ড্রোম, যা রক্ত
​​জমাট বাঁধা (থ্রম্বোসিস) এবং কম প্লেটলেট সংখ্যা (থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া) দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। এটিকে ভিআইটিটি নামেও অভিহিত করা হয়, যার পূর্ণ রূপ 'ভ্যাকসিন-ইনডিউসড ইমিউন থ্রম্বোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া'। রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার ফলে থ্রম্বোসিস হতে পারে, যা প্রভাবিত রক্তনালীতে রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দেয়। থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া শরীরে রক্তের প্লেটলেট সংখ্যা কম হওয়ার সময় ঘটে। সাধারণত, প্লেটলেটগুলো অতিরিক্ত রক্তপাত রোধ করতে রক্তের জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। আর সেই প্লেট সংখ্যা কমে গেলে ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক।

 

গত বছর, জেমি স্কট, দুই সন্তানের পিতা, ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল এবং বায়োটেকনোলজি কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার অভিযোগে, স্কট উল্লেখ করেছিলেন যে তিনি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে করোনা রুখতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেয়ার পর থেকেই চরম বিপদের মুখে পড়েছিলেন। এর ফলে তার রক্ত জমাট বেঁধেছে এবং মস্তিষ্কে রক্তপাত হচ্ছে। এমনকি হাসপাতাল নাকি তার স্ত্রীকে জানিয়েছিল যে স্কট বেঁচে থাকতে পারবেন না। আর অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে এই দাবিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে এত দিন ধরে। এর আগে, ২০২৩ সালের মে মাসে স্কটের আইনজীবীর কাছে এক মেইল পাঠিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছিল, জেনেরিক লেভেলে এই টিকার কারণে টিটিএস-এর ঘটনা ঘটেছে, এটা স্বীকার করি না আমরা।

যাইহোক, এত দিন পর কোম্পানির স্বীকারোক্তি তাকে বিরাট ক্ষতিপূরণের মুখে ফেলে দিতে পারে। কারণ এরই মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে মোট ৫০টিরও বেশি মামলা করা হয়েছে। করোনার টিকা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সকলেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।


আরও খবর



দাম বাড়ল জ্বালানি তেলের

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলের জন্য সৌদি আরবের তেলের দাম বাড়ানো হয়। ইসরায়েলের সঙ্গে গাজার যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা আরও কমে যাওয়ায় তেলের এ দাম বেড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিশ্বের বৃহত্তম এই তেল উৎপাদনকারী অঞ্চলে ইসরায়েল-হামাস সংকট ছড়িয়ে পড়তে পারে।

রয়টার্সের এক সংবাদে বলা হয়েছে, সোমবার (৬ মে) সকালে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে।

 ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ২৮ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৮৩ দশমিক ২৪ ডলারে উঠেছে। এ ছাড়া ইউএস টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের (ডব্লিউটিআই) দাম ব্যারেলপ্রতি ২৯ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৭৮ দশমিক ৪০ ডলারে উঠেছে।

গত সপ্তাহে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়ায় জ্বালানি তেলের দাম ৭ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছিল। আজ সপ্তাহের শুরুতে সেই ধারা ভেঙে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বাড়ল।

গত সপ্তাহে ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই উভয় ধরনের অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমেছে ৭ শতাংশের বেশি আর ডব্লিউটিআই ক্রুডের ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু কারণে দাম কমে বলে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছিল গত সপ্তাহে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা আরও কমে গেছে। হামাস দাবি করেছিল, বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হোক; কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

এদিকে টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় তেল ও গ্যাসের খনির সংখ্যা কমেছে, বিশেষ করে তেলের খনির সংখ্যা কমেছে বেশি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সাতটি কমে গিয়ে সক্রিয় খনির সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৯৯টিতে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের পর আর কখনো এক সপ্তাহের ব্যবধানে এতগুলো খনি উৎপাদনের বাইরে চলে যায়নি।


আরও খবর



দেশের ৪২ জেলায় বইছে মৃদু দাবদাহ

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বুধবার (১৫ মে) তাপদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, কম বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে আগামী শনিবার পর্যন্ত। দেশের অধিকাংশ জেলায় এ তাপপ্রবাহ বিস্তৃত হতে পারে।তবে আগামী রোববার থেকে আবার বৃষ্টি বেড়ে কমতে শুরু করবে তাপমাত্রা।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়ায় দেশের সর্বোচ্চ ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া বাগেরহাটের মোংলায় ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর বাইরে কোথাও পরিমাপযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, শনিবার পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। এ সময় মূলত মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ থাকতে পারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ১৯ মে থেকে আবার বৃষ্টি বেড়ে তাপমাত্রা কমা শুরু করবে।

চলতি মৌসুমে ১ এপ্রিল থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। ৬ মে পর্যন্ত দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে তাপপ্রবাহ। দেশের ইতিহাসে একটানা ৩৭ দিন তাপপ্রবাহের সবচেয়ে বড় রেকর্ড এটি। ৭ থেকে ১২ মে পর্যন্ত ছয় দিন কোথাও তাপপ্রবাহ ছিল না। তবে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় সোমবার থেকে সারাদেশে তাপমাত্রা আবার বেড়েছে।

মে মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের কোথাও কোথাও এক থেকে তিনটি মৃদু অথবা মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ১ থেকে ২টি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। বঙ্গোপসাগরে ১ বা ২টি লঘুচাপ হতে পারে। যার মধ্যে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে নিম্নচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

চলতি মাসে নদ-নদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজ করতে পারে। তবে উজানে ভারী বর্ষণের ফলে উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোথাও কোথাও পানি বিপৎসীমার ওপরে যেতে পারে।


আরও খবর



নেশাগ্রস্ত স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

পুলক ঘটক, সিনিয়র সাংবাদিক :

নেশাগ্রস্ত ও বিকৃত স্বভাবের স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে গতকাল (১৭ এপ্রিল বুধবার) ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রিয়ন্তী সাহা নামে ১৯ বছর বয়সের এক তরুণী। অত্যাচারিত মেয়েটি স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স চায়। কিন্তু হিন্দু আইনে ডিভোর্স নেই। পরে “শ্বশুরবাড়িতে হামলা করার সময় চার বোতল ফেনসিডিলসহ” মেয়েটির স্বামী দীপকে প্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আচ্ছা বলুন দেখি, দীপ “ফেনসিডিলসহ শশুরবাড়িতে হামলা”র ঘটনাটি না ঘটালে আর কোন আইনে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত? হিন্দু আইনে প্রিয়ন্তী সাহা প্রতিকার পাবে কিভাবে? প্রকৃত আইনে প্রতিকারের সুযোগ না থাকলে বিকৃত পন্থায় কিভাবে কি করতে হয় সে বিষয়ে আমাদের দেশের মানুষ সিদ্ধহস্ত। সবকিছুতেই বিকৃত পন্থার অনুশীলন!

শুরুতেই ঝরে গেছে মেয়েটির মধুময় দাম্পত্য জীবনের সকল সম্ভাবনা। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী মাত্র এক মাস আগে গরীবের মেয়ে প্রিয়ন্তীর বিয়ে হয়েছিল এক কোটিপতির নেশাগ্রস্ত ছেলে দীপের সাথে। বিয়ের প্রথম রাত থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। অভিযোগ অনুযায়ী, দীপ তাকে জোর করে নেশা করাতো; এমনকি স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের গোপন মুহুর্তগুলো ফিল্মিং করে ফেসবুকে দিত। 

মেয়েটি ঐ স্বামীর সাথে সংসার করতে রাজি নয়। ছেলের কাকাও নেশাগ্রস্ত দীপের দুরাচারের কথা স্বীকার করেছে। এ পর্যন্ত এই তথ্যগুলি মিডিয়ায় এসেছে। এরপর দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব যখন দীর্ঘায়িত হবে, তখন হয়তো ছেলের পক্ষ থেকে মেয়েটির চরিত্রের দোষ ছড়ানো হবে। এসব নিয়ে সমাজে খোশগল্প হবে। কিন্তু এর স্থায়ী আইনগত সমাধান এবং এধরনের অবস্থার শিকার হওয়া মেয়েদের সুস্থ্য স্বাভাবিক দাম্পত্য ভবিষ্যৎ তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভাববে না! 

আমরা যখন হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ ও মেয়েদের পুনঃবিবাহের আইন চাচ্ছি তখন আমাদের দেশের শিক্ষিত-অশিক্ষিত তথাকথিত প্রগতিশীল কিছু হিন্দু বলছে “হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের অবিচ্ছেদ্য বন্ধন।” হিন্দু বিয়ে ভাঙা সম্ভব নয়। মেয়েদের পুনরায় বিয়ে হতে পারে না। বাটপারদের এসব কথা বাস্তবসন্মত নয়, প্রিয়ন্তী ও দীপের ঘটনা তার প্রমাণ। এরকম প্রমাণ অসংখ্য। 

প্রিয়ন্তী নামক ১৯ বছরের এই মেয়েটির জন্য বাকি জীবন একাকি কাটানো কতটা ভাল এবং নিরাপদ? বর্তমান স্বামীর সাথে বৈধভাবে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে তাকে অন্য কোনো ভাল যুবকের সাথে বিয়ে দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ দিলে কি অধর্ম হবে? অথচ বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিবাহের বিধান নেই। ভারতের হিন্দু আইনে আছে; হিন্দু শাস্ত্রেও বিধান আছে। 

বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ না থাকা সত্ত্বেও এখন আইনকে পাশ কাটিয়ে বহু দম্পত্তি অবৈধপন্থায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছে। অবৈধভাবে মেয়েদের নতুন করে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। জীবনের বাস্তবতায় যে বিষয়ের চাহিদা আছে বা অনিবার্যতা আছে, তাকে শুধু আইনগতভাবে বাঁধা দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যায় না। 

হিন্দু বাটপাররা অবৈধ বিবাহ বিচ্ছেদ, মেয়েদের অবৈধভাবে দ্বিতীয় বিয়ে দেয়া, অবৈধভাবে দাম্পত্য সম্পর্ক করা, অবৈধভাবে সন্তান উৎপাদন এবং সেই অবৈধ সন্তানের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা ইত্যাদি সব জিইয়ে রাখতে চায়। সব অবৈধকর্ম মানবে, কিন্তু বৈধ বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আইন প্রণয়ন মানবে না। ইংরেজদের ভগবান হিসেবে বিশ্বাস করে হিংরেজদের রেখে যাওয়া আইন মানবে! 

হিন্দুদের বড় বড় সংগঠন আছে। অথচ বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ ছাড়া হিন্দুদের কোনো সংগঠনের দাবিনামায় প্রিয়ন্তীর মতো বিড়ম্বিত জীবনের মেয়েদের মুক্তির জন্য বা নারী অধিকারের পক্ষে একটিও দাবি নেই। সবচেয়ে বড় বাটপার সেইসব হিন্দু, যারা নিজেদেরকে শিক্ষিত ও প্রগতিশীল দাবি করে; ইসলামী মৌলবাদের বিপক্ষে কথা বলে অথচ হিন্দু সমাজের সমস্যাগুলোর বিষয়ে নিরব থাকে। শুধু নিরব নয়, এরা কেউ প্রকাশ্যে, কেউ নিরবে এবং কেউ কেউ ইনিয়েবিনিয়ে ”হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” গল্পই চালিয়ে যাচ্ছে। 

মন্ত্র পরে নাকি নারী ও পুরুষের দুই আত্মা এক করে দেয়া যায়! দুই আত্মার বন্ধন হলেও সেটা আবার পুরুষের জন্য নয়। পুরুষ বিয়ে করে এক বউকে ঘরে পৌঁছে দিয়েই চাইলে এক ঘন্টার মধ্যে আবার আরেকটি বিয়ের জন্য দৌড় দিতে পারে। এক পিঁড়িতে বসেই একাধিক মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। আরও বহু নারীর সঙ্গে “জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” তৈরি করতে পারে। সবগুলো বিবাহবন্ধনে শুধু নারী আটকাবে, পুরুষ মুক্ত। হিন্দু আইনে পুরুষের জন্য যতখুশি বিয়ে করতে বাধা নেই। বিয়ে ছাড়াও যত্রতত্র গমণে পুরুষের বাধা নেই; কারণ পুরুষের জন্য “সতীত্ব” নয়। 

হিন্দু পুরুষের বহুবিবাহের সুযোগ বন্ধ করার কথা বললে জন্মজন্মান্তরের বন্ধনবাদী দাদারা হৈ হৈ করে বাধা দিতে আসে। বিবাহ বিচ্ছেদ আইনের দাবি জানালেও প্রগতিশীলতার মুখোশে প্রতিক্রিয়াশীল শয়তনরা আপত্তি করে। আমরা বহুবার শাস্ত্রবিধি দেখিয়ে বলেছি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিয়ে দেয়া সনাতন ধর্মে বৈধ। শাস্ত্রগ্রন্থে এর সুস্পষ্ট বিধান আছে; পৌরাণিক আমলে বিবাহ বিচ্ছেদের নজিরও আছে। একজনেরও সামর্থ্য হয়নি শাস্ত্র দেখিয়ে আমাদের দাবি ভুল প্রমাণ করার। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক কায়েমি স্বার্থ ও হীনমন্যতার ঊর্দ্ধে তারা উঠবে না। 

এরা গরু-বাছুর ও পণ্যসামগ্রির মতো মেয়েকে দান করার পক্ষে। শুধু দান নয়, এর নাম আবার “সম্প্রদান”! অর্থাৎ কোনও প্রকার শর্ত ছাড়া, সম্পূর্ণভাবে স্বত্ত্ব ত্যাগ করে ধর্মার্থে কন্যাদান। মেয়ে নাকি দানের বস্তু! দানের মধ্য দিয়ে মেয়ের উপর বাবার আর কোনও স্বত্ব থাকবে না; কন্যা দান করে বাবা পুণ্য অর্জন করবে। বাবার গোত্রেও মেয়েটির আর পরিচয় থাকবে না। একদম গোত্রান্তর! 

অনেকবার বলেছি, তোমরা একটি প্র্যাকটিক্যাল দৃষ্টান্ত আমাকে দেখাও যেখানে, বিয়ের মন্ত্রের মাধ্যমে মেয়েটির গোত্র বদলে গেছে। মেয়েটির শরীরে আর বাবা-মায়ের ডিএনএ নেই –পরীক্ষা করার পর দেখা গেছে বিয়ের পর মেয়েটির সঙ্গে তার স্বামীর অথবা তার শশুর- শাশুড়ির ডিএনএ মিলছে। একজনও ডিএনএ টেস্ট করে পরীক্ষা দিতে রাজি নয়। মেয়েকে দান করেছ, তার সাথে তোমার আর সম্পর্ক নেই! দান করে মেয়েকে কি পর করে দেয়া যায়? তুমি কি বিয়ে দেয়ার পর তোমার মেয়েকে ভিন্ন সম্পর্কে বউদি ডাকতে পারবে? তাহলে গোত্রান্তর কি আসলে মিথ্যা নয়? তোমার মেয়ের গোত্রান্তর হবে কেন বন্ধু? 

শাস্ত্রে কন্যাদানের বিধান আছে, আমরা তা অস্বীকার করছি না। যজ্ঞের পুরোহিতকে স্বালঙ্করা কন্যা দান করলে পুণ্য বেশি হয়। শাস্ত্রে তাই বলা আছে। কিন্তু উপযুক্ত ছেলের কাছে বিয়ে না দিয়ে পুরোহিতকে কন্যাদান করতে কেউ রাজি হয় না। শাস্ত্রে শিশু কন্যাদানকে আরও বেশি মহিমান্বিত করা হয়েছে। আট বছর বয়সী কন্যাদানে পুণ্য অনেক বেশি। অষ্টম বর্ষীয় কন্যার বুড়ো স্বামী মারা গেলে সেই বাচ্চা মেয়েটাকে স্বামীর চিতায় পুড়িয়ে মারলে আরও বেশি পুণ্য অর্জন করা যায়। শাস্ত্রে এসব আছে। কিন্তু সরকার আইন করে সতীদাহ ও বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করেছে। ভারতে পুরুষের বহুবিবহাও নিষিদ্ধ হয়েছে। এখন কন্যাদানের মতো অসভ্যতা বন্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করার সময় এসেছে। মানুষকে উন্নত হতে হবে, আধুনিক সভ্যতা ও জ্ঞানবিজ্ঞানের সমান্তরালে চলতে জানতে হবে। 

আমি বহুবার শাস্ত্র দেখিয়ে বলেছি, কন্যাদান ছাড়াও বিয়ের বিধান আছে। শাস্ত্রে আট প্রকার বিয়ের বিধান আছে। প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর পারস্পরিক পছন্দে ও সন্মতিতে বিয়ের স্বীকৃতি শাস্ত্রে আছে। সনাতন ধর্ম অনুযায়ী বিশেষ একটি শাস্ত্রের নির্দিষ্ট কোনো বিধান অনুসরণ করার বাধ্যবাদকতা নেই। 

সনাতন ধর্মে উদ্ভট প্রাচীন কিছু প্রথার নজির যেমন আছে তেমনি প্রথার বাইরে গিয়ে উন্নত হওয়ার তাগিদও আছে। সনাতন ধর্ম প্রগতিশীল। পরিবর্তন ও যুগধর্ম অনুসরণ সনাতন শাস্ত্রে অনুমোদিত। যারা সনাতন শাস্ত্রকে প্রতিক্রিয়াশীলতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নারীর জীবনকে দুর্বিষহ করতে চায় এবং হিন্দু নারীদের দাসীর মতো ব্যবহার করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই এবং জয় আমাদের প্রাপ্য।


আরও খবর

ভালো থাকুক পৃথিবীর সব মা

রবিবার ১২ মে ২০২৪