Logo
শিরোনাম

মিয়ানমারে বিদ্রোহীরা আরও শক্তিশালী হচ্ছে

প্রকাশিত:বুধবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

১. বিদ্রোহী তৎপরতা তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পরিস্থিতিতে আপাতত না পড়লেও মিয়ানমার বর্তমানে একটি দীর্ঘস্থায়ী অস্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে
২. মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ১৪ জানুয়ারি দেশটির চিন রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর পালেতোয়া দখল করে নেয়। শহরটি বাংলাদেশ সীমান্তের পূর্বদিকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আর এর উত্তরে রয়েছে ভারতীয় সীমান্ত


৩. পালেতোয়া দখলের পর উত্তর-পূর্ব অঞ্চলজুড়ে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘুদের ৩টি সুসজ্জিত মিলিশিয়া বাহিনীজোট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একটি বড় সমন্বিত আক্রমণও পরিচালনা করে। অপারেশন ১০২৭ নামে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর এসব অভিযানের মুখে ক্রমেই সব রণাঙ্গনে পিয়ীয়ে পড়ছে দেশটির সামরিক বাহিনী।
৪. ১২ জানুয়ারি যুদ্ধরত আরাকান আর্মিসহ অন্যান্য পক্ষগুলোর মধ্যে চীনের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার মাত্র দুই দিন পরে পালেতোয়ার দখল হাতছাড়া হয় জান্তার। বলা বাহুল্য, চুক্তির প্রভাব কেবল চীন সীমান্তবর্তী এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকবে বলেই ধারণা করা হয়েয়ীল।
৫. বিদ্রোহী তৎপরতা তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পরিস্থিতিতে আপাতত না পড়লেও মিয়ানমার বর্তমানে একটি দীর্ঘস্থায়ী অস্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
৬. বেসামরিক নাগরিক এবং আন্ডারগ্রাউন্ড নেটওয়ার্ক দ্বারা গঠিত সশস্ত্র প্রতিরোধের নতুন রূপ ইতোমধ্যেই অস্থির মিয়ানমারের জন্য নতুন করে বৃহত্তর অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে থাকা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য এর অর্থ কী দাঁড়াচ্ছে তাদের ফেরার সম্ভাবনার কী হবে এখন।
৭. অপারেশন ১০২৭ চীনের সীমান্তবর্তী উত্তর শান রাজ্যে শুরু হয়। এমএনডিএএ, তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি আরাকান আর্মির থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের বিদ্রোহী সৈন্যরা দাবি করেছে, প্রদেশে এখন পর্যন্ত তারা শত শত সামরিক ফাঁড়ি এবং বেশ কয়েকটি শহর সীমান্ত প্রবেশদ্বার দখল করেছে।
৮. মাসের শুরুতে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর ঠিক আগে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জান্তা সৈন্যদের সঙ্গে কয়েক সপ্তাহের ভয়াবহ লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়। ওই সংঘাতের পর বিদ্রোহীরা সামরিক বাহিনীর আঞ্চলিক সদর দপ্তর দখল করে চীনা সীমান্তের কাছে অবস্থিত লাউকাই নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
৯. যদিও যুদ্ধবিরতি চুক্তির অর্থ হচ্ছে চীনা সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় বিদ্রোহীদের অগ্রগতি বন্ধ হয়ে যাবে, বিশেষজ্ঞরা যুদ্ধবিরতি কতদিন ধরে বহাল থাকবে তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন। কারণ অতীতে ধরনের কয়েক ডজন চুক্তি শেষ পর্যন্ত ভেঙে গিয়েয়ীল।
১০. বিশ্বজুড়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে এখন নতুন প্রশ্ন, মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি দেশটির জান্তার জন্য শেষের শুরু কি না। তবে এরকম কোনো সিদ্ধান্তে আসার সময় এখনো আসেনি।
১১. যুদ্ধবিরতি মূলত উত্তর-পূর্ব মিয়ানমারের চীন সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর জন্য প্রযোজ্য। এটা দেশের বাকি অংশে যেখানে বিদ্রোহ চলছে, সেখানকার জন্য খুব কমই প্রাসঙ্গিক, তিনি বলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অভ পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের বিআইপিএসএস সভাপতি মেজর জেনারেল অব এএনএম মুনিরুজ্জামান।
১২. ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স দাবি করছে, এটি ২৫টি সামরিক চৌকি, এক ডজন শহর এবং চীন মিয়ানমারের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যের অংশ ৫টি প্রধান সীমান্ত ক্রসিং দখল করেছে, তিনি বলেন।
১৩. এই যুদ্ধবিরতি কতদিন বহাল থাকে সেটাই দেখার বিষয়। কারণ যুদ্ধবিরতির সম্মতি আগেও য়ীল, কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। চীন বিশেষভাবে এই যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছে যাতে বাণিজ্য পথ খুলে দেওয়া হয় এবং সীমান্তের কাছে বসবাসকারী চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া যায়, বলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ বিআইআইএসএস নামক একটি সরকারি থিংক ট্যাংকের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়ীত্ব পালন করা মুনিরুজ্জামান।
১৪. মুনিরুজ্জামান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মায়ানমারের রাখাইন চিন রাজ্যে বিদ্রোহী দলগুলো আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তি অর্জন করেছে। সামরিক বাহিনীর তুলনায় তারা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।
১৫. এই পরিস্থিতিতে সামরিক জান্তা ভেঙে পড়বে বলেও বিশ্বাস করেন না তিনি। আমার মনে হয়না তা হবে। প্রথমত, মধ্য মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো এখনো জান্তার নিয়ন্ত্রণে। দ্বিতীয়ত, জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো মধ্য মিয়ানমার দখলে নিতে আগ্রহী নয়, তাদের স্বার্থ নিহিত রয়েছে তাদের রাজ্যের ক্ষমতা সম্পদের মধ্যে, মুনিরুজ্জামান বলেন। সুতরাং, নতুন করে শক্তিশালী হলেও বিদ্রোহী গোষ্ঠীসমূহ খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ অর্জন করতে পারবে না, বলেন তিনি।
১৬. গত বছরের শেষের দিকে জানা যায়, ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অধীনে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে তিন হাজার রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করা হবে। তবে তা আর পরে কখনও হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার সম্পর্কিত একটি সূত্র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থেকে টিবিএসকে বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন উদ্যোগ একটু মন্থর হয়েছে।
১৭. ডিসেম্বরের আগেই প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা য়ীল। বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইন ফিরে যাওয়া নিরাপদ হবে না। আমরা খবর পাচ্ছি, রাখাইনের অন্তত ৬০ শতাংশ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, বলেন ওই কর্মকর্তা।
১৮. তিনি উল্লেখ করেন, মিয়ানমারে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এমনকি বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারাও মিয়ানমারে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করতে সমস্যায় পড়েছেন বলে জানান তিনি। বর্তমানে ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের একটি দূতাবাস এবং রাখাইনে একটি কনস্যুলার সার্ভিস রয়েছে।
১৯. মিয়ানমারের যুদ্ধ পরিস্থিতি চীন, জাপান ভারতের মতো দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে। তাই তারাও সেখানে যুদ্ধ বন্ধ করার চেষ্টা করছে, সংঘাতের অবসান রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারে আভাস দিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর ঠিক একদিন আগে বলেয়ীলেন কর্মকর্তা।
২০. কিন্তু রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্যের কাছাকায়ী অবস্থিত চিন রাজ্যের পালেতোয়া বিদ্রোহীদের দখলের পর যুদ্ধবিরতির সুবাদে প্রত্যাশিত স্থিতিশীল পরিস্থিতির আশা সামান্যই অবশিষ্ট থাকে। আরাকান আর্মি সাবেক আরাকান প্রদেশ নামে পরিচিত রাখাইনেও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্থিতিশীল পরিস্থিতিও রোহিঙ্গাদের জন্য তেমন কিছু করতে পারবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
২১. সামরিক জান্তার প্রত্যাবাসনে কোনো প্রকৃত আগ্রহ নেই। হয়তে তারা কিছু প্রতীকী প্রত্যাবাসন দেখাবে। সর্বোচ্চ এটুকুই তারা করতে পারে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান টিবিএসকে বলেন। মিয়ানমারের সংঘাত খুব শীঘ্রই শেষ হবে না বলেও ধারণা তার।
২২. মিয়ানমারের স্বাধীনতার বছর ১৯৪৮ সাল থেকে দেশটিতে বিদ্রোহ চলছে। সংঘাতটি মূলত জাতিগত দ্বন্দ্ব থেকেই, যেখানে কয়েক ডজন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে। কিন্তু ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চিকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ গ্রেপ্তার এবং পরবর্তীকালে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসভাবে দমনপীড়ন চালানোর পর বিদ্রোহের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
২৩. ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করা সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট, শান স্টেট আর্মি সাউথ অ্যান্ড নর্থ, আরাকান আর্মি, কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স অর্গানাইজেশন, মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স, চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট, কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন, তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, মন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি।
২৪. প্রত্যাবাসন নিয়ে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে আগ্রহের অভাব রয়েছে এটি তাদের জন্য মুহূর্তে অগ্রাধিকার নয়। দলের মধ্যে আরাকান আর্মি রয়েছে, যেটি ভবিষ্যতে প্রত্যাবাসন প্রশ্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হবে, বলেন শাহাব এনাম।
২৫. অধ্যাপক বলেন, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতা এবং রাজনীতিবিদদের দ্বারা গঠিত নির্বাসিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট রোহিঙ্গারা যে মিয়ানমারের অংশ তার স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছে। স্বীকৃতিকে উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করেন তিনি।
২৬. তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রত্যাবাসন ইস্যুকে কেবল বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্পর্কের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ভুল। প্রত্যাবাসনকে শুধু দ্বিপাক্ষিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায় না এটিকে বহুস্তরী দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া, বলেন তিনি।
২৭. তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মনোযোগ কেবল সামরিক সরকারের দিকেই নয়, ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট তথা জাতীয় ঐক্য সরকার এবং আরাকান আর্মিসহ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর দিকেও থাকা উচিত। রোহিঙ্গা রাখাইন জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনার দিকে ইঙ্গিত করে শাহাব এনাম বলেন, প্রত্যাবাসন অর্থবহ হওয়ার জন্য এই ব্যবধান কমাতে হবে। রাখাইন-রোহিঙ্গা সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আরেকটি প্রভাবক যা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে, তিনি ব্যাখ্যা করেন।
২৮. মিয়ানমারে চলমান বিদ্রোহী তৎপরতা জান্তাকে দুর্বল করতে যাচ্ছে এবং দীর্ঘমেয়াদে একটি অর্থবহ গণতান্ত্রিক সরকার আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য রোহিঙ্গা ইস্যুটির প্রতিটি স্তরের সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে, অধ্যাপক শাহাব এনাম বলেন।
২৯. চীন, ভারত এবং রাশিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাতমাদোর সম্পর্কের সুবাদে উদ্ভূত শক্তি-ভারসাম্যের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর সুবিধাজনক অবস্থান বিবেচনা করে বিআইপিএসএসের সভাপতি মুনিরুজ্জামানও নিকট ভবিষ্যতে কোনো অর্থবহ প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা দেখছেন না। তিনি মনে করেন না, বাংলাদেশ সরকার মুহূর্তে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বিদ্রোহী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।
৩০. এর আগে শরণার্থী বিশেষজ্ঞ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক . নাসির উদ্দীন গত বছরের কার্যকর না হওয়া প্রত্যাবাসন পরিকল্পনাটিকে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করেননি। এমনকি যদি প্রতি বছর পাঁচ হাজার রোহিঙ্গাও প্রত্যাবাসন করা হয়, এক মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থীর মিয়ানমারে ফিরে যেতে ২০০ বছরেরও বেশি সময় লাগবে, তিনি উল্লেখ করেন।
৩১. অধ্যাপক নাসির উদ্দীন আরও বলেন, শরণার্থীদের জন্য বিদেশি অনুদান রেশন কমার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা সম্প্রতি মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য বেশ আগ্রহী য়ীল। কিন্তু মিয়ানমারে তীব্র সংঘাতের অর্থ হচ্ছে তারা ফেরত যাওয়া নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাববে।
৩২. অধ্যাপক বলেন, নিরাপত্তার দিক থেকে মিয়ানমার এখন ২০১৭ সালের তুলনায় অনেক বেশি অস্থিতিশীল। তাই আমি মনে করি না রোহিঙ্গারা এই পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে বেশি উৎসাহী হবে। পরিস্থিতি সম্পর্কে অধ্যাপক নাসির উদ্দীনের ধারণার মতো রোহিঙ্গা নেতারাও একই মত পোষণ করছেন।
৩৩. টেকনাফ শালবাগান ক্যাম্পের একজন কমিউনিটি নেতা মাঝি নূর হোসেন বলেন, আমার এক ভাগ্নে, এক চাচাতো ভাই এবং কিছু বন্ধু এখনও আরাকানে রাখাইনে অবস্থান করছে। তাদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলি। তারা আমাদের সবসময় বলে যে, সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি মোটেও ভালো নয়।
৩৪. তারা বলছে, আমরা যদি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে সেখানে ফিরতে না পারি, তাহলে আরাকানে বসবাস করা খুবই কঠিন হবে। বর্তমানে সেখানে নিরাপত্তা শূন্য শতাংশ। বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়দের পরামর্শ হলো, কেবল যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমার সরকারকে আমাদের নাগরিকত্ব দিতে। পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজি করাতে পারে, তাহলেই যেন দেশে ফিরি।
৩৫. এদিকে প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা, ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় সম্প্রদায়ের ওপর চাপ, রোহিঙ্গাদের স্থানীয় চাকরি নেওয়া এবং সমুদ্রপথে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করার মতো চ্যালেঞ্জ সামনে বাড়বে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা আশঙ্কা করেন।
৩৬. শরণার্থীদের জন্য মানবিক অনুদান কমে যাওয়ায় ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর এই প্রথমবারের মতো শরণার্থী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়ন প্রচেষ্টার সমর্থনে সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী ঋণদাতাদের কাছ থেকে ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ।
৩৭. বিআইপিএসএসের সভাপতি মুনিরুজ্জামান বলেন, শরণার্থী কার্যক্রমের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তবে তার ভাষায় মানবিক ক্লান্তি এবং ইউক্রেন গাজায় নতুন মানবিক সংকটের উত্থানের কারণে বিদেশি অনুদান বৃদ্ধির সম্ভাবনা এখন ক্ষীণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপ শরণার্থী কার্যক্রমের মূল দাতা য়ীল উল্লেখ করে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক টানাপোড়েন করা উচিত নয়।

সূত্র : টিবিএস 


আরও খবর



কর্মকর্তা হত্যার বিচার করে আমরা একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই:পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

গজারিয়া প্রতিনিধি: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, 'বন কর্মকর্তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে পাহাড় খেকোরা একটি বার্তা দিতে চেয়েছিল যে তাদের পথে কেউ বাধা হলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আমরাও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করে  একটি নজির স্থাপন করতে চাই। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জড়িতদের এমন বিচার করা হবে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করার কথা কেউ চিন্তাও না করে।

রবিবার (০৭ এপ্রিল) সকাল পৌণে ১১টায় মন্ত্রী মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভিটিকান্দি গ্রামে পাহাড় খেকো চক্রের হাতে নিহত বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানের পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করে চেক ও নগদ টাকা হস্তান্তর শেষ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন,' বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আমাদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও অবগত রয়েছেন। সময় সুযোগ পেলে তিনিও নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলবেন। বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত আমরা তাদের চিহ্নিত করতে পেরেছি। এ ঘটনায় একজন আটক হলেও বাকিরা গা ঢাকা দিয়েছে। আমরা তাদের আটকের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারের সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। অচিরেই সব আসামিকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

এর আগে মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে সকাল পৌণে ১১টায় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভিটিকান্দি গ্রামে নিহত বন কর্মকর্তা সাজেদুজ্জামানের বাড়িতে পৌঁছান। এসময় তিনি নিহত বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানের বাবা শাহজাহান মাস্টার,মা উম্মে কুলসুম এবং স্ত্রী মুমতাহেনা সুমি ও নয় মাসের কন্যা সন্তান সাদিকার সাথে কথা বলেন। এ সময় নিহত বন কর্মকর্তার মা এবং স্ত্রী হাতে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের একদিনের বেতন ১০ লক্ষ টাকার চেক এবং মন্ত্রণালয়ের তহবিল থেকে ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেন তিনি। পাশাপাশি নিহত বন কর্মকর্তার স্ত্রী মুমতাহেনা সুমিকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। পরে তিনি নিহতের কবর জিয়ারত করে রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, বন সংরক্ষণ (প্রশাসন) আব্দুল আউয়াল সরকার, পরিবেশ বন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব আবু নাঈম মোহাম্মদ  মারুফ খান, মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আশরাফুল আলম,গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তারআরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফরেস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহব্বায়ক আমিরুল হাছান সহ বন বিভাগের মাঠ পযায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

উল্লেখ্য,গত ৩১ মার্চ রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে ডাম্প ট্রাকে করে মাটি পাচার করার সময় বাধা দিতে গেলে ড্রাম ট্রাক চাপা দিয়ে নির্মমভাবে খুন করা হয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামানককে । কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।


আরও খবর



মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে ঈদের চাল বিতরণ

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

এম.পলাশ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক: 

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পবিত্র ঈদুল ফিতরের উৎসবকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের বিশেষ ভিজিএফ চাল বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে বিতরণ করা হয়েছে। 

রবিবার সকাল থেকে এ সব চাল বিতরণের উদ্বোধন করেন ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মো. সাইফুল ইসলাম। ইউপি সচিব মো. সালাহউদ্দিন, ট্যাগ অফিসার মো.রিয়াজুল ইসলাম।

১৭৯৩ জন নারী পুরুষ সুবিধাভোগীরা নিচ্ছেন ১০ কেজি করে চাল।

এ চাল বিতরণকালে অন্যনোর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আব্দুর রহিম মৃধা, আবু বকর ফরাজী, মো. কাওসার হোসেন, সংরক্ষিত ইউপি সদস্য পারভীন বেগম।

চাল বিতরণকালে সকল সুবিধাভোগীদের কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য,  জন্য দোয়া চেয়েছেন।


আরও খবর



ঈদের ছুটি : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ নির্দেশনা

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ঈদের ছুটিতে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে হাসপাতালগুলোয় কর্মরতদের জন্য ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

রবিবার অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, চলতি বছর শবেকদর, ঈদুল ফিতর, বাংলা নববর্ষ ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে দীর্ঘ ছুটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ছুটির এই সময়ে হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নলিখিত নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

নির্দেশনাগুলো হলো

১. ছুটিকালীন কর্মস্থলে পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য ঈদের আগে ও পরে সমন্বয় করে জনবলকে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া যেতে পারে।

২. প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিরবচ্ছিন্ন জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম ও জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে অনুকূলিতভাবে ছুটি মঞ্জুর করবেন।

৩. প্রতিষ্ঠান সিভিল সার্জন, বিভাগীয় পরিচালক-কে অবহিত করে শুধু ঈদের ছুটিকালীন নিজ জেলার মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় জনবল সমন্বয় করতে পারবেন।

৪. জরুরি বিভাগে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

৫. জরুরি বিভাগ ও লেবার রুম, ইমারজেন্সি ওটি সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

৬. অন্তঃবিভাগে ইউনিট প্রধানরা প্রতিদিন কাজের তদারকি করবেন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো জরুরি ল্যাব, এক্স-রে সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

৭. ছুটি শুরু হবার পূবেই ছুটির সময়ের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, আই ভি ফ্লুয়িড কেমিক্যাল রি-এজেন্ট, সার্জিক্যাল সামগ্রী মজুদ ও তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে স্টোর কিপার অথবা ছুটিকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফ অবশ্যই নিজ জেলা ও উপজেলার অবস্থান করবেন।

৮. অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

৯. ছুটিকালীন হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আগাম পত্র দিতে হবে।

১০. প্রতিষ্ঠান প্রধান ও বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা ছুটিকালীন সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করবেন হবে এবং ঈদের দিন কুশল বিনিময় করবেন।

১১. প্রতিষ্ঠান প্রধান ছুটি নিলে অবশ্যই বিধি মোতাবেক কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাবেন এবং দায়িত্ব গ্রহণকারী কর্মকার্তা সকল দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।

১২. প্রতিষ্ঠান প্রধান ঈদের দিন রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন তদারকি করবেন এবং রোগীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

 


আরও খবর

তীব্র তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার উপায়

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪




ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

আজ ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ তারিখ মঙ্গলবার জয়পুরহাট  জেলার মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মানবাধিকার সচেতনতা সৃষ্টি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জয়পুরহাটে 'জেলা মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও সুরক্ষা কমিটি'র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের মাননীয় সার্বক্ষণিক সদস্য মো: সেলিম রেজা। কমিশনের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মোঃ আশরাফুল আলম ও উপপরিচালক এম. রবিউল ইসলাম। 

সভায় ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, সিভিল সার্জন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিগণ, শিক্ষক, মানবাধিকার কর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। 

সভার শুরুতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মোঃ আশরাফুল আলম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এরপর বর্তমান কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে বক্তব্য প্রদান করেন কমিশনের উপপরিচালক এম. রবিউল ইসলাম।

সভায় কমিশনের মাননীয় সার্বক্ষণিক সদস্য মো: সেলিম রেজা প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, 'আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের চালানো গণহত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বড় ইতিহাস। ১৯৭৫ এর আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা এবং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচার বন্ধ করা ছিল ইতিহাসে বর্বরোচিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত'। 

তিনি আরও বলেন, ''তথাকথিত ও ভুঁইফোড় মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই প্রতারণা, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। এ  ছাড়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতো নাম ব্যবহার করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন ভুয়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান প্রতারণা করে আসছে এবং মীমাংসার নামে সাধারণ মানুষের কাছে অর্থ আদায় করছে। এসব সংগঠন থেকে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মানবাধিকার শব্দটি ব্যবহার করে ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলোই মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।

অনুষ্ঠানে ভুয়া ও নামধারী মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতারণা ও অন্যান্য অপকর্ম থেকে সচেতন থাকতে উপস্থিত সম্মানিত অতিথিবৃন্দ বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন। 


আরও খবর



"বাবাভাণ্ডারী (কঃ) দুঃখী-ভাবী-অসহায়দের আশ্রয়স্থল

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত লক্ষ লক্ষ আশেকানে মাইজভাণ্ডারীদের সরব অংশগ্রহণে মহান ২২শে চৈত্র, গাউসুল আযম, ফানাফিল্লাহ্, বাকাবিল্লাহ্, শেখে ফায়াল, ইউসুফে সানী, জামালে মোস্তফা, হুজুর গাউসুল আযম, শাহ্সুফি সাইয়্যিদ গোলামুর রহমান বাবাভাণ্ডারী (কাদ্দাসাল্লাহু ছিররাহুল আজিজ) এর ৮৭তম পবিত্র ওরশ শরীফ মাইজভাণ্ডার শরীফসহ সারা বিশ্বে মহাসমারোহে উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে 'আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া' পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, জীবনী মুবারক আলোচনা, জিয়ারত, ওয়াজ মাহ্ফিল, ইফতার ও সাহরী আয়োজনসহ ৩ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালন করেছে। ৫ এপ্রিল, ২০২৪ মাইজভাণ্ডার শরীফে ইফতারের পূর্বে এবং সাহরীর পূর্বে আলোচনা ও মুনাজাত পরিচালনা করেন, বাবাভাণ্ডারী (কঃ) এর প্রপৌত্র, মাইজভাণ্ডার শরীফের সাজ্জাদানশীন, সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী মাইজভাণ্ডারী। তিনি বলেন, "গাউসুল আযম হযরত সৈয়দ আহমদউল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) আখেরী জামানার ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়ে যুগোপযোগী এবং স্রষ্টা ও সৃষ্টির প্রতি প্রেমের অনন্য এক তরিকা, 'তরিকা-এ-মাইজভাণ্ডারীয়া' প্রবর্তন করেছেন। মাইজভাণ্ডারী তরিকা মূলত ক্বাদেরিয়া তরিকার অনুসরণে প্রবর্তিত হয়েছে। বাংলাদেশে 'ক্বাদেরিয়া' তরিকার মূল দায়িত্ব পালন করছেন হযরত সৈয়দ আহমদউল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ)। তারই স্নেহধন্য ভ্রাতুষ্পুত্র ইমামুল আউলিয়া, হুযুর গাউসুল আযম হযরত সাইয়্যিদ গোলামুর রহমান বাবাভাণ্ডারী (কঃ) এ মহতী তরিকাকে পূর্ণতা দান করেছেন। তিনি গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী (কঃ) এর সুশোভিত বাগানের শ্রেষ্ঠ প্রষ্ফুটিত গোলাপ। যার সৌরভ আজ বিশ্বজুড়ে। তার মাঝে খিজিরি বেলায়তের ঐশ্বর্য বিরাজমান। তিনি শরীয়তের জ্ঞানে যেমন পারদর্শী ছিলেন, তেমনি প্রবল কষ্ট-সাধনা-রিয়াজতের মাধ্যমে মারেফাতের সীমাহীন খনি অর্জন করেছেন। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর সুউচ্চ, দুর্গম পাহাড়ে, বনে জঙ্গলে, নির্জনে মহান আল্লাহ্ তায়ালার ধ্যানে নিমগ্ন ছিলেন। তার নূরানী রূপের আলো, আধ্যাত্নিক শক্তি, মানবিকতা, উদারতা, স্নেহ-ভালোবাসার প্রভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে স্থান পেয়েছেন। আজও জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অজস্র মানুষ বাবাভাণ্ডারী (কঃ) এর প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে নবীপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন, আল্লাহ্ তায়ালা ও ইসলামকে জানছেন। বিচ্ছিন্ন জনপদেও তিনি ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছেন।

মাইজভাণ্ডার শরীফকে গাউসুল আযম ক্বেবলা ক্বাবা (কঃ) ও গাউসুল আযম বাবাভাণ্ডারী (কঃ) দুই সমুদ্রের মিলনস্থলের মত মহাকাব্যিক স্থানে পরিণত করেছেন। বাবাভাণ্ডারী (রাঃ) এদেশের মাটি-মানুষের আবেগ-ভালোবাসার সাথে মিশে আছেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে এ দেশের মানুষের সকল মুক্তি সংগ্রামে এবং অগ্রযাত্রায় তার অবদান অনস্বীকার্য। বাবাভাণ্ডারী (রাঃ) অভাবী, দুঃখী, শোষিত-বঞ্চিতদের আশ্রয়স্থল ; সুখ-দুঃখের সাথী। তিনি মানুষের অন্তরে স্রষ্টা ও সৃষ্টির প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসার শিখা জ্বেলেছেন, নবীপ্রেমের জোয়ার এনেছেন, আহলে বাইতগণের মর্যাদাকে সমুন্নত করেছেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের পতাকাকে উড্ডীন করেছেন। তার বেলায়তের প্রভাব বাংলাদেশের ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ থাকে নি। কারণ গাউসুল আযম কোন নির্দিষ্ট স্থানের জন্য শুভাগমন করেন না। তিনি সকলের। বাবাভাণ্ডারী (কঃ) এর জীবনাদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আমাদেরকে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আল্লাহ্ ও রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আহলে বাইতগণের এর ভালোবাসায় জীবন সাঁজাতে হবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম, খলিফাবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া ও মইনীয়া যুব ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

দোজাহানের বাদশাহ্  হুযুরপুর নূর, আহমদ মুজতবা, মুহাম্মদ মুস্তফা, প্রিয় নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং সম্মানিত আহলে বাইতে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গণের প্রতি সশ্রদ্ধ সালাতু সালাম নিবেদন শেষে মাহ্ফিলের সমাপনী মুনাজাতে বিশ্ববাসীর কল্যাণে প্রার্থণা করেন শাহ্সুফি সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী মাইজভাণ্ডারী।


আরও খবর