সপ্তাহের ব্যবধানে দাম
বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি,
ডিম, আলুর। অবাক করা বিষয় হলো, গরিবের খাদ্য পাঙাশ মাছের দাম ছাড়িয়েছে ব্রয়লার মুরগিকে। কমেছে
কাঁচামরিচের দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে সবজি ও মাংসের দাম। মাংস ও আলুর দাম কেজিপ্রতি
বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। ডিমের ডজন বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। কচুরমুখীর দাম কেজিতে
বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা।
শুক্রবার
(২৮ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১৮০
টাকা কেজি। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা কেজিতে। অথচ এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার
মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকা কেজি। সোনালি কক মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩২০
টাকা কেজি। অন্যদিকে, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০
টাকা কেজি।
ফার্মের
মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা ডজন। অথচ এক সপ্তাহ আগেও এ ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪০
টাকা। অর্থাৎ ডজনে বেড়েছে ১০ টাকা।
গরিবের
খাবার আলু। ভালো মানের ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগে
ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। তবে, ভ্যানে করে কিছুটা নিম্নমানের আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০
টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি
হচ্ছে ৬০ টাকায়।
সবজির
মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে কচুরমুখীর। এক সপ্তাহ আগেও ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি
হয়েছে পণ্যটি। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি।
তবে, ক্রেতাদের সবচেয়ে
বেশি অবাক করেছে মাছের দাম। বাজারে সবচেয়ে কম দামি মাছ পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০
থেকে ২০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়ার কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে
৩৫০ টাকা কেজিতে। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে। প্রায় একই দামে
বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। বড় মানের রুই, কাতল ও কারফু মাছ
কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়।
অপরদিকে, শিং মাছ বিক্রি
হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। চিংড়ি মাছের সর্বনিম্ন দর ৬০০ টাকা। ভালো মানের চিংড়ি
বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। টেংরা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি।
রামপুরা
বাজারে আসা ক্রেতা সুমন অধিকারী বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি। তবে, আমার কাছে অবাক লেগেছে মুরগির মাংসের চেয়ে পাঙাশের দাম বেশি দেখে। একটু
ভালো মানের পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। অথচ ব্রয়লার মুরগির দাম ১৮০
টাকা। এদিকে, মুরগির দামও বেড়েছে। পাঙাশের দাম বাড়ায় গত
সপ্তাহে মুরগি নিয়েছি ১৭০ টাকায়। শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১৭৫ টাকা। দাম চাওয়া হয়
১৮০ টাকা।
বাজারের
মুরগি ব্যবসায়ী ফারুক হাসান বলেন, মুরগির দাম বাড়ছে। আরো বাড়বে। কেন বাড়বে জানতে
চাইলে তিনি বলেন, ঈদের কারণে মুরগির চাহিদা কমছিল। এ কারণে
কম দামে বিক্রি হয়েছে। এখন চাহিদা বাড়ছে, দামও বেড়েছে। কারণ,
মুরগির খাবারের দাম বেশি।
বাড্ডা
বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মোকাম্মেল হোসেন শহিদ বলেন, সবধরনের মাছের দাম বাড়তি। আড়ত থেকে
বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে বেশি দামে বিক্রি করছি। চাহিদা কম থাকলে মাছের দাম
কমবে।
বাড্ডার
বাজারে আসা ক্রেতা রুহুল আমিন বলেন, বাজারে এলে জিনিসপত্রের দাম শুনে মাথা ঠিক থাকে
না। ইচ্ছে থাকলেও টাকার অভাবে জিনিস কিনতে পারি না। মাংস কেনা বাদ দিয়েছি। গরিবের
পাঙাশ মাছের দামও বাড়তি। এখন মাছ খাওয়াও বাদ দিতে হবে। সবজির বাজারে গিয়ে দেখা
গেছে, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি। কাঁচামরিচ বিক্রি
হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পোয়া (২৫০গ্রাম)। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, করলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি। ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে
কচুরমুখী। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন-কাঁকরোলও।
বরবটি, ঝিঙা, ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। পেঁপে, চিচিঙা,
ঢ্যাঁড়স ও পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে। লাউ বিক্রি
হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস। ঝালি বিক্রি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। ডাটার
মুঠা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।
রামপুরা
বাজারের সবজি বিক্রেতা সুজন কবির বলেন, সবজির বাজার ঠিক থাকে না। সকাল-বিকেল দাম ওঠানামা
করে। বেশি দামে কিনলে আমরাও বেশি দামে বিক্রি করি।
শাকের
মধ্যে লালশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা আঁটি, ডাঁটাশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা আঁটি। পুঁইশাক,
লাউশাক প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকা আঁটি। এ ছাড়া
কলমিশাক, পাটশাক ও মুলাশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা আঁটি।