Logo
শিরোনাম

ওষুধের দামে নৈরাজ্য

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৩ জুন ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

রোকসানা মনোয়ার : দফায় দফায় ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে মানুষের। ওষুধের বাড়তি দামের কারণে সংসার খরচের হিসাব নতুন করে করতে হচ্ছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারে ডলারের মূল্য বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে ওষুধ কোম্পানিগুলো জোর করেই ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করছে এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরও অনেকটা বাধ্য হয়ে বর্ধিত দাম অনুমোদন করছে। 

খুচরা পর্যায়ে ওষুধের দাম দেখতে রাজধানীর একাধিক ফার্মেসি ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ৭০ শতাংশ ওষুধই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকে তাদের বাড়তি দামে কিনে আনতে হচ্ছে। ফলে সেই ওষুধ কম দামে বিক্রির কোনো সুযোগ তাদের নেই। 


ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের শীর্ষ ছয়টি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি তাদের উৎপাদিত ২৩৪টি ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। ১০ শতাংশ থেকে শুরু করে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে ওষুধগুলোর দাম। আরও ১০টি প্রতিষ্ঠান তাদের ওষুধের দাম বাড়াতে অধিদপ্তরে আবেদন করেছে।

দাম বৃদ্ধির তালিকায় সবার শীর্ষে রয়েছে অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড, প্রতিষ্ঠানটি গত কয়েকমাসে ৫২টি ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যাস লিমিটেড ৪৭টি ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ৪৬টি ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড বাড়িয়েছে ৩৯টি ওষুধের দাম।

এছাড়াও হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ৩৬টি ওষুধের এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ১৪টি ওষুধের দাম বাড়িয়েছে।

একমাস আগেও ভিটামিনজাতীয় এক পাতা বেক্সট্রাম সিলভার এবং বেক্সট্রাম গোল্ড ট্যাবলেটের দাম ছিল ২৭০ টাকা, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা করে। অর্থাৎ এক পাতা ওষুধেই মাস ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৯০ টাকা। একমাস আগেও একটি প্রোজেস্ট ট্যাবলেটের দাম ছিল ৩০ টাকা করে, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। অ্যান্টিবায়োটিক সেফ-থ্রি (২৫০ মি.গ্রা.) ট্যাবলেটের দাম ছিল প্রতিটি ৩৫ টাকা করে, যা এখন হয়েছে ৪৫ টাকা, ৪০০ মি.গ্রা. সেফ-থ্রি ট্যাবলেটের দাম ছিল প্রতিটি ৪৫ টাকা, যা এখন হয়েছে ৫৫ টাকা, জক্স (১০০ মি.গ্রা.) সিরাপ আগে ছিল ৩৫ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। 

বিক্রেতাদের দেওয়া তথ্য মতে, লরিক্স ক্রিম আগে ছিল ৫৫ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, অ্যান্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট প্রতিপিস দুই টাকা থেকে এখন হয়েছে আড়াই টাকা, জিম্যাক্স (৫০০ মি.গ্রা.) ছিল ৩৫ টাকা পিস, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। এজিসিন (৫০০ মি.গ্রা) আগে বিক্রি হতো ৩৫ টাকা করে, এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, ক্যালসিয়ামের ওষুধ অস্টোক্যাল ডি একমাস আগেও বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকা করে, এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা করে। ভিটামিন ওষুধ নিউরো-বি ট্যাবলেট ২৪০ টাকা ছিল, এর বর্তমান দাম ৩০০ টাকা।


মধ্যবাড্ডা ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকার একটি ফার্মেসিতে গিয়ে দেখা গেছে, দোকানের ভেতরে সারি সারি করে ওষুধের বক্স সাজিয়ে রাখা হয়েছে। জানতে চাইলে ওষুধ বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশি দামে বিক্রির আশায় বড় ব্যবসায়ীরা ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন। যে কারণে বাধ্য হয়েই আমাকে কিছু ওষুধ কিনে এনে রেখে দিতে হয়েছে। নয়তো দু
চারদিন পর আমার ফার্মেসিতেই ওষুধগুলো পাওয়া যাবে না।

দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত দুইমাসে ইবনে সিনাসহ হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি ছাড়া অন্যান্য কোম্পানির প্রায় ৭০ শতাংশ ওষুধেরই দাম বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় যে ওষুধগুলো আছে, সেগুলোরই দাম বেড়েছে। শুনেছি কিছুদিনের মধ্যে আরও কিছু ওষুধের দাম বাড়বে।

বাড্ডা এলাকার মেডিসিন কর্নার নামক একটি ফার্মেসির মালিকের সঙ্গে কথা হলে ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ওষুধের দাম বৃদ্ধি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এমন কোনো মাস নেই, যে মাসে ওষুধের দাম বাড়ে না। গত দুই মাসে প্রায় প্রতিটি ওষুধেরই দাম বেড়েছে। শোনা যাচ্ছে আবারও দাম বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, ওষুধের দাম বাড়া-কমায় কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যখন যার যত খুশি দাম বাড়িয়ে ফেলেছে। সরকার যদি একবার বলে যে দাম বাড়বে, এইটুকু বললেই হয়ে যায়। রাতারাতি সব কিছুর দাম বেড়ে যায়, এমনকি অটোমেটিক বর্ধিত দাম কার্যকরও হয়ে যায়। কারণ দাম মনিটর করার আসলে কেউ নেই।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, ঠিক কী কারণে বেড়েছে এটা আসলে আমরা বলতে পারছি না। এটা তো বলা যাবে না যে তেলের দাম বাড়ায় ওষুধের দাম বেড়েছে, কারণ তেলের সাথে ওষুধের কোনো সম্পর্ক নেই। ওষুধের দাম বাড়ার বিষয়টি তো তেলের দাম বাড়ার আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে বাড়তি দামে ওষুধগুলো বাজারে এসেছে গত কয়েকদিনে।

বাচ্চু মিয়া নামে আরেকজন ওষুধ বিক্রেতা বলেন, আমাদের ছোট দোকান। স্টক তো করে বড় বড় দোকানগুলো। কোম্পানিগুলোও স্টক করে। সিপ্রোসিন ওষুধ পাচ্ছি না। টোফেন সিরাপও কম। খুঁজেও পাচ্ছি না। তার মানে শিগগিরই এগুলোর দামও বেড়ে যাবে। 


ওষুধের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ প্রায় সব কিছুরই দাম বেড়েছে। এখন আবার ওষুধের দাম বেড়েছে, এটি আসলে সাধারণ মানুষের জন্য মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। মানুষ আসলে কোথায় যাবে, কী করবে? মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত মানুষের সংসার চালাতেই তো এখন হাঁসফাঁস অবস্থা। এই অবস্থায় ওষুধের দাম বাড়ালে তো সাধারণ মানুষকে রোগে ভুগে মারা যেতে হবে।

তিনি বলেন, যাদের সক্ষমতা আছে, ব্যাংকে টাকা আছে, তাদের জন্য খুব বেশি সমস্যা হবে না। কিন্তু যাদের নেই, যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের ওষুধের পেছনে বাড়তি খরচ করার উপায় নেই। তাহলে তাদের হয় অন্য জিনিস স্যাক্রিফাইস করতে হবে, চাল-ডাল খাওয়া বন্ধ করতে হবে, বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে হবে, আর নয় তো চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।

সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, একজন চাকরিজীবী হিসেবে আমাদের হয়তো নাভিশ্বাস হচ্ছে, তাহলে এই যে গরিব মানুষ, যাদের নুন আনতেই পান্তা ফুরায়, তাদের অবস্থা কেমন হচ্ছে? মানুষ তো তিনবেলার জায়গায় দুইবেলা খেয়েও কোনোরকম বাঁচতে পারে। কিন্তু কেউ যদি অসুস্থ হয়, আর যদি চিকিৎসা না করা যায় তাহলে তো মরা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।


ওষুধের দাম বৃদ্ধির বিষয়টিকে যৌক্তিক মনে করছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক আইয়ুব হোসেন। তিনি বলেন, ওষুধের দাম ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া কেউই বাড়াতে পারবে না। ফার্মেসিতেও ওষুধের অতিরিক্ত দাম নেওয়া সম্ভব নয়, আবার ওষুধ কোম্পানিও নিজেদের ইচ্ছা মতো দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। এমআরপি হোক বা ইনডিকেটিভ প্রাইস হোক, আমাদের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েই কার্টন বা প্যাকেটে নতুন দাম বসাতে হবে। এর বেশি দামে যদি কেউ বিক্রি করে, তাহলে সে অপরাধ করছে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকেই সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে কার্টনের গায়ে দেওয়া মূল্য দেখতে হবে, এমনকি ওষুধের দোকান থেকে প্রয়োজনে ক্যাশ মেমো নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দাম বাড়াটা আমি মনে করি এখন স্বাভাবিক। দাম কেনই বা বাড়বে না? বর্তমানে বিশ্ব বাজারে সব জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ও সংকট তৈরি হয়েছে। এদিকে ওষুধ কোম্পানিগুলোর কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির একটি বিষয় আছে। সবগুলো বিষয় মিলিয়েই তো ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হয়। আমার মতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ওষুধগুলোর যে পরিমাণ দাম বাড়িয়েছে তা খুবই যৌক্তিক।

ওষুধের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কোম্পানিগুলোর চাপের মুখে থাকে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো ওষুধ কোম্পানিগুলোর জন্যই কাজ করি। তাদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা দেখাই আমাদের মূল দায়িত্ব। এর বাইরেও ওষুধপত্রের দাম নিয়ে রীতিমতো আমরা খবরদারি করি। সুতরাং আমাদের তাদের চাপের মুখে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না।

তবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, প্রতিনিয়তই ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে কোম্পানিগুলো দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে আবেদন করে। দাম বৃদ্ধি না হলে কেউ কেউ উৎপাদন বন্ধের হুঁশিয়ারিও দেয়। আমরা আমাদের পলিসিগতভাবে বিষয়গুলো দেখি। এসব আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি আমরা বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ দাম বাড়িয়েছি। তবে আমাদের এই নির্ধারিত দামের বাইরেও যদি কেউ স্বপ্রণোদিত হয়ে দাম বাড়ায়, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।


দুই মাস আগেও পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার ওষুধে মাস যেত মো. সিরাজুল ইসলামের। এখন ৭ হাজার টাকাতেও যায় না। ওষুধের দাম বাড়ায় প্রতিমাসে এইখাতে খরচ হয় সাত হাজার টাকারও বেশি। এদিকে ডায়াবেটিস, প্রেশারের সাথে সিরাজুল ইসলামের যোগ হয়েছে হার্টের ওষুধ। এর বাইরে প্রতিমাসে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় খরচ হয় আরও দুই থেকে তিন হাজার টাকা। সব মিলিয়ে বর্তমানে চিকিৎসায় তার মাসে খরচ ১০ হাজার টাকা। সিরাজুল ইসলামকে চিকিৎসক জানিয়েছেন, যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিনই নিয়মিত চলবে এসব ওষুধ।

বর্তমানে একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলেও, খুব শিগগিরই চাকরিজীবন শেষ হচ্ছে সিরাজুল ইসলামের। তিনি বলেন, প্রেশারের ওষুধ বন্ধ করলেই প্রেশার বেড়ে যায়, ডায়াবেটিসের ওষুধ বন্ধ হলেই ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। ডাক্তার বলেছে আজীবন ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। এখন না হয় কোনোরকম যোজন-বিয়োজন করে সংসার ও চিকিৎসা চালিয়ে নিচ্ছি, কিন্তু চাকরি শেষ হয়ে গেলে প্রতিমাসে এই টাকা কীভাবে ম্যানেজ করব ?

দফায় দফায় ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে শুধু সিরাজুল ইসলামেরই নয়, নিয়মিত ওষুধে নির্ভরশীল এমন অসংখ্য মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ। তাদের অনেককেই এখন ওষুধ অথবা খাওয়া-পরায় কাটছাঁটও করতে হচ্ছে।   


ওষুধের সাথে পাল্লা দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের পণ্যেরও দাম বেড়েছে। বাজারে অতিপরিচিত গর্ভনিরোধক পিল ফেমিকন একমাস আগেও বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকায়। এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। 

এছাড়াও প্রায় প্রতিটি কোম্পানির কনডমের দাম বেড়েছে। হিরো কনডম আগে বিক্রি হতো ১২ টাকা প্রতি পিস, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। এছাড়াও প্যানথার কনডেমের পূর্বে মূল্য ছিলো ১৫ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা করে।



আরও খবর

তীব্র তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার উপায়

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪




বেড়েছে ঋণ পরিশোধের চাপ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

উন্নয়ন সহযোগীদের দেয়া ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। গত মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরের ৯ মাসে শুধু ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদই ব্যয় বেড়েছে ১১৭ শতাংশ। সরকারের দেয়া উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি ঠিক রাখতে ব্যাপকভাবে বেড়েছে ঋণ নেয়ার প্রবণতাও। অর্থনীতিবিদদের মতে, ঋণ ব্যয়ে দূরদর্শিতা দেখাতে না পারলে সুদের জালে আটকে যাবে দেশের উন্নয়ন।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ খরচ ছাড়িয়েছে ১০০ কোটি ডলার। গত রোববার (২১ এপ্রিল) দেশের বৈদেশিক ঋণের হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ-এ ৯ মাসে বাংলাদেশকে কেবল সুদ বাবদ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করতে হয়েছে ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। গত অর্থবছর এ সুদ বাবদ গুনতে হয়েছে ৪৮ কোটি ৫৯ লাখ ডলার।

স্বাভাবিকভাবেই বছর ব্যবধানে বেড়ে গেছে সুদাসলে ঋণ শোধ বাবদ ব্যয়। ইআরডির তথ্য, গত নমাসে সব মিলিয়ে ২৫৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার সুদ ও আসল গুনতে হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১৭৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বৈদেশিক ঋণের সুদাসল পরিশোধ বাবদ খরচ আগের বছরের ‍তুলনায় বেড়েছে ৮৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে বিভিন্ন ঋণের আসল পরিশোধ করা হয়েছে ১৫১ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।

তবে এ সময়ে ঋণ প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতিও অনেক বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। ৭২৪ কোটি ২১ লাখ ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগীরা। গত বছরের তুলনায় যা ১৩৫ শতাংশের বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৩০৭ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে তৃপ্তির ঢেকুর না তুলে, তা যেন ব্যয় করা হয় লাভজনক প্রকল্পে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে অর্থব্যয়ে স্বচ্ছতা।

অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবীর বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া যাবে না। তাই যতটুকু ঋণ পাওয়া যাবে তার সঠিক ব্যবহার করতে হবে। অপচয় রোধ করতে হবে। না হলে সুদের জালে আটকে যেতে পারে বাংলাদেশের উন্নয়ন।

যে সব প্রকল্প দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করতে সহায়তা করার পাশাপাশি সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, এমন প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ নেয়ার তাগিদ দেন অর্থনীতিবিদরা।


আরও খবর



মেরাগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলল কৃষকের মরদেহ

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

নেত্রকোনা প্রতিনিধি :

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এক কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে পরিবারের দাবী এটি হত্যা। 

রবিবার (৩১ মার্চ) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রকোনা গ্রামে আত্রাখালী নদীর পাড়ের একটি মেরাগাছে

থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুল রহিম(৩০)। নিহত আব্দুল রহিম ওই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে রহিম তার কৃষি জমিতে পানি দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। এরপর রবিবার সকালে পরিবারের লোকজন শুরু করলে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে নদীর পাড়ের একটি মেরাগাছে পরিবারের লোকজন রহিমের ঝুলন্ত দেহ দেখে পান। এ সময় ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে মরদেহ উদ্ধার গিয়ে থানায় নিয়ে আসে ।

নিহত আব্দুল রহিমের চাচা আহমদ আলী বলেন,"আমার ভাই বউ (রহিমের মা) সকালে বাড়ি থেকে খোঁজতে বের হয়ে নদীর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় একটা মেরা গাছে দেখে রহিম ঝুলে আছে । নিজে সে আত্মহত্যা করছে এমন কিছু লক্ষণ তার শরীরের মাঝে ভাসছে না। যে কেউ তারে মেরে ঝুলাইয়া রাখছে । 

এ ব্যাপারে দুর্গাপুর সার্কেলের এএসপি মোহাম্মদ আক্কাস আলী জানান, লাশ সুরতহাল করে মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের পরেই বলা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। 


আরও খবর



আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

তাপদাহে পুড়ছে দেশ। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় নতুন করে সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুরর রশিদ স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে জনজীবনের অস্বস্তি বাড়তে পারে।

এর আগে, গত ১৯ এপ্রিল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে প্রথমবার তিন দিনের হিট এলার্ট জারি করা হয়েছিল।

এদিকে সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী, টাঙ্গাইল, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শ্রীমঙ্গল ও চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এ ছাড়া একই সময়ে ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।


আরও খবর



ঢাকায় প্রথম রিকশা প্রচলনের ইতিহাস এবং দেশে দেশে রিকশার বৈচিত্র্যময় নাম

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

প্রাচীনকাল থেকেই জাপানে রিকশা প্রচলনের কথা জানা যায়। রিকশা শব্দটি জাপানি, যা জিনরিকিশা থেকে আগত। জিন শব্দের অর্থ মানুষ, রিকি অর্থ শক্তি, শা অর্থ বাহন। একসঙ্গে অর্থ দাঁড়ায় মানুষ্য শক্তি দিয়ে চালিত বাহন। 

মূলত উনিশ শতকের শেষে চাকা আবিষ্কারের ধারাবাহিকতায় রিকশার উত্থান। রিকশার প্রচলন প্রথম কে করেন, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। ধারণা করা হয়, ১৮৭০ সাল নাগাদ জাপানের সিমালয়ে মিশনারি হিসেবে কাজ করা মার্কিন নাগরিক জোনাথন স্কোবি এর উদ্ভাবন করেন। 

তখনকার রিকশাগুলো তিন চাকার ছিল না। দুই দিকে দুই চাকা আর সামনের চাকার বদলে একজন মানুষ ঠেলাগাড়ির মতো এটি ঠেলে নিয়ে যেত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জ্বালানি সংকটের কারণে জাপানে রিকশা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেলেও এখন জাপানে রিকশার প্রচলন নেই।

বাংলাদেশে রিকশা জাপান থেকে আসেনি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের পরে বাংলাদেশে রিকশার আগমন। বিশ শতকের শুরুর দিকে অবিভক্ত বাংলার কলকাতায় রিকশার প্রচলন শুরু হয়। একই সময় বার্মার রেঙ্গুনে রিকশা বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। 

ধারণা করা হয় ১৯১৯ বা ১৯২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে রিকশার আগমন বার্মার রেঙ্গুন থেকে চট্টগ্রাম হয়ে। যদিও ঢাকায় এর আগমন ঘটে কলকাতা থেকে। ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জের ইউরোপীয় পাট ব্যবসায়ীরা তাঁদের নিজস্ব ব্যবহারের জন্য কলকাতা থেকে ঢাকায় রিকশা নিয়ে আসেন। অনেকের মতে, ঢাকায় রিকশার লাইসেন্স দেয়া হয় ১৯৪৪ সালের দিকে।

অন্য সূত্র হতে জানা যায়, ঢাকায় প্রথম রিকশা আসে ১৯৩৬ বা ১৯৩৭ সালে। সেই সময়ে চন্দননগর এলাকায় ছিল ফরাসি উপনিবেশ এবং তাদের প্রভাব। তখনই ঢাকার মৌলভীবাজারের দুজন সেখান থেকে নিয়ে আসেন দুটি ‘সাইকেল রিকশা’। এই দুই রিকশার দাম পড়েছিল ১৮০ টাকা। 

ব্যবসার জন্য রিকশা আনা হলেও প্রথমদিকে তা সুখকর হয়নি। ব্যবসা জমাতে বেশ বেগ পেতে হয় তাদের। কারণ অন্যের ঘাড়ে চেপে চলতে লোকেরা প্রথমে লজ্জা পেতো। কেউ রিকশায় চললে রাস্তার ছেলেরা পিছনে ছুটত।মৌলভীবাজারের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে অনেকেই রিকশা আমদানি করতে থাকেন। সেই সময়ে একজন রিকশাচালক দিনে ৩টাকা থেকে সাড়ে তিন টাকা উপার্জন করতেন।

চাহিদা বাড়ছে দেখে ঢাকার মিস্ত্রীরা নিজেরাই রিকশা বানানোর কাজ শুরু করে। যেসব মিস্ত্রীরা আগে সাইকেল সারাইয়ের কাজ করতো তারাই এ কাজ শুরু করে। স্থানীয় মুসলিম এবং বসাকরা এই কাজে পারদর্শী ছিলো। 

অল্প সময়েই তারা নতুন জিনিস আয়ত্ব করে নিতেো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রিকশা তৈরির কাজ ব্যাপকভাবে চলতে থাকে। কারণ তখন বাইরে থেকে রিকশা আনা সম্ভব ছিল না। পরে শুরু হয় ওই রিকশায় বাহারি রঙ করে আকর্ষণীয় করে তোলার কাজ।

১৯৪১ সালে ঢাকায় রিক্সার সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৭টি। ১৯৪৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮১টি। বর্তমানে ঢাকাতেই ৩ থেকে ৭ লাখ রিক্সা রয়েছে। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, ঢাকায় কমপক্ষে ৫ লক্ষাধিক রিক্সা চলাচল করে।

ঢাকার ৪০ শতাংশ মানুষ রিক্সায় চলাচল করে।রিকশার আকার, গঠন বিভিন্ন রকম হওয়ায় দেশভেদে এর ভিন্নতা রয়েছে। চীনে সানলুঞ্চে, কম্বোডিয়ায় সিক্লো, মালয়েশিয়ায় বেকা, ফ্রান্সে স্লাইকো নামে রিকশা অধিক পরিচিত। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এটি পেডিক্যাব নামেও পরিচিত। 


ছবি: জাপানী রিকশা (আনুমানিক ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দ)


আরও খবর



বেহেশতী অনুভূতির মহা সওগাত ঈদুল ফিতর

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

------ আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ:

ঈদ আনন্দ উৎসব। পূর্ণ একটি মাস সিয়াম সাধনার পর আল্লাহর রাব্বুল আলামীনের প্রতি কৃতজ্ঞতায় অভিষিক্ত মুমিন আত্মার আবেগ বিধুর এক বেহেশতী অনুভূতির মহা সওগাত ঈদুল ফিতর। এ মধুর মুহূর্তটিতে একজন মুমিনের হৃদয় যেমন সিয়ামের লব্ধ পবিত্রতায় আলোক উদ্ভাসিত হয়ে উঠে, অপরদিকে সদ্য সমাপ্ত মাহে রমযানের বিদায়ে হয়ে উঠে দুঃখ ভারাক্রান্ত। একটি মাসের সিয়াম সাধনায় রহমত, মাগফিরাত লাভ করার মতো যোগ্য সাধনা হলো কিনা, যতটুকু হয়েছে তাও আবার গ্রহণ যোগ্য হয়েছে কিনা, ইবাদতের এক মৌসুমী মাহে রমযান আবার ভাগ্যে জুটবে কিনা, ইত্যকার ভাবনায় মুমিন অন্তর হয়ে উঠে বিষাদময়। এই আর বিষাদকাতর অবস্থাতেই অশ্রু বিগলিত হয়ে জায়নামায সিক্ত করে প্রতিটি মুমিন মাহে রমযানকে জানায়‘আল বিদা’।

এর পরই আসে হিসাব নিকাশ মিলানোর পালা। “আস-সাওমু লি, ওয়া আনা উজযা বিহী” ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এক মাস সিয়াম সাধনার বদলা-মুজুরী লওয়ার মোবারক আনন্দঘন ঈদের মূহুর্ত। ধনী-গরীব নির্বিশেষে ঈদ জামাতে এক হয়ে—দুহাত উঠিয়ে প্রভুর পক্ষ থেকে আত্মপরিতৃপ্তির সাথে পুরষ্কার গ্রহণ করে সকলে। দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম, সংযম, তিলাওয়াত, যাকাত, সাদকা – প্রভৃতি পেশ করার প্রতিদানে গ্রহণ করে নেয় রাব্বুল আলামীনের অপার সন্তুষ্টি। আর এরই নাম হলো ঈদ, এই হলো মুমিনের প্রকৃত আনন্দ উৎসব। এটাই হলো আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ করার শরীয়ত সম্মত প্রক্রিয়া।

বস্তুতঃ এই শরীয়ত সম্মত আর্দশ জীবনের সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়িত করার শপথ নবায়ন করার বার্ষিক অনুষ্ঠান হলো ঈদ উৎসব। তাই যুগপত এই ঈদের প্রভাতে প্রতিটি মুমিনের মুখেই ফুটে উঠে তৃপ্তির হাসি।

পক্ষান্তরে ভোগবাদী সভ্যতার অনুকরণে অর্ধ রমযান অতিক্রান্ত হতে না হতেই শুরু হয় ঈদের সাজ-সরঞ্জাম-জুতো, জামা, শাড়ী অলংকার ও প্রসাধনের বাজারে প্রচণ্ড ভীড়। নূতন নূতন ছায়াছবি মুক্তির সমারোহ, ভিডিও কর্ণারগুলোর অমার্জিত প্রচার, আর খাওয়া-দাওয়ার রকমারী উদ্যোগ।

অথচ সিয়াম সাধনায় শরীক না হয়ে এসবের মধ্যে সকল শক্তি নিয়োগ করে মার্কেটে মার্কেটে ছুটে বেড়ানো বা ইত্যাকার ভোগসর্বস্ব যে সমস্ত ইহ হল্লা হট্টগোল ঈদ উৎসব নামে অভিহিত করা হয়, এমন ঈদের সংগে কোন মুমিনেরই পরিচিত হওয়ার অবকাশ নেই। এ গুলো ইহুদী খৃষ্টান বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ব্যর্থ অনুকরণ ছাড়া আর কিছুই নয়।

এক কথায়—যারা রোযা রাখেনি, যারা আল্লাহর বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, কুরআনকে যারা সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মনে করেনা এবং যে রোজাদারের, যাকাত দানে অনীহা, পরশীর হক অস্বীকার করে, এ সমস্ত লোকদের কারো ঈদের জামাতে শরীক হওয়ার অধিকার নেই। ঈদের জামাতে তারা অনভিপ্রেত। তারা অবাঞ্ছিত। মুমিনের কাতারে তারা অন্যায় অনুপ্রবেশ কারী। এদের জৌলুষ, এদের বিত্তবৈভবের নগ্ন প্রদর্শনী, উদ্ধত অহংকার, এদের পশুসুলভ লালসার জিহ্বা এড়িয়ে চলা প্রতিটি ঈমানদারের জন্য একান্ত অপরিহার্য।


আরও খবর