Logo
শিরোনাম

জলদস্যুর কবলে লক্ষ্মীপুরের ক্যাডেট ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুবের বাড়ীতে শোকের মাতম

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুরে কবলে পড়া জাহাজে থাকা বাংলাদেশী ২৩ নাবিকদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার ক্যাডেট আইয়ুব খান লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের রাখালিয়া গ্রামে। প্রায় ১ মাস আগে তার বাবা আজহার মিয়া মারা যান। এখনো গৃহকর্তা হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারটি। এরমধ্যেই পরিবারের ছোট ছেলে সাগরে ডাকাতদের কবলে রয়েছে। এ শোকে আইয়ুবের মা হোমায়রা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কিছুক্ষণ পর পরই ছেলেকে বুকে চেয়ে চিৎকার করে উঠেন। আইয়ুব বাবা তুমি কই বাবারে, কথা বলতে বলতে মূর্ছা যাচ্ছেন  ৬০ বছর বয়সী মা হুমায়ারা বেগম। হাতে তার মোবাইল ফোন। ফোনে রয়েছে ছেলের ছবি, আর চোখের কোণে অশ্রু। ইঞ্জিনিয়ার ক্যাডেট আইয়ুব খান এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে গত মঙ্গলবার সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি সেসহ আরো ২২ নাবিক। তার উদ্বিগ্ন মা ছুটে চলেছেন আর কোন মানুষ দেখলে বলতে থাকেন আমার বাবা কি হয়েছে। বাবা আইয়ুব খান এসেছে? কাঁদছেন আর বলছেন, ‘আমার মানিক কোথায়? তারে আমার সামনে আনেন। আমি আমার মানিকরে বুকে নেব।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রোজার ইফতারের পর থেকে খবর পেয়ে মূর্ছা যান ইঞ্জিনিয়ার ক্যাডেট আইয়ুব খানের মা হুমায়ারা বেগম (৬০)। আইয়ুব খানের মা  হুমায়ারা বেগম বলেন, ‘আমরা যখন ইফতার করছিলাম, এর মাঝেই আমার ছেলে তার ভাই রাব্বীর সাথে ফোনে কথা হয় জাহাজটি সোমালিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’‘টাকা না দিলে মেরে ফেলবে’, শুনে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন আইয়ুব খান এর মাসহ পরিবারের সদস্যরা। মুক্ত করতে মালিকপক্ষের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করে চলেছেন তারা।

আইয়ুব লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাখালিয়া গ্রামের বিরন বেপারী বাড়ির মৃত আজহার মিয়ার ছোট ছেলে। তিনি রাখালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রামগঞ্জের ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া একাডেমি থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি থেকে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। প্রায় ১ বছর ধরে ইন্টার্নি করছে আইয়ুব ।


লক্ষ্মীপুরের রায়পুর রাখালিয়া গ্রামের ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানের বাড়ী উপস্থিত সংবাদকর্মীদের কথা শুনে ঢাকা থেকে টেলিফোনে কথা বলেন ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানের  মেজো ভাই রাব্বী। বলছেন, মিডিয়া বেশি কিছু বলতে পারবো না। তবে বিপদে আছেন তারা। টাকা না দিলে মেরে ফেলবে, জিম্মি ২৩ নাবিক পরিবারের মতো চরম উৎকন্ঠায় জিম্মি লক্ষ্মীপুরের ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানের পরিবার। মুক্তিপণ না পেলে জলদস্যুরা তার ভাইসহ অন্যদের মেরে ফেলবে। মঙ্গলবার বাংলাদেশী সময় সন্ধ্যায় মেজো ভাই রাব্বীর সাথে সর্বশেষ কথা ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানের সাথে। তখন আইয়ুব খান ফোনে বলছেন জলদস্যুরা তাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। ফাইনাল কথা হচ্ছে, এখানে যদি টাকা না দেয়, আমাদের মেরে ফেলবে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাশে সময় দুপুরে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে বাংলাশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। এ সময় শিল্পগ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে নেয় সোমালিয়ান দস্যুরা। এদিন বিকেলে জাহাজটি সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। জাহাজে লক্ষ্মীপুরের আইয়ুব খানসহ মোট ২৩ জন নাবিক জিম্মি। এর মধ্যে জিম্মি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার রাখালিয়া গ্রামের ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানও রয়েছে।  তিনি বিয়ে না করলে ও তাদের সংসারে রয়েছেন দুই ভাই এক বোন।



আরও খবর



হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয়

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

তাপজনিত আঘাতের সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হলো হিটস্ট্রোক। এটিকে চিকিৎসাশাস্ত্রে একটি জরুরি অবস্থা হিসেবে অভিহিত করা হয়। ফলে যখন কারও হিটস্ট্রোক হয় তখন তাকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা দিতে হয়।

হিটস্ট্রোকের কারণে মৃত্যু, ব্রেন এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রতঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সাধারণত ৫০ বছর বা তারও বেশি বয়সী মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তবে স্বাস্থ্যবান মানুষও ভয়াবহ এই অবস্থায় পড়তে পারেন।

অতি উচ্চ তাপমাত্রা ও পানিশূন্যতার কারণে হিটস্ট্রোক হয়ে থাকে। হিটস্ট্রোক হলে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বিকল হয়ে যায়। এরফলে শরীর অস্বাভাবিক গরম হয়ে পড়ে।

হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। সেগুলো হলো

  • মাথা ঝাঁকুনিসহ ব্যথা
  • মাথা ঘোরা এবং হালকা মাথাব্যথা
  • গরম থাকা সত্ত্বেও শরীর দিয়ে ঘাম বের না হওয়া
  • লালচে, গরম এবং শুষ্ক চামড়া
  • পেশী দুর্বলতা
  • বমি বমি ভাব এবং বমি
  • হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, যেটি শক্তিশালী হতে পারে আবারও দুর্বলও হতে পারে
  • দ্রুত ও অগভীর শ্বাসপ্রশ্বাস (পর্যাপ্ত বাতাস গ্রহণ করতে না পারা)
  • আচরণগত পরিবর্তন: যেমন বিভ্রান্তি ও হতভম্ব হওয়া
  • খিঁচুনি
  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তবে হাসপাতালে নিতে যদি দেরি হয় তাহলে তাৎক্ষণিক কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। 

প্রতিরোধের উপায়


গরমের দিনে কিছু সতর্কতা মেনে চললে হিটস্ট্রোকের বিপদ থেকে বেঁচে থাকা যায়। এগুলো হলো : হালকা, ঢিলেঢালা কাপড় পরিধান করুন। কাপড় সাদা বা হালকা রঙের হতে হবে। সুতি কাপড় হলে ভালো। যথাসম্ভব ঘরের ভিতর বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন। বাইরে যেতে হলে চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি বা ছাতা ব্যবহার করুন। বাইরে যারা কাজকর্মে নিয়োজিত থাকেন, তারা ছাতা বা কাপড়জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে পারেন। প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল পান করুন। মনে রাখবেন, গরমে ঘামের সঙ্গে পানি ও লবণ বের হয়ে যায়। তাই পানির সঙ্গে সঙ্গে লবণযুক্ত পানীয় যেমন খাওয়ার স্যালাইন, ফলের রস, লাচ্ছি পান করুন।

আক্রান্ত হলে করণীয়


দ্রুত শীতল কোনো স্থানে চলে যান। ফ্যান বা এসি ছেড়ে দিন। ভেজা কাপড়ে শরীর মুছে ফেলুন। সম্ভব হলে গোসল করুন। প্রচুর পানি ও খাওয়ার স্যালাইন পান করুন। চা বা কফি পান করবেন না। যদি হিটস্ট্রোক হয়েই যায়, দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে, ঘরে চিকিৎসা করার কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে রোগীর আশপাশে যারা থাকবেন, তাদের করণীয় হলো : রোগীকে দ্রুত শীতল স্থানে নিয়ে যান। গায়ের কাপড় খুলে দিন। শরীর পানিতে ভিজিয়ে দিয়ে বাতাস করুন। সম্ভব হলে কাঁধে, বগলে ও কুচকিতে বরফ দিন। রোগীর জ্ঞান থাকলে তাকে খাওয়ার স্যালাইন দিন। খেয়াল রাখবেন, হিটস্ট্রোকে অজ্ঞান রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস ও নাড়ি চলছে কিনা। প্রয়োজন হলে কৃত্রিমভাবে নিঃশ্বাস ও নাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করতে হতে পারে। হিটস্ট্রোকে জীবন বিপদাপন্ন হতে পারে। তাই এ বিষয়ে অবহেলা না করে সবাইকে সতর্ক হতে হবে।

লেখক : ইমেরিটাস অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক।


আরও খবর

তীব্র তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার উপায়

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪




ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ভারতে শুরু হয়ে গেল ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শুরু হওয়া এ ভোট চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। দেশটির প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার ৪৭ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পছন্দের জনপ্রতিনিধিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।

প্রথম দফায় শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ১০২ লোকসভা আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুর দুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি রয়েছে। প্রথম দফার ভোটে প্রার্থীর সংখ্যাও ছাড়িয়েছে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি।

ভারতের নির্বাচন কমিশনের হিসাব বলছে, এবার নথিভুক্ত ভোটারের সংখ্যা ৯৬ কোটি ৮৮ লাখ। এর মধ্যে নারী ভোটার রয়েছেন ৪৭ কোটি ১০ লাখ এবং পুরুষ ভোটার ৪৯ কোটি ৭০ লাখ।

৪৮ হাজার ট্রান্সজেন্ডার ভোটার ছাড়াও এবার শতবর্ষী ভোটারের সংখ্যা দুই লাখেরও বেশি। একইসঙ্গে ৮৫ বছরের বেশি ভোট দাতার সংখ্যাও প্রায় ৮২ লাখ।

এছাড়াও ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ ভোটারের সংখ্যা ২১ কোটি। সবমিলিয়ে নির্বাচনকে উৎসবে পরিণত করতে প্রস্তুত দেশটির সাধারণ জনগণ। ১০ লাখ ৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে ৫৫ লাখ ইভিএমের মাধ্যমে ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ভারতের জনগণ।

ভারতজুড়ে এবার ২ হাজার ৬৬৬টি নথিভুক্ত রাজনৈতিক দল লোকসভা ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে বিজেপি, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, ন্যশানাল পিপলস পার্টি, বহুজন সমাজবাদি পার্টির মতো জাতীয় রাজনৈতিক দল যেমন রয়েছে; তেমনই রয়েছে মমতার তৃণমূল, লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের মতোর শক্তিশালী প্রদেশিক দলও।

এদিকে, নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও রাজ্য পুলিশ সিআইএসএফসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। শুধু তাই নয়, আকাশপথে এবং ড্রোনের সাহায্যেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।


আরও খবর



আল-আকসায় ঈদ জামাতে মুসল্লিদের ঢল

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মতো ফিলিস্তিনেও ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে আজ বুধবার। তবে অন্যান্য সব দেশে ঈদ উৎসবে পরিণত হলেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সেটি অবাস্তব। ঈদের রাতেও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৪ জন। স্বজনদের দাফনের মাধ্যমে গাজায় কাটছে ঈদ। ঈদের নামাজে আল আকসা মসজিদে সমবেত হন হাজার হাজার মুসলিম।

ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে নুসিরাত ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই শিশু। ইসরায়েলের গণহত্যা থেকে ছয় মাস বেঁচে থাকা গাজার বাসিন্দা আবুবকর বলেন, 'এবার ঈদ হবে আমাদের আরও প্রিয়জনকে কবর দেওয়ার মধ্য দিয়ে।' খবর আল জাজিরার ও মাকতুব মিডিয়ার।

আবুবকর বলেন, 'অপুষ্টির কারণে আরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে, আরও বেশি যুদ্ধে আহত হচ্ছে। প্রতিদিন আরও বেশি লোক মারা যাচ্ছে।পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'বাড়িতে বোমা ফেলা হচ্ছে, জায়গায় জায়গায় আঘাত করা হচ্ছে। রাফায় স্থল আক্রমণ করা হতে পারে এ নিয়ে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।

মধ্য গাজার ফিলিস্তিনি যুবক জানান, এবারের ঈদের কোনো মানে নেই। তার কথায়, 'এটা শুধু দুঃখের। এটা শুধুই অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং বিষাদময়। আমরা উদযাপন করতে পারি এমন কিছু নেই।'

এরপরও আবুবকররা আশা দেখছেন যে, এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের অবসান হবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ঈদুল ফিতরের বার্ষিক শুভেচ্ছায় গাজা এবং অন্যত্র মুসলমানদের উপর সহিংসতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি বলেন, 'আমার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে যে গাজা, সুদান এবং আরও অনেক জায়গায়, সংঘাত ও ক্ষুধার কারণে মুসলিমরা সঠিকভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারবে না।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় ৩৩ হাজার ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এখনও ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে রয়েছে অন্তত ৮ হাজার মানুষ।


আরও খবর



বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ককে পদ থেকে অব্যাহতি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

জামালপুর প্রতিনিধি :

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক শোয়েব আল হাসান সজলকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সংগঠনের শৃঙ্খলা ও নীতি আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করেছে জেলা ছাত্রলীগ। সেই সাথে কেনো তার বিরুদ্ধে চুড়ান্ত শাস্তিমুলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না তার উপযুক্ত কারনসহ আগামী তিনদিনের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে স্বহস্তে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম খান ও সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করিম রাব্বি স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে অব্যহতি দেয়া হয়। এই নিয়ে ২য় বারের মত অব্যাহতি পেলেন শোয়েব আল হাসান সজল। 

জানা যায়,দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০২৩ সালে ১৬ আগস্ট শোয়েব আল হাসান সজলকে প্রথমবার সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর লিখিত জবাবের প্রেক্ষিতে ৩ ডিসেম্বর তার অব্যাহতি প্রত্যাহার করে নেয় জেলা ছাত্রলীগ। প্রত্যাহার পত্রে ভবিষ্যতে দলীয় শৃঙ্খলা কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য সতর্ক করা হয় তাকে। এই নিয়ে দুইবার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেলেন উপজেলা ছাত্রলীগের এই নেতা। 

শোয়েব আল হাসান সজলের ভাষ্য, তিনি দলীয় শৃঙ্খলা বা দলের নীতি আদর্শ পরিপন্থী কোন কাজে জড়িত না। কি কারনে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তা জানেননা তিনি। এরপরেও জেলা ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত মেনে লিখিত ভাবে জবাব দিবেন বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম খান বলেন,দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।


আরও খবর



লাফিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা, মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ঈদুল ফিতর আর বাংলা নববর্ষ মিলিয়ে এবার দীর্ঘ ছুটি ছিল। এমন ছুটিতে গ্রামে যাওয়ার সুযোগ কে হাতছাড়া করে? তবে উসবেও আমাদের একমাত্র উকণ্ঠা হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। পৃথিবীর প্রত্যেক জনপদেই উসব পালিত হয়। কিন্তু কোনো নাশকতা ছাড়া শুধুমাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষ হতাহতের নজির বোধ হয় অন্য কোথাও নেই। 

ঈদের ছুটি কাটিয়ে শহরে ফেরার পথে বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। এর মধ্যে গাড়ির উচ্চগতি, ওভারটেক, ঝাঁকুনি কিংবা হার্ডব্রেক অবচেতনে ডেকে আনছিল মৃত্যুভয়। তবে শেষমেশ নিরাপদেই ফিরতে পেরেছি। তবে কারো কারো কপালে সে ভাগ্য হয়নি। এবারের ঈদযাত্রায়ও সড়ক দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে এসেছে প্রতিদিনই।

গত ১৬ এপ্রিল ফরিদপুরের কানাইপুরে বাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিমেন্টবাহী একটি ট্রাকের ধাক্কায় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বিভিন্ন গাড়ির আরও ১৪ আরোহী নিহত হয়। দুর্ঘটনায় নিহতের এ তালিকায় যোগ হয়েছে তরুণ সংগীতশিল্পী মতিউর রহমান হাসান ওরফে পাগল হাসানের নাম। ১৮ এপ্রিল সকালে কনসার্ট থেকে ফেরার পথে সুনামগঞ্জের ছাতক পৌর শহরের সুরমা সেতুর কাছে বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে সঙ্গীসহ নিহত হয়েছেন পাগল হাসান।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য বলছে, ঈদযাত্রা শুরুর দিন (৪ এপ্রিল) থেকে ১৮ এপ্রিল কর্মস্থলে ফেরা পর্যন্ত ১৫ দিনে সড়কে ৩৯৯টি দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও এক হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে দুটি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছে। সবমিলিয়ে সড়ক, রেল ও নৌ পথে ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও এক হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।

অন্যদিকে গত বছর ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১.২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.০৮ শতাংশ ও আহত ১৪৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে। আর এসব দুর্ঘটনায় যথারীতি মোটরসাইকেলই শীর্ষে রয়েছে। এবারের ঈদে ১৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ২৪০ জন আহত হয়েছে; যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯.৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০.৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০.৩৭ শতাংশ প্রায়।

যদিও সব দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে আসে না। তাই প্রকৃত দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আট বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৬০ হাজার ৮৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় তিন হাজার ৮৬২ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে চার হাজার ৪৭৫ জনের। অর্থা শুধুমাত্র ঈদের মৌসুমেই সড়ক দুর্ঘটনায় ৭.৩৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য বলছে, গত ১১ এপ্রিল ঈদের দিনে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে ঈদের আগে-পরে ছয় দিন এবং ঈদের দিন মিলিয়ে সাত দিনে সারা দেশে মোট ১১৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২২ জন নিহত এবং আহত হয়েছে আরো অন্তত ১৯৫ জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩৬ শতাংশের বেশি জাতীয় মহাসড়কে, ৩৪ শতাংশের বেশি আঞ্চলিক সড়কে, ১৮ শতাংশ গ্রামীণ সড়কে এবং প্রায় ১১ শতাংশ শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমান সময়ে মোট দুর্ঘটনার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ঘটে মোটরসাইকেলে। যার মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৫.১১ শতাংশ, মুখোমুখি সংঘর্ষে ২১.২৫ শতাংশ, অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে ধাক্কা বা চাপায় ২৩.৬২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই উঠতি বয়সী তরুণ।

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। আর বর্তমান সরকারের সময়ে যে পরিমাণ নতুন রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার হয়েছে তা অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। ১৯৭১ সালে মাত্র তিন হাজার ৬০০ কিলোমিটারের সড়ক দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশে বর্তমানে তিন লাখ ৭৫ হাজার কিলোমিটারে সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় ও আঞ্চলিক মিলিয়ে ২২ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক আছে।

এসব সড়ক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে হাইওয়ে পুলিশের ৭৩টি ইউনিটের প্রায় তিন হাজার সদস্য। ইতিমধ্যে দেশে অনেকগুলো মহাসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস, আন্ডারপাস, ওভারব্রিজ নির্মিত হয়েছে। দুই লেনের মহাসড়ক চার লেনে পরিণত হয়েছে আর চার লেনগুলো আট লেনে পরিণত হবে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ফলে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এত এত অবকাঠামো উন্নয়ন, জনবল মোতায়েন এবং পরিবহন আইন সংস্কার সত্ত্বেও সড়কে শৃঙ্খলার অভাব রয়ে গেছে, যা রোজার ঈদ আর কোরবানির ঈদে প্রকট আকার ধারণ করে।

ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার কারণ বিশ্লেষণে দেখা যায়: ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ভাঙাচোরা সড়ক, অদক্ষ চালক, দুর্নীতি, ট্রাফিক তদারকির অভাব, অপ্রশস্ত সড়ক, বেপরোয়া গতি, মহাসড়কে মোটরসাইকেল, তিন চাকার গাড়ি চলাচল ইত্যাদি। পরিবহনের তুলনায় যাত্রী কয়েকগুণ বৃদ্ধি ও পরিবহন মালিকের অতিমুনাফার লোভে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালক রাস্তায় নামানো হয়। সড়ক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কর্তব্যে অবহেলা ও দুর্নীতি সড়ক শৃঙ্খলার অন্তরায়। এমনকি মহাসড়কে অনভ্যস্ত শহুরে সিটি বাসগুলো সড়কে চাপ তৈরি করে। আর অধিক ট্রিপ পাওয়ার আশায় বিরতিহীন ও বেপরোয়া গতিতে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

 


আরও খবর