Logo
শিরোনাম

ডেঙ্গুর গতি-প্রকৃতি ও ভয়াবহতা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ জুলাই ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা : দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে চলেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছেএবারের ডেঙ্গুর প্রকোপ ২০১৯ সালের    ভয়াবহতাকে ছাড়িয়ে যাবে।মূলত,প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে এবং প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটেছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়স্বাস্থ্য অধিদপ্তর  সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কার্যক্রম বা তৎপরতা অনেকটা দায়সারা গোছের বলে মনে হচ্ছে। ফলে আগামী দিনে ডেঙ্গু  পরিস্থিতি মরামারীর রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

 

ডেঙ্গু জ্বর একটি এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত গ্রীষ্মকালীন রোগ।এডিস মশার কামড়ে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সচরাচর ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো প্রকাশ পায়।উপসর্গগুলির মাঝে রয়েছে জ্বরমাথাব্যথাবমিপেশিতে  গাঁটে ব্যথা এবং গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। দুই থেকে সাত দিনের মাঝে সাধারণত ডেঙ্গু রোগী আরোগ্য লাভ করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক রক্তক্ষরী রূপ নিতে পারে যাকে ডেঙ্গু 

রক্তক্ষরী জ্বর (ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারবলা হয়। এর ফলে রক্তপাত হয়রক্ত অনুচক্রিকার মাত্রা কমে যায় এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে।কিছু কিছু ক্ষেত্রে কখনো বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম দেখা দেয়। ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমে যায়। ফলে ভিকটিমের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।

 

কয়েক প্রজাতির এডিস মশকী (স্ত্রী মশাডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক। যেগুলোর মধ্যে এডিস ইজিপ্টি মশকী প্রধানতম। ভাইরাসটির পাঁচটি সেরোটাইপ পাওয়া যায়। ভাইরাসটির একটি সেরোটাইপ সংক্রমণ করলে সেই সেরোটাইপের বিরুদ্ধে রোগী আজীবন প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করেকিন্তু ভিন্ন সেরোটাইপের বিরুদ্ধে সাময়িক প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে। পরবর্তীতে ভিন্ন সেরোটাইপের ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমিত হলে রোগীর মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ডেঙ্গু একটি বৈশ্বিক আপদে পরিণত হয়েছে। এশিয়াদক্ষিণ আমেরিকা  অন্যান্য মহাদেশের ১১০টির অধিক দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায়। প্রতি বছর পাঁচ থেকে পঞ্চাশ কোটি মানুষ 

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হোন এবং তাদের মাঝে দশ থেকে বিশ হাজারের মতো মারা যায় বলে পরিসংখ্যান থেকে 

জ্ঞাত হওয়া গেছে। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়,  ১৭৭৯ সালে বিশ্বে ডেঙ্গুর প্রথম প্রাদূর্ভাব লক্ষ্য করা যায়। বিংশ শতকের প্রথমভাগে ডেঙ্গুর ভাইরাস উৎস  সংক্রমণ বিশদভাবে জানা গেছে। মশক নিধনই বর্তমানে 

ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায় বলে সনাক্ত করা হয়েছে। সরাসরি ডেঙ্গু ভাইরাসকে লক্ষ্য করে ওষুধ উদ্ভাবনের গবেষণা চলমান রয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিশটি অবহেলিত গ্রীষ্মকালীন রোগের একটি হিসেবে ডেঙ্গু চিহ্নিত  করেছে।প্রতি বছর গ্রীষ্ম  বর্ষাকালে আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে ডেঙ্গুর প্রাদূর্ভাব দেখা দেয়। এতে অনেকেই আক্রান্ত হোন এবং প্রাণহানীর ঘটনাও উল্লেখযোগ্যই বলা যায়। এবারো কিন্তু তার অন্যথা হয়নি। অতীত পরিসংখ্যান 

বলছেআমাদের দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ২০১৯ সালে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাক্ 


বর্ষা জরিপের তথ্য বলছেএবারের পরিস্থিতি ২০১৯ সালের চেয়েও কয়েক গুণ বেশি ভয়াবহ বলেই মনে হচ্ছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবার ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার ঘনত্ব এবং সম্ভাব্য প্রজননস্থলের সংখ্যা সর্বোচ্চ। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৯৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৫টিই ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ২০১৯ সালে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ওয়ার্ড ছিল ২১টি। কিন্তু এই ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে উভয় সিটি কর্পোরেশন যেসব ব্যবস্থা বা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে তা মোটেই পর্যাপ্ত  কার্যকর নয়। ফলে দিনের পর দিন পরিস্থিতির অবনতিই হচ্ছে।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছেপ্রাক্-বর্ষা জরিপ অনুযায়ী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সব এলাকাতেই ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার উপস্থিতি বেশি। এবার ডেঙ্গুর মৌসুম গত বছরের মতো দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।


সিটি করপোরেশনের জোরালো কার্যক্রমের পাশাপাশি নগরবাসী সচেতন না হলে পরিস্থিতি ভয়ানক রূপ নিতে পারে এমন আশঙ্কায় করছেন স্বাস্থ্য 

বিশেষজ্ঞরা। সার্বিক দিক বিবেচনায় মনে হচ্ছেডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে

চলতি বছরের  জুলাই  পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত  হাজার ৮৭১ জন। এর মধ্যে গত 

২৪ ঘণ্টায় (১৯ জুলাই সকাল আটটা থেকে ২০ জুলাই সকাল আটটা পর্যন্তচলতি বছরে এক দিনে ডেঙ্গুতে মৃত্যু  আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। এই সময়ে মারা গেছেন সাতজন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি 

হয়েছেন ৮৯৮ জন। দেশে কোনো বছরের প্রথম ছয় মাসে ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ রূপ আর কখনো দেখা যায়নি। ২০১৯ সালে প্রথম ছয় মাসে মারা গিয়েছিলেন  জন। আক্রান্ত হয়েছিলেন  হাজার ২০৮ জন। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি আরো উদ্বেগজনক।

জানা গেছেস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার আওতাধীন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল  এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বছরে তিনবার ঢাকা উত্তর  দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মশা জরিপ করে। প্রাক্-বর্ষাবর্ষা  বর্ষা-পরবর্তী জরিপ। গত ১৭ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত এবারের প্রাক্-বর্ষা জরিপ চালানো হয়েছে। ঢাকার দুই সিটির মোট ৯৮টি ওয়ার্ডের  হাজার ১৪৯টি বাড়িতে জরিপ 

পরিচালিত হয়। প্রাক্বর্ষা এই জরিপের ফলাফল গত  জুলাই রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত স্বাস্থ্য ভবনের মিলনায়তনে প্রকাশ 

করা হয়েছে। বিষয়টিকে বেশ উদ্বেগজনক বলেই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেনএডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ‘ব্রæটো ইনডেক্স’ নামে পরিচিত।আর কতগুলো বাড়িতে এডিস মশার উপস্থিতি রয়েছেতা পরিমাপের সূচক হলো হাউস ইনডেক্স। প্রাক-বর্ষা মৌসুম জরিপের এই দুই সূচকেই ডেঙ্গু পরিস্থিতির উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এসেছে। জরিপের তথ্য তুলে ধরে 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা জানিয়েছে এর অর্থ হচ্ছেএসব এলাকার ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশা বা লার্ভা পাওয়া গেছে। গত বছর ৯৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৩টিতে  ইনডেক্স ২০-এর বেশি ছিল।


ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি৪০টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি৫৮টি ওয়ার্ডে গেছেন জরিপকারীরা। এসব ওয়ার্ডের  হাজার ১৪৯টি বাড়ি পরিদর্শন করে ৫৪৯টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। ডিএনসিসির ২৭১ এবং ডিএসসিসির ২৭৮টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।

ঢাকা উত্তর সিটির মগবাজারআদাবরমোহাম্মদপুরমণিপুর  উত্তর বাড্ডা এলাকায় মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে। আর দক্ষিণ সিটির নবাবপুরডিস্টিলারি রোডআজিমপুরহাজারীবাগকাঁঠালবাগান  সায়েন্স ল্যাব এলাকায় মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। এবার এডিস মশা পাওয়া গেছে এমন বাড়ির শতকরা হারও (হাউস ইনডেক্সউদ্বেগজনক। সাধারণত কোনো ওয়ার্ডের হাউস ইনডেক্স ১০-এর বেশি হলে উদ্বেগজনক ধরা হয়। এবার ৯৮টি ওয়ার্ডের ৮০টি ওয়ার্ডেই হাউস ইনডেক্স ১০-এর বেশি পাওয়া গেছে। গত বছর হাউস ইনডেক্স ১০-এর বেশি ছিল ১৯টি ওয়ার্ডে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছেনজরিপের ফলাফলে ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। এবার মশার ঘনত্ব ২০১৯-২০ সালের থেকে অনেক বেশি। এই বছর দেরিতে বর্ষা এসেছেদেরিতে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডেঙ্গু 

মৌসুম গত বছরের মতো দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।জরিপের তথ্য অনুযায়ীএবার বহুতল ভবনে (প্রায় ৪৪ শতাংশএডিস মশার লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। এরপর সবচেয়ে বেশি লার্ভা (প্রায় ৪০ শতাংশপাওয়া গেছে একক বাড়ি  নির্মাণাধীন ভবনে। এসব স্থানে পানি জমে থাকা ভেজা মেঝেপ্লাস্টিক ড্রাম  পাত্র এবং ফুলের  টবে লার্ভা বেশি ছিল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেনএডিস মশার নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা জটিল। বহুতল ভবনে সিটি করপোরেশনের একজন মশককর্মীর জন্য প্রবেশ করা কঠিন। নগরবাসীকে সম্পৃক্ত না করতে পারলে এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দেওয়া মুশকিল। ডেঙ্গুর হটস্পটগুলোকে (বেশি সংক্রমণ এমন এলাকাআলাদা গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেয়া সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। বিশেষ করে হটস্পটগুলোতে উড়ন্ত মশা মারতে ব্যবস্থা নিতে হবে।


জানা গেছেস্বাস্থ্য অধিদপ্তর কয়েক মাস আগে এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করলেও ঢাকার দুই সিটি যথাযথ উদ্যোগ নেয়নি বলে নগরবাসীর অভিযোগ তুলে ধরেন সাংবাদিকেরা। মূলতডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে দেরিতে ভর্তির কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ৫০ জনের তথ্য পর্যালোচনা করে বলেছে বছর ডেঙ্গুতে যাঁরা মারা গেছেনতাঁদের ৮০ 


শতাংশের  মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তির এক থেকে তিন দিনের মধ্যে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেনএবার বছরের প্রথম ছয় মাসেই ডেঙ্গু আক্রান্ত  মৃত্যুর সংখ্যা অতীতের যেকোনো সময়ের 

চেয়ে বেশি। দেশে সাধারণত জুনের পর থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তাই আগামী দিনগুলোতে আক্রান্তের 

সংখ্যা অনেক বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর আক্রান্ত বেশি হলে মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমতাবস্থায় এখনই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর  ব্যবস্থা না নিলে সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। এমনকি তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্রে জানা গেছেডেঙ্গু ভাইরাসের কোন স্বীকৃত টিকা বা ভ্যাকসিন নেই। সুতরাং প্রতিরোধ নির্ভর করে জীবাণুবাহী মশা নিয়ন্ত্রণ এবং তার কামড় থেকে সুরক্ষার উপর। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা পাঁচটি মৌলিক 

দিকনির্দেশনার মাধ্যমে একমুখী নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর সুপারিশ করেছে:

(প্রচারসামাজিক সক্রিয়তা এবং জনস্বাস্থ্য সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করতে আইন প্রণয়ন, ()  স্বাস্থ্য  অন্যান্য বিভাগসমূহের মধ্যে সহযোগিতা (সরকারী  বেসরকারী), (সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহার করে রোগ নিয়ন্ত্রণে সুসম্বদ্ধ প্রয়াস, (যে কোন হস্তক্ষেপ যাতে সঠিক লক্ষ্যবস্তুতে হয় তা সুনিশ্চিত করতে প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ()  স্থানীয় অবস্থায় পর্যাপ্ত সাড়া পেতে সক্ষমতা বৃদ্ধি। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে আমাদের 

অবস্থা খুব একটা সন্তোষজনক নয়। ফলে দেশে ডেঙ্গুর দ্রুত বিস্তার ঘটছে।

মূলতডেঙ্গু ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করার প্রাথমিক পদ্ধতি হলো এর বৃদ্ধির পরিবেশকে ধ্বংস করে ফেলা। পানির 

আধার খালি করে অথবা কীটনাশক প্রয়োগ করে অথবা এইসব জায়গায় বায়োলজিক্যাল কন্ট্রোল এজেন্টপ্রয়োগ করেযদিও spraying

with অর্গ্যানোফসফেট বা পাইরেথ্রযয়েড স্প্রে করাকে খুব লাভজনক ভাবা হয় না।


 স্বাস্থ্যের উপর কীটনাশকের কুপ্রভাব এবং কন্ট্রোল এজেন্টের ব্যয়বহুলতার কথা মাথায় রেখে পরিবেশ শোধনের মাধ্যমে জমা পানি কম করাটাই নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল উপায়।


 মানুষজন পুরো শরীর ঢাকা পোশাক পরেবিশ্রামের সময় মশারি ব্যবহার করে এবং  প্রতিরোধক রাসায়নিক প্রয়োগ করে মশার কামড় এড়ানোর পরামর্শও এসেছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে পুরোপুরি কার্যকর কোন চিকিৎসা এখন পর্যন্ত আবিস্কার হয়নি। তবে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধী টিকা কয়েকটি দেশে অনুমোদিত হয়েছে। তবে এই টিকা শুধু একবার সংক্রমিত হয়েছে এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে কার্যকর। একাধিকবার আক্রান্ত হলে তা মোটেই কার্যকর নয়। মূলত এডিস মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়। তাই মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধ করতে হবে।  জন্য এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী বিভিন্ন আধারেযেমনকাপটবটায়ারডাবের খোলসগর্তছাদ ইত্যাদিতে আটকে থাকা পানি অপসারণ করতে হবে। শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঢেকে রাখে এমন পোশাক পরিধান করতে হবে।

ডেঙ্গু একটি ভয়াবহ মশকবাহী  ভাইরাস জনিত রোগ। সম্প্রতি এই রোগের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে আমাদের দেশে। তাই ডেঙ্গু জ্বর হলে পরিপূর্ণ বিশ্রাম এবং বেশি করে তরল খাবার গ্রহণ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জ্বর 

কমাতে প্যারাসিটামল এবং  প্রায়শ রোগীর শিরায় স্যালাইন দেয়ার আবশ্যকতা রয়েছে। মারাত্মক রূপ ধারণ 

করলে রোগীকে রক্ত দেয়ারও আবশ্যকতা রয়েছে। ডেঙ্গু জ্বরে হলে কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক  

ননস্টেরয়েডাল প্রদাহপ্রশমী ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকবে বলা হয়। কারণএতে রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ফলে 

রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছেডেঙ্গু পরিস্থিতি এখন অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করতে চলেছে।এমতাবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গণসচেতনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সাথে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল সনাক্তকরণ এবং বংশবিস্তার রোধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণরোগ নিরাময় চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয়তর। একই সাথে আক্রান্তদের  দ্রুত  চিকিৎসা প্রদানের জন্য দেশের হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ সহ জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা দরকার। অন্যথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।


আরও খবর



নিখোঁজের ৫ মাস পর কলেজ ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার' স্বামী-স্ত্রীকে আটক

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

টিউবওয়েল বসানোর সময় মাটির নিচ থেকে ৫ মাস পূর্বে নিখোঁজ হওয়া এক কলেজ ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেছে র‍্যাব। 

জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার চাঞ্চল্যকর এ কলেজ ছাত্র হত্যাকান্ডের পর হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী রেজ্জাকুল ও তার স্ত্রী সাবিনা কে র‍্যাব-৫ সিপিসি-৩, জয়পুরহাট কাম্পের একটি চৌকস অভিযানিক দল  র‍্যাব-১২ এর সহযোগীতায় গত মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর বগুড়াতে অভিযানে চালিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেন।

সত্যতা নিশ্চিত করে র‍্যাব-৫ সিপিসি-৩, জয়পুরহাট কাম্প থেকে জানানো হয়, "নিখোজ হওয়ার প্রায় ৫ মাস পর বাড়ির আঙ্গিনায় টিউবওয়েল বসানোর সময় মাটির নিচ থেকে কলেজ ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার হয়" জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের মুল পরিকল্পনাকারী মোঃ রেজ্জাকুল আলী (৪৩), পিতা-মোঃ মোজাম্মেল আলী,সাং-গোপীনাথপুর,থানা-শিবগঞ্জ, জেলা-বগুড়া ও তার স্ত্রী মোছাঃ সাবিনা খাতুন (৩৮),স্বামী-মোঃ রেজ্জাকুল আলী

থানা-শিবগঞ্জ,জেলা-বগুড়াদ্বয়কে র‌্যাব-৫ এবং র‍্যাব-১২ এর যৌথ অভিযানে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বগুড়া জেলার সদর থানার পীরগাছা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়। 

র‍্যাব আরো জানান, গত ২২ এপ্রিল ঈদের দিন সন্ধ্যায় জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের মাসুদ রানার কলেজ পড়ুয়া ছেলে নাঈম (২৩) নিজ বাড়ি থেকে বের হলে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের তিন দিন পেরিয়ে গেলেও বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও সন্ধান না পেয়ে ২৫ এপ্রিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন নাঈমের পরিবার।

পরবর্তীতে নিখোজের প্রায় ৫ মাস পর ৯ সেপ্টেম্বর একই গ্রামের মোঃ শামসুল ইসলাম এর বাড়ির টিউবওয়েল বসানোর কাজ করার সময় মাটির নিচ থেকে  মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

এর পরই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলে র‍্যাব-৫,সিপিসি -৩ আসামীদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে এবং একাধিক অভিযান পরিচালনা করেন। 

গত ১০ সেপ্টেম্বর ভিকটিমের মা বাদী হয়ে পাঁচবিবি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন উক্ত বাড়ির ভাড়াটিয়া রেজ্জাকুল দম্পতিদের বিরুদ্ধে। 

তদন্তের এক পর্যায়ে হত্যা কান্ডের আসামী সনাক্ত করতে সক্ষম হলে আসামী এরই মধ্যে আত্মগোপনে চলে যায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামীদের অবস্থান বগুড়ায় নিশ্চিত করা যায় এবং পরবর্তীতে র‍্যাব -১২ বগুড়া ক্যাম্পের সহযোগিতায় আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।


আরও খবর



নওগাঁয় মহিলা দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

বর্ণাঢ্য বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে নওগাঁর মহাদেবপুরে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে। 

শনিবার বিকেলে এ উপলক্ষে মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড এশিয়া ব্যাংক প্রাঙ্গন থেকে একটি বর্ণাঢ্য বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ব্যান্ড পার্টির মিউজিকের তালে তালে চালুন সাজিয়ে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন থেকে কয়েকশ’ নারী বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। 

বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন, মহাদেবপুর উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী কাজী রওশন জাহান, সহ-সভানেত্রী রেহেনা পারভীন, সাধারণ সম্পাদিকা নার্গিস পারভীন, সাংগঠনিক সম্পাদক ঝর্ণা খাতুন, সহ-দপ্তর সম্পাদক রোজিনা পারভীন প্রমুখ।

পরে এশিয়া ব্যাংকের নিচে আয়োজিত সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মন্ডল প্রধান অতিথি এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন, এস, এম, হান্নান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ও জেলা মহিল দলের সহ-সভানেত্রী কাজী রওশন জাহান এতে সভাপতিত্ব করেন।

উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির ১নং সদস্য কাজী সামছুজ্জোহা মিলনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আব্দুস সোবহান, শাহাদৎ হোসেন শান্ত, সদস্য চঞ্চল রহমান, খাইরুল ইসলাম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাস্টার হাফিজুর রহমান জিল্লুর, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাকিল আহমেদ, ১নং সদস্য আতিকুর রহমান আতিক প্রমুখ। 

এসময় উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সফাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল আলম বাচ্চু, প্রচার সম্পাদক আমিন ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক ফেরদৌস আলম, হাতুড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর গফুর মাস্টার, সিনিয়র সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান তাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবীব বাচ্চু, রাইগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর রহমান মঞ্জু, এনায়েতপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মমতাজ হোসেন, চাঁন্দাশ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজাউদৌলা বাচ্চু, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম ইয়াজদানী শাম্মি, সাজেদুল ইসলাম সাজ্জু, ইখতিয়ার উদ্দিন দুরন্ত, এরশাদ আলী, সোহাগ হোসেন বাবু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ইউপি সদস্য শিহাব রায়হান, জাহাঙ্গীর আলম স্বপন, হাতেম আলী, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাপি কুমার মন্ডল রনি, গোলাম কিবরিয়া, হিরণ আহমেদ, মেহেরাব হোসেন জিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর

আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে ছাড় নয়

মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩




আমি শেখাতে আসিনি, শিখতে এসেছি

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী শিক্ষাবিদ :

 

কখনো কখনো নিজেকে চিনতে পারিনা | হ্যাংলা পাতলা একটা মানুষ এসেছিলাম এই বিশ্ববিদ্যালয়ে | তখন ভাবতাম, আমি শিক্ষক হিসেবে এসেছি | সময় যত গড়িয়েছে ততই বুঝেছি শিক্ষক হওয়া খুব কঠিন, বরং যতই দিন যাচ্ছে ততই বুঝতে পারছি আমি শেখাতে আসিনি, শিখতে এসেছি | আমি শিক্ষক হতে পারিনি, তবে ছাত্র হবার চেষ্টা করছি |

তখন চোখে চশমা ছিলোনা, এখন কানের উপর ভর করে দু'চোখে চশমা জায়গা দখল করে নিয়েছে | যখন চোখে চশমা ছিলোনা তখন ব্ল্যাকবোর্ড আর সাদা চক ছিল সম্বল | বই হাতে কখনো ক্লাসে ঢুকবোনা, নিজেই একটা বই হবার চেষ্টা করবো, এমন একটা চিন্তা নিয়েই আমার এখানকার যাত্রাটা শুরু হয়েছিল | জানিনা নিজে বই হতে পেরেছি কিনা, তবে যাদের ছাত্র হিসেবে পেয়েছি তারাই আমার কাছে এক একটা বই, এক একটা বিস্ময় হয়েছে | ওদের পড়াতে গিয়ে, নিজে শিখেছি | শিখতে গিয়ে বুঝেছি, শিক্ষক হওয়া হয়তো আর কখনো হয়ে উঠবেনা | অদ্ভুত মনে হলেও সত্য, এখনও শিক্ষক হতে পারিনি, তবে চেষ্টা করে যাচ্ছি | হয়তো এই চেষ্টাটা আমৃত্যুই চলতে থাকবে, কিন্তু শিক্ষক হওয়ার পিপাসাটা কখনোই মিটবেনা |

গবেষণার কিছুই জানতাম না, এখনো জানিনা | এখনও গবেষণা শিখছি, আমার ছাত্ররাই আমাকে শেখাচ্ছে | ওদের নতুন নতুন চিন্তা, নতুন নতুন আইডিয়া, নতুন নতুন স্বপ্ন, আমাকেও বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে আগ্রহী করছে | ওদের মতো এতো মেধাবী আমি নই, ওদের চিন্তার গতির সাথে আমার চিন্তার গতি কখনোই পেরে উঠেনি, বরং ওদের চিন্তা আমার চিন্তাকে এগিয়ে নিয়েছে | আমার কাছে আমার ছাত্ররাই আমার শিক্ষক, আমি তাদের ছাত্র | আর শিক্ষকরা মেধাবী হলে গবেষণায় ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই | বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে মনে হয়েছিল, গতানুগতিক শিক্ষাদানের মধ্যেই বুঝি শিক্ষা বন্দি হয়ে থাকবে | কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে ততই বুঝেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের চেয়েও বড় নতুন নতুন জ্ঞানের জন্ম দেওয়া | কিন্তু সেটাতে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কতটা এগিয়েছে, সেটা হয়তো ভাবনার বিষয় | সেখানে আত্মসমালোচনটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ | কিন্তু আত্মসমালোচনাতে আমরা ভয় পাই, যতটা সাহসী আমরা আত্মপ্রচারে | এর সাথে ক্ষমতার অসুখও এখন প্রায় সবার শরীরে বাসা বেঁধেছে | শরীরের রোগ সরানো যায়, মনের রোগ সারানোর কোনো ওষুধও নেই, চিকিৎসাও নেই |

তখন শুনেছি, গবেষণা করার পরিবেশ এই দেশে নেই | গবেষণা করতে দামি দামি যন্ত্রপাতি লাগে, অনেক অর্থের বাজেট লাগে | এতো অর্থ, এতো দামি যন্ত্রপাতি কেনার কি আমাদের সাধ্য আছে | এমন সময়টাতেই আমার ছাত্ররাই খুব কম বাজেটে আধুনিক যন্ত্রপাতি ডিজাইন করেছে, তৈরী করেছে | | গবেষণার অধরা স্বপ্ন ওদের সৃজনশীল সৃষ্টি দিয়েই মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে | সেই ধারা এখনও অব্যাহত আছে | ওদের এখন দেখছি, মলিকুলার ডিনামিক্স, ডেনসিটি ফাংশনাল থিওরি, মেটল্যাবের মতো জটিল জটিল বিষয়গুলো কত সহজে সমাধান করছে | তখন আমি মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলোকে এলিয়ে নিচ্ছি, যদি চুলগুলো নড়াতে গিয়ে আমার ভোঁতা মগজটাই নতুন করে নড়েচড়ে উঠে !

ব্ল্যাকবোর্ড-চকের যুগ গেলো, হোয়াইট বোর্ড-মার্কার পেনের যুগ গেলো, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের যুগ গেলো, এখন এসেছে স্মার্ট বোর্ড | খুব আনস্মার্ট আর বোকা মানুষ আমি, স্মার্ট বোর্ডে পড়াতে গিয়ে যখন প্রায় প্রতিদিন খেই হারিয়ে ফেলি, তখন আমার এখনকার মেধাবী ও সম্ভাবনাময় ছাত্ররাই আমাকে শিখিয়ে দিচ্ছে কত সহজে স্মার্ট বোর্ড ব্যবহার করে সারা পৃথিবীর জ্ঞানভাণ্ডারকে হাতের নাগালে আনা যায় | ওদের কাছে শিখতে গিয়ে খুব আনন্দ পাচ্ছি, গর্বিত হচ্ছি, ওরাও আমার মতো বোকা একটা ছাত্র পেয়ে আনন্দ পাচ্ছে | শিক্ষার মধ্যেই তো আনন্দ, যে শিক্ষায় আনন্দ নেই, সেই শিক্ষা মূল্যহীন | বড় বড় মনীষীদের কথা | খুব ছোট একটা মানুষ আমি | কিন্তু যখন দেখছি আমার ছাত্ররা দেশ ছাড়িয়ে সারা পৃথিবী জয় করে চলেছে, তখন চোখে আনন্দ অশ্রু, গর্বিত বুক | সন্তানরা যখন এগিয়ে যায় বাবারা তখন সত্যিকার অর্থেই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হয়ে উঠে |

আমি ঝুলন্ত তারার মতো, কখনো কেঁদেছি, কখনো হেসেছি, কখনো অভিমান করেছি কিন্তু জীবনের সবচেয়ে পরম পাওয়াগুলো আমার প্রিয় সন্তানরাই দিয়েছে | আমি ঝুলন্ত তারা, যেদিন আকাশ থেকে খসে পড়বো, সেদিনও ওদের জীবনজয়ের জয়োধ্বনিগুলো কান পেতে শুনবো | আমার মতো একটা সাধারণ মানুষকে কেউ হয়তো মনে রাখবেনা, এটাই প্রকৃতির নিয়ম, সময়ের স্রোতে সব যে হারিয়ে যায়, তবে জীবনের অনেক না বলা কথা থেকে যাবে মহাকর্ষীয় তরঙ্গে তরঙ্গে |

আমি হয়তো মানুষ না, ছিলামও না, হয়তো আমি একটা চিত্রকরের কল্পনায় আঁকা ছবি | আমি কাঁদছিনা, আমি বৃষ্টিতে কল্পনায় হাটছি, বৃষ্টিতে কাঁদতে গেলে বৃষ্টি সেই কান্না খেয়ে ফেলে, হাসিমুখটা তখন বেরিয়ে আসে | হয়তো কান্না লুকিয়ে হাসির চেষ্টাটাই জীবন | জীবন খুব কঠিন একটা বিষয়, এর পরীক্ষাটাও কঠিন, কারণ জীবনের পরীক্ষায় পাশ-ফেল নেই |


আরও খবর

নির্বোধের মতো বিশ্বাস করোনা

রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩




নওগাঁয় নদীর পানিতে পড়ে ৩ বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

নওগাঁয় নদীর পানিতে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ৩ বছর বয়সি রামিশা আক্তার নামে এক শিশুর মৃতদেহ বৃহস্পতিবার বিকেলে উদ্ধার করেছে সার্ভিসের ''ডুবুরি দল''

উল্লেখ্য- গত বুধবার বিকেল পনে ৩ টারদিকে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বালুভরা (পালশা) গ্রাম এলাকায় নদীর পানিতে পড়ে শিশুটি নিখোঁজ হয়। 

সত্যতা নিশ্চিত করে বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান নিহত শিশুর স্বজনদের বরাত দিয়ে বলেন,

বুধবার দুপুরের দিকে নদীর পানিতে পড়ে নিখোঁজ হওয়া ৩ বছর বয়সী শিশু রামিশা'র মৃতদেহ বৃহস্পতিবার বিকেলে ডুবরি দলের চেষ্টায় কটকবাড়ী চন্তরামপুর ব্রীজের নিকট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহত শিশু রামিশা আক্তার বদলগাছী উপজেলার বালুভরা ইউপির পলশা গ্রামের আব্দুল রউফ মন্ডল এর মেয়ে।

স্থানিয়রা ও পুলিশ সুত্রে জানাগেছে, ঘটনার দিন ও সময় শিশুটি তাদের বাড়ীর পাশে নদীর ধারে খেলা করতে গিয়ে অ-সাবধানতা বশত নদীর পানিতে পড়েন। পানিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনাটি স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে নদীতে নেমে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে এক পর্যায়ে বদলগাছী থানা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসকে জানায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। বুধবার রাত পর্যন্ত নদীতে ডুবে যাওয়া শিশুর সন্ধান না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে ''ডুবুরির একটি দল'' ঘটনাস্থলে পৌছে দীর্ঘ সময় চেষ্টা চালিয়ে বিকেলে (পড়ে যাওয়া ঘটনাস্থল থেকে দূরে) কটকবাড়ী চন্তরামপুর ব্রীজের নিকট থেকে শিশু রামিশা আক্তার এর মৃতদেহ উদ্ধার করেন। শিশু মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার, স্বজন সহ এলাকাবাসীর মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছাঁয়া।


আরও খবর



রাণীনগরে চোলাইমদসহ একজন আটক

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :

নওগাঁর রাণীনগর থানাপুলিশ অভিযান চালিয়ে ছয় লিটার চোলাইমদসহ নুরুজ্জামান (৪৭) নামে একজনকে আটক করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ‍্যায় তাকে আটক করে মামলা রুজু করা হয়েছে। আটক নুরুজ্জামান উপজেলার কামতা সরদার পাড়া গ্রামের নিজাম উদ্দীনের ছেলে।

রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ‍্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার আবাদপুকুর-আদমদীঘি সড়কের বগাড়বাড়ী ব্রিজ থেকে নুরুজ্জামানকে ছয় লিটার দেশীয় তৈরি চোলাইমদসহ আটক করা হয়েছে। এঘটনায় তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা রুজু করে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।


আরও খবর