Logo
শিরোনাম

নিউমার্কেটে পানি প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

গত বৃহস্পতিবারের ছয় ঘণ্টার বৃষ্টিতে পানির বাড়তি চাপ ও ময়লা-আবর্জনায় সুয়ারেজের ড্রেন বন্ধ হয়ে রাতেই নিউমার্কেটের প্রায় ৫০০ দোকানের ভেতরে পানি ঢোকে। মার্কেটের মূল কাঠামো সড়কের তুলনায় নিচু অংশে হওয়ায় পরদিন (শুক্রবার) আশপাশের পানিও এসে জমা হয় এখানে। ফলে পানিতে বিভিন্ন কাপড়, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, কুশন, বালিশ, লাগেজ, ক্রোকারিজসহ নানান ধরনের ব্যবহার্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে ১০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের।

নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন।বলেন, যে সময় বৃষ্টি এসেছে তখন অধিকাংশ দোকানই বন্ধ করে সবাই বাড়ি চলে গিয়েছেন। এত বৃষ্টি হবে বা এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে সেটি কেউ ভাবেননি। আবার নিউমার্কেট অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ার কারণে আশপাশের পানিও এখানে জমা হয়েছে। আশপাশের অন্যান্য মার্কেটগুলোর ভেতরেও পানি প্রবেশ করেছিল। আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আনুমানিক প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য দোকানের ডেকোরেশন নষ্ট হয়েছে। এগুলো কাটিয়ে উঠতে যথেষ্ট সময়ও লাগবে।

এ ধরনের সমস্যার রোধে এখন কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে পানি যখন সরানো যাচ্ছিল না তখন মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে সিটি কর্পোরেশনের সাকশন মেশিন এনে পানি অপসারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। এখনো মার্কেটে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। পাশাপাশি আমরা দোকানিদের সতর্ক করেছি যেন কোনোক্রমে ড্রেনে পলিথিন, ময়লা আবর্জনা না ফেলেন।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ ড্রেনে ময়লা ফেললে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, যে সকল দোকান থেকে ময়লা আবর্জনা পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য মার্কেটের ড্রেন এবং চলাচলের রাস্তায় ফেলা হবে, তাদের বিরুদ্ধে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিজ দোকানের ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য দোকানের সামনে বাস্কেট রাখতে হবে। আর মার্কেটের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বাস্কেট থেকে আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করে দেবেন।

সবমিলিয়ে নিউমার্কেটের ভেতরের ড্রেনগুলো সচল রাখলে ভবিষ্যতে আর এমন ঝামেলায় পড়তে হবে না বলেও জানান তিনি।


আরও খবর



ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন জানিয়েছে, দ্রুতই নতুন সামরিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে ইউক্রেনকে।

দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এজন্য প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে। তবে এ প্যাকেজে প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স ব্যাটারি থাকবে না।

প্রতিটি প্যাট্রিয়ট ব্যাটারির (পূর্ণাঙ্গ ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম) দাম প্রায় এক বিলিয়ন ডলার আর প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রের দাম প্রায় চল্লিশ লাখ ডলার।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান বিমান হামলা মোকাবিলায় প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র জরুরি প্রয়োজন যা এখনই জীবন রক্ষা করতে পারে ও করা উচিত

বিবিসিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার যে ৬০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজে স্বাক্ষর করেছেন তারই অংশ হিসেবে এই ছয় বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ইউক্রেনকে।

শিগগিরই আরও এক বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেওয়া হবে।

অস্টিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার সবচেয়ে বৃহৎ নিরাপত্তা সহায়তা প্যাকেজ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে এবং খুব শিগগিরই এগুলো ইউক্রেনকে সরবরাহ করা হবে।

এর মধ্যে আছে বিমান প্রতিরক্ষা যুদ্ধাস্ত্র, কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম এবং গোলাবারুদ (তবে প্যাট্রিয়ট নয়)।

এটা এমন নয় যে শুধু প্যাট্রিয়ট তাদের (ইউক্রেনের) দরকার। তাদের অন্য ধরনের সিস্টেম ও ইন্টারসেপ্টর (ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা বা আকাশেই ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়), বলছিলেন অস্টিন। আমি প্যাট্রিয়ট তৈরির বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক করবো

তিনি জানান, আরও ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভকে শিগগিরই দেওয়া হবে এবং এ নিয়ে ইউরোপীয় অন্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

ইউএস জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল চার্লস ব্রাউন বলেছেন, রণাঙ্গনে গোলার যথাযথ ব্যবহারের যে প্রয়োজনীয়তা ইউক্রেনের সেটি মেটাতে পারবে এবারের এই সহায়তা।

তবে এবারের যে সহায়তা প্যাকেজ তার কিছু অংশ ব্যবহার হবে ইউক্রেনের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্প তৈরির জন্য যাতে তারা নিজেরাই প্রয়োজনমতো গোলাবারুদ উৎপাদন করতে পারে।

অস্টিন আরও বলেছেন, রাশিয়া ইতোমধ্যেই তাদের গোলাবারুদ ও অন্য অস্ত্রের উৎপাদনের পরিমাণ বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে তারা ইরান ও উত্তর কোরিয়ার সরবরাহ সহায়তাও পাচ্ছে।


আরও খবর



খরতাপে পুড়ছে দেশ, বিপর্যস্ত জনজীবন

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

দিনভর বৈশাখ তথা ভরা গ্রীষ্মের প্রখর রোদে যেন সূর্য থেকে মাটিতে আগুন ঝলসে পড়ছে। রাতের বেলায়ও গরমে-ঘামে অস্বস্তি। গতকাল মঙ্গলবার তাপমাত্রার আগের সব রেকর্ড অতিক্রম করেই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দক্ষিণের জনপদ বাগেরহাট জেলার মোংলায় ছিল ৪০.৩ ডিগ্রি সে.। চলতি এপ্রিল মাসে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পারদ ৪২ ডিগ্রি সে. অতিক্রমের পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ।

 বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ (এপ্রিল-মে) মাস উচ্চ তাপপ্রবাহের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। আগের দিন সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ছিল দক্ষিণের জনপদ পটুয়াখালী উপজেলার খেপুপাড়ায় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি। যা উক্ত এলাকায় ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। গতকাল রাজধানী ঢাকায়ও তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে দিনের বেলায় ৩৮.৪ এবং রাতেও ২৮.৬ ডিগ্রিতে উঠে গেছে। অবশ্য গতকাল রাজধানী ঢাকা, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জে হঠাৎ কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির সাথে সাময়িক বৃষ্টি স্বস্তি এনে দেয়। এ সময় ঢাকায় ১২, ফরিদপুরে ২৩, চাঁদপুরে ১৪ ও কিশোরগঞ্জে ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এছাড়া সারা দেশের কোথাও ছিঁটেফোঁটাও বৃষ্টিপাত হয়নি। বৈশাখের শুরুতেই সমগ্র দেশে অসহ্য খরতাপের দহনে দুর্বিষহ পড়েছে জনজীবন। আবহাওয়া বিভাগ আগামী ৭২ ঘণ্টায় সারা দেশে তাপপ্রবাহ আরো বৃদ্ধি এবং বিস্তারের সতর্কবার্তা (হিট এলার্ট) জারি করেছে। টানা কয়েক সপ্তাহের অনাবৃষ্টি-খরা ও উচ্চ তাপমাত্রায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচের দিকেই নামছে দ্রুত। নদ-নদী-খাল, পুকুর-জলাশয়-দীঘি, হাওড়-বাওড়সহ ভূ-উপরিভাগের পানির উৎসগুলো শুকিয়ে গেছে। পানির অভাবে মাঠ-ঘাট-বিল ফেটে চৌচির। তীব্রতর গরম ও খরার কবলে ইরি-বোরো, আম-লিচুর ফলন ব্যাহত হওয়ারর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের ফলে বিভিন্ন জায়গায় হিট স্ট্রোক, শরীরে পানিশূন্যতায় এবং সর্দি-কাশি-জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ নানা রোগব্যাধিতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দিনের প্রখর রোদের তেজে জরুরি কাজ ছাড়া কেই ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না।

গতকাল মঙ্গলবার আবহাওয়া বিভাগ আরেক দফায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা বা হিট এলার্ট জারি করেছে। এতে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, দেশের উপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৬ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায়ও (তিন দিনে) অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। বাতাসে অত্যধিক হারে জলীয়বাষ্প থাকার কারণে গরমের তীব্রতায় অস্বস্তি আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।

গতকাল চুয়াডাঙ্গায় ৪০.৬, মোংলায় ৪০.৩ ডিগ্রি সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ছাড়াও দেশের অন্যত্র উল্লেখযোগ্য দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোর ও পাবনায় ৩৯.৮, খুলনায় ৩৯.৫, রাজশাহীতে ৩৯.৩, ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ায় ৩৯.২, রাঙ্গামাটিতে ৩৯, বগুড়া, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও পটুয়াখালীতে ৩৮.৫ ডিগ্রি সে.।

সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৪১ ডিগ্রিতে উঠে গেছে। দিনের তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও স্থানভেদে এখন ২৭ থেকে ২৯ ডিগ্রির ঘরে। তাতে খরতাপ অসহ্য হয়ে উঠেছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্তসহ আগামী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাট জেলাসমূহের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরো কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।

আগামীকাল  সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ দেশের কিছু কিছু জায়গায় কমে আসতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আগামী শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
এর পরের ৫ দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীর উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। ফলে প্রতিদিনই বাড়ছে তাপমাত্রা। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন গত সোমবার ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে গত কিছুদিন ধরে রাজশাহীতে ৩৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়া। রাজশাহী অঞ্চলে মাঝারি তাপপ্রবাহ আরও কয়েক দিন থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এছাড়া রাতের তাপমাত্রাও দুএক ডিগ্রি কমতে পারে। তবে এ কয়েক দিনের মধ্যে খুব একটা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর আগে তাপপ্রবাহ বাড়ার কারণে রাজশাহী আরও তিন বিভাগে এসব অঞ্চলে হিট অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অধিদফতর।

চুয়াডাঙ্গা জেলা সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। এপ্রিল মাসে এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অধিদফতর। তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। ঈদের পর তাপপ্রবাহের ফলে খেটে খাওয়া কর্মজীবী মানুষ তাদের কর্মে ফিরতে পারেনি। অনেকটা কর্মহীন দিন পার করছে তারা।

চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৭ শতাংশ। এদিন দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৩ শতাংশ। তিনি আরো জানান, এপ্রিল মাসব্যাপী মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে এ আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভবনা রয়েছে।

ভ্যাপসা গরম, আবহাওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়া সকাল থেকে কাজ ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেনা। রিকসা ও ভ্যান এবং ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালকদের যাত্রী হচ্ছে না। এছাড়া গরম আবহাওয়ায় কেউ কাজ না করায় দিন হাজিরায় কর্মজীবী বিপাকে পড়েছে। 


আরও খবর



ঈদে আসছে ‘লিপস্টিক’, প্রকাশ্যে পোস্টার

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

আসন্ন ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে চিত্রনায়ক আদর আজাদ ও চিত্রনায়িকা পূজা চেরি অভিনীত সিনেমা লিপস্টিক। সিনেমাটির আইটেম গান বেসামাল প্রকাশের মাধ্যমে মুক্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সিনেমাটি সেন্সর পেয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক কামরুজ্জামান রোমান। এর আগে প্রকাশ পায় সিনেমাটির রোমান্টিক গান নিন্দুকে। গানটি প্রকাশ্যে আসতেই দর্শকমহলে প্রশংসিত হয়।

এবার এলো সিনেমাটির অফিসিয়াল পোস্টার। পোস্টার প্রকাশ করে আদর আজাদ লেখেন, ঈদ হতে পারে বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার, কিন্তু লিপস্টিক তো ঈদেই আসবে। সবাইকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক।

সিনেমাটির গল্পে দেখা যাবে ঢাকার অদূরে অবস্থিত এক গ্রামের কিশোরী বুচি। চোখেমুখে তার নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন। সে উদ্দেশ্যেই ঢাকায় আসা তার। সব আনুষ্ঠাকিতা প্রায় সম্পন্ন। এখন শুধু নায়িকা হওয়াটাই বাকি। নায়িকা হয়েও যান। এরপরই শুরু হয় অন্য এক জীবন। এতে বুচি চরিত্রে অভিনয় করেছেন পূজা চেরি। তার নায়ক হিসেবে রয়েছেন আদর আজাদ।

চিত্রনায়ক আদর আজাদ সিনেমাটিকে রোমান্টিক থ্রিলার গল্পের সিনেমা বলছেন। তার ভাষ্য, গল্পটি দর্শকদের হৃদয়ে নাড়া দেবে। এর ফাইটগুলোও দুর্দান্ত হয়েছে। পুরোপুরি রোমান্টিক না, বলা যায় রোমান্টিক থ্রিলার। সিনেমাটি দর্শকদের কাছে উপভোগ্য হবে বলে আমার বিশ্বাস।

পূজা চেরি বলেন, অন্ধকার এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমি। কদিন আগেই মাকে হারালাম। যে আমার আমার পৃথিবী। সেই মাই এখন আমার সঙ্গে নেই। এমন সময়ে চারদিকে অন্ধকার লাগছে। ঠিক এই সময়ে লিপস্টিক ঈদে মুক্তির খবর এলো। এখন সিনেমাটা নিয়েই ব্যস্ত থাকব। মা হারানোর শোক কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করব। সবাই আমাকে আর্শীবাদে রাখবেন।

সিনেমাটির গল্পের কথা জানিয়ে এর আগে পূজা চেরি জানিয়েছিলেন, চিত্রনাট্য পড়ার সময়েই গল্পটির প্রেমে পড়ে যান তিনি। চরিত্রটি করতে গিয়ে সেই প্রেম গাঢ় হয় আরও। সাজগোজ প্রেজেন্ট সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে এতে অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর, শহীদুজ্জামান সেলিম, জায়েদ খান প্রমুখ।


আরও খবর



সংশোধনী আসছে কাবিননামায়

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

হাইকোর্টের নির্দেশে মুসলিম বিয়ে নিবন্ধন ফরম বা কাবিননামা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। চলতি মাসেই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে এ নিয়ে।

সংশোধনীতে কাবিননামার ফরম থেকে নারীর জন্য অবমাননাকর কুমারী শব্দটি বাদ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বরের বর্তমান স্ত্রী কতজন, তা-ও জানাতে হবে সংশোধিত ফরমে। এর আগে বরের বিয়ে বা বউ আছে কি না, এমন তথ্য চাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসেই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। এরই মধ্যে খসড়া (সংশোধিত) ফরম প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া নিকাহ রেজিস্ট্রারদের (কাজি) শিক্ষাগত যোগ্যতা আলিম থেকে বাড়িয়ে ফাজিল এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভায় সুবিধাজনক স্থানে নিজ খরচে একাধিক অফিস স্থাপনের পরিবর্তে একটি কাজি অফিস করতে বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) আইন, ১৯৭৪-এর আলোকে ২০০৯ সালে নিকাহনামা বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। নিকাহনামা ফরমে ২৫ ধরনের তথ্য চাওয়া হয়। ফরমের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে কন্যা কুমারী, বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্ত নারী কি না তথ্য চাওয়া হয়।

২০২২ সালে এক রায়ে এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন ও সংশোধন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। খসড়া ফরমে এটি সংশোধন করে কন্যা অবিবাহিত, বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্ত নারী কি না? লেখা হয়েছে।

এছাড়া বর্তমান নিকাহনামা ফরমের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে জানতে চাওয়া হয়, বরের কোনো স্ত্রী বর্তমানে আছে কি না এবং থাকিলে অন্য বিবাহে আবদ্ধ হইবার জন্য বর ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ মোতাবেক সালিশি কাউন্সিলের অনুমতি লইয়াছে কি না?

খসড়া ফরমে এই অনুচ্ছেদে জানতে চাওয়া হয়েছে, বর বিবাহিত, অবিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত কিংবা বিপত্নীক কি না? স্ত্রী থাকিলে কতটি এবং অন্য বিবাহে আবদ্ধ হইবার জন্য বর ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ মোতাবেক সালিশি কাউন্সিলের অনুমতি লইয়াছে কি না? এছাড়া বরের যে কজন স্ত্রী বর্তমান থাকবে, তাদের বিষয়েও তথ্য দিতে হবে নতুন ফরমে।

উল্লেখ্য, কাবিননামা ফরম সংশোধন চেয়ে ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নারীপক্ষ ও মহিলা পরিষদ। এর প্রেক্ষিতে ওই বছরই সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট রায়ে মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে কাবিননামায় ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে থাকা কুমারী শব্দটি লেখা বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করেন।


আরও খবর



শূন্য থেকে কোটিপতি যাত্রী কল্যাণের মোজাম্মেল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব সংগঠনের নামে প্রভাব বিস্তার করে গোপনে নিজে গড়েছেন টাকার পাহাড়। কিনেছেন কোটি টাকার সম্পত্তি। রয়েছে পরিবহন ব্যবসা। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির নামে লাইসেন্সবিহীন সিএনজি অটোরিকশার রমরমা ব্যবসা ছাড়াও সাংবাদিক পরিচয়ে করেছেন অঢেল সম্পত্তি। তিনি মোজাম্মেল হক চৌধুরী। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে অর্থ, সম্পদ ও ব্যবসার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার আদালতে হয়েছে মামলা। জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের ইমামুল্লাহ চরের পূর্ব পাড়ায়। বাড়িতে দুটি ঘর, এর মধ্যে বড় ঘরটির চারপাশে মাটির দেয়াল, ওপরে টিনের ছাউনি। সামনে ছোট দুই কক্ষের একটি ঘর। সেই ঘরের চারপাশে কাঠ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বাঁশের বেড়া। স্বাভাবিক জীবনযাপন করা মোজাম্মেল গত এক যুগ ধরে পরিবহনের যাত্রীদের অধিকার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে সোচ্চার আছেন। যাত্রীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে করেন আন্দোলন। তবে এই যাত্রী কল্যাণ সমিতির আড়ালে গুছিয়েছেন নিজের আখের। বিভিন্ন দপ্তরে তদবির বাণিজ্য, সড়কে নিয়ম ভেঙে সুবিধা আদায়, বিআরটিএর মিরপুরসহ বিভিন্ন অফিসে দালালি, জমি কেনাবেচায় দালালি, নামসর্বস্ব পত্রিকায় সাংবাদিক পরিচয়ে সরকারি বিজ্ঞাপন আদায়, লাইসেন্সবিহীন সিএনজি অটোরিকশার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব পরিচয়ে খাটান প্রভাব।

২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় মোজাম্মেল গ্রেপ্তার হলে ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে তার স্ত্রী রিজু আক্তার চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তার স্বামী (মোজাম্মেল হক চৌধুরী) একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে অল্প টাকা বেতনে কাজ করেন। সেই টাকা দিয়ে সংসার চালানো বেশ কষ্টকর।

মাত্র ৬ মাসে কিনেন কোটি টাকার জমি :মোজাম্মেল হক চৌধুরীর গোপন সম্পত্তির অনুসন্ধান করে প্রতিদিনের সংবাদ। হাতে আসে বেশ কয়েকটি জমির দলিল। তাতে বেরিয়ে আসে কোটি টাকার সম্পত্তির তথ্য। দেখা যায়, মোজাম্মেলের অর্থের বেশিরভাগই ব্যয় হয়েছে জমি ক্রয়ে। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর মৌজায় দেড় কোটি টাকায় ৩৪৫ শতক জমি কিনেছেন মোজাম্মেল। দলিলে মৌজা অনুযায়ী, জমির যে দাম দেখানো হয়েছে প্রকৃতপক্ষে সেই জমির আনুমানিক মূল্য ৮ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নামে রেজিস্ট্রি হওয়া জমির দলিলে দেখা গেছে, মোজাম্মেল চার দফায় ৪টি দলিলের মাধ্যমে হাশিমপুর মৌজায় বিভিন্ন দাগে ৩৪৫ শতক জমি কিনেন। রেজিস্ট্রি দলিলে ওই জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা। তবে স্থানীয়দের দাবি, মোজাম্মেলের কেনা জমির প্রকৃত বাজারমূল্য তার কয়েকগুণ বেশি।

দলিলে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ জুন চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসে মোজাম্মেলের নামে প্রথম দলিলটি রেজিস্ট্রেশন (নম্বর ১৬৬২) করা হয়। ওই দলিলে ১ একর ৬০ শতাংশ (চার কানি) জমি কেনেন মোজাম্মেল। যার দাম দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা। এরপর একই বছরের ২৩ জুলাই ১৫ শতক জমির দ্বিতীয় দলিলটি রেজিস্ট্রি (দলিল নং ১৯০৮) করা হয় মোজাম্মেলের নামে। দলিলে জমির দাম উল্লেখ করা হয় ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

এর মাত্র এক মাসের মাথায় ১৬ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দলিল রেজিস্ট্রেশন (নম্বর ২৪৪১) করা হয় তার নামে। জমির পরিমাণ ৩৭ দশমিক ৫০ শতক। দলিলে এই জমির দাম দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। চতুর্থ দফায় ৮ দিন পর ২৩ সেপ্টেম্বর আরেকটি জমি কিনেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী। রেজিস্ট্রেশন (নম্বর ২৫৩৮) হওয়া জমির পরিমাণ ১৩২ দশমিক ৫০ শতক। জমিটির দাম উল্লেখ করা হয়েছে ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

মোট হিসাবে দেখা যায়, চার দফায় ৪টি দলিলে ৩৪৫ শতক জমি কিনেছেন মোজাম্মেল হক এবং দলিলে এই জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা। অথচ আরো কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি রাখা হয়েছে গোপনে। ঢাকায় নিজেকে পরিচয় দেন গোবেচারা হিসেবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, আগে মোজাম্মেলের অবস্থা ছিল শোচনীয়। ২০০৯ সালের দিকে তৎকালীন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাকারিয়ার পাওনা টাকা না দেওয়ায় মোজাম্মেলকে আটকে রেখেছিলেন। পরে টাকা পেতে স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয়। তারপর থেকে মোজাম্মেলকে এলাকায় দেখা যেত না।

অটোরিকশা নিবন্ধন দালালিতে আয় কোটি টাকা

অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট ছাড়া প্রায় ২ শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলে বাংলাদেশ উন্নয়ন সাংবাদিক সমিতির নামে। প্রতিটি গাড়িতে সাঁটানো হয়েছে সমিতির ব্যানার। ওই ব্যানারে সাংবাদিক মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নাম ও ফোন নম্বর রয়েছে। তবে তিনি কোন পত্রিকার বা অনলাইনের সাংবাদিক সে পরিচয় ব্যানারে উল্লেখ করা হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট ছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলে মোজাম্মেলের ইশারায়। সেখান থেকে মাসিক চাঁদা আসে তার পকেটে। স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু মানুষের সহযোগিতায় রাজ্য গড়েছেন মোজাম্মেল। তার অপকর্মের বিরোধিতার জবাব হিসেবে কয়েকজনকে হুমকি দেওয়ারও তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন সাংবাদিক সমিতির ব্যানারে সেখানেও রয়েছে তার প্রভাব। নিজে কোন পত্রিকার সাংবাদিক তা প্রকাশ না করলেও ওঠাণ্ডবসা মূলধারার সাংবাদিকদের সঙ্গে। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতে সাংবাদিক ঘেঁষা হিসেবেই নিজেকে গড়ে তুলেছেন মোজাম্মেল।

স্থানীয়রা বলছেন, মোজাম্মেল হক চৌধুরী অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। প্রভাবশালী মানুষদের সঙ্গে করেন ওঠাণ্ডবসা। নিজেকে পরিচয় দেন সাংবাদিক ও পরিবহন সমিতির নেতা হিসেবে। কোটি টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপন রাখতেই সাধারণ জীবনযাপন করেন মোজাম্মেল। তবে পাল্টে গেছে তার কথার ধরন।

জানা যায়, টাকার বিনিময়ে মোজাম্মেল সিএনজি অটোরিকশার নম্বর পাইয়ে দেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রভাব খাটিয়ে বিআরটিএতে দালালি করেই তিনি এত টাকার মালিক হয়েছেন। আর সেই টাকায় কিনেছেন কোটি টাকার সম্পত্তি। মোজাম্মেল হক বর্তমানে জমি বেচাকেনা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ঢাকাতে রয়েছে একটি প্রাইভেট কার যার আনুমানিক মূল্য ১২-১৫ লাখ, একটি নোহা গাড়ি যার আনুমানিক মূল্য ২৫ লাখ ও চট্টগ্রামে একটি অত্যাধুনিক প্রাইভেট কার রয়েছে যার আনুমানিক দাম প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাছাকাছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোজাম্মেলের স্ত্রী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার পদে প্রার্থী হয়ে ৩০ ভোট পেয়েছিলেন। মোজাম্মেল নিজেও উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে খুব অল্প ভোট পেয়েছিলেন। তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

সেতুমন্ত্রীকে নিয়ে মন্তব্য, থানায় জিডি ও মামলা

সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্য করার অভিযোগে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন। গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার শাহবাগ থানায় জিডি করেন তিনি।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ২০ বছর ধরে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই। যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।

জিডিতে শ্রমিক লীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফ বলেন, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো দেশের ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ণ ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।

জানা গেছে, মোজাম্মেল হক চৌধুরী সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রকে নিয়ে মন্তব্য করায় জিডির পরে সিএমএ আদালতে মামলা করেছেন মোহাম্মদ হানিফ খোকন। ৫৫১ নাম্বার মামলায় ৫০০, ৫০১ ও ৫০৬ তিনটি ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন মোহাম্মদ হানিফ খোকন। মামলার তদন্তে নেমেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বিস্তর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আমি জমির দালালি করি। ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সেই টাকায় জমি কিনেছি। দেশের কোন আইনে জমি কিনতে মানা আছে নাকি?


আরও খবর