Logo
শিরোনাম

শিশু সন্তানকে হত্যা' যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক থাকা সৎমা আটক

প্রকাশিত:রবিবার ২৭ আগস্ট ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর মুরাদ হোসেন (১১) নামে এক শিশু সন্তান কে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী শিশুটির সৎমা অঞ্জনা বেগম (২৮) কে ঢাকা শহর থেকে আটক করেছে নওগাঁর মান্দা থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামীকে রবিবার বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে নওগাঁ জেলা কারাগাড়ে পাঠিয়েছেন পুলিশ।

শনিবার বিকালে ঢাকা সাভারের আশুলিয়া এলাকার হাকিম মার্কেট এর জনৈক বশির মিয়ার বাড়ী থেকে পলাতক থাকা আসামীকে গ্রেফতার পূর্বক নওগাঁতে নিয়ে আসেন পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত সাজাপ্রাপ্ত আসামী অঞ্জনা বেগম হলেন, নওগাঁর মান্দা উপজেলার বিল করিল্যা গ্রামের আঃ রাজ্জাকের দ্বিতীয় স্ত্রী। তবে সে বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা এলাকার রতন আলী খান নামে এক যুবককে বিয়ে করে আত্মগোপন করে ঘড় সংসার করছিলেন।

থানা সূত্রে জানা যায়, শিশু মুরাদ হত্যা কান্ডের মূল আসামী অঞ্জনা বেগম রাজ্জাকের ২য়' স্ত্রী। রাজ্জাকের প্রথম স্ত্রী রাজ্জাক এর সংসার ও সন্তান ছেরে অন্যের হাত ধরে চলে যাবার পর রাজ্জাক তাকে ২য় বিয়ে করে ঘর সংসার করার এক পর্যায়ে প্রথম পক্ষের শিশু সন্তান মুরাদ সৎ মায়ের কাছে জীবনের কাল হয়। এরপর ২০১৭ সালের ১১ জনু সৎমা অঞ্জনার হাতে নিষ্পাপ শিশু মুরাদ নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হোন। 

তাকে হত্যার পর প্লাস্টিকের ''পোল্টি মুরগীর খাবারের'' বস্তায় ভরে বাড়ি থেকে অনুমান ১৫০ ফিট দূরে নিয়ে বস্তা বন্দি অবস্থায় শিশু মুরাদ এর মৃতদেহ ফেলে রাখা হয়। 

এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে সে সময় মান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকেই অভিযুক্ত অঞ্জনা ঝিনাইদহ শৈলকুপার এলাকার রতন নামে এক যুবককে গোপনে বিয়ে করে আত্মগোপনে ছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় বিজ্ঞ আদালত তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড রায় দেন।

সত্যতা নিশ্চিত করে এব্যাপারে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামীর অবস্থান সনাক্ত করনের পরই জেলা পুলিশ সুপার মহোদয় এর নির্দেশনায় মান্দা থানার এস আই নান্নু মিয়ার নের্তৃত্বে চৌকস টিমকে ঢাকাতে পাঠানো হয়। চৌকস টিম ঢাকা সভারের আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার পূর্বক অঞ্জনাকে নওগাঁতে আনার পরই রবিবার সকালে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে নওগাঁ জেলা কারাগাড়ে প্রেরণ করা হয়েছে।


আরও খবর



এবার কানাডার ৪১ কূটনীতিককে সরিয়ে নিতে বলল ভারত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

কানাডার ৪১ জন কূটনীতিককে সরিয়ে নিতে বলেছে ভারত। আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে এসব কানাডিয়ান কূটনীতিককে সরিয়ে নিতে হবে। মূলত কানাডার খালিস্তানপন্থি শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতীয় এজেন্টদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সামনে আসার পর উত্তর আমেরিকার এই দেশটির সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক উত্তেজনা চলছে।

আর এর মধ্যেই ভারতের পক্ষ থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিতে বলা হলো। সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে ৪১ জন কূটনীতিককে অবশ্যই প্রত্যাবাসন করতে হবে বলে কানাডাকে জানিয়ে দিয়েছে ভারত। মঙ্গলবার ফিনান্সিয়াল টাইমস এই তথ্য সামনে এনেছে।

গত জুন মাসে কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এবং কানাডিয়ান নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যায় ভারতীয় সরকারের এজেন্টদের ভূমিকা ছিল বলে কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ সামনে আনার পর ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক গুরুতরভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

নিহত নিজ্জার নয়াদিল্লির চোখে সন্ত্রাসী হলেও তার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগকে অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত।

এই পরিস্থিতিতে কানাডার ৪১ জন কূটনীতিককে সরিয়ে নিতে বলেছে ভারত। বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে উদ্ধৃত করে দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস বলেছে, ১০ অক্টোবরের পর থেকে যাওয়া কূটনীতিকদের কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা বা নিরাপত্তা প্রত্যাহার করার হুমকি দিয়েছে ভারত।

সংবাদপত্রটি বলেছে, ভারতে কানাডার ৬২ জন কূটনীতিক রয়েছে এবং ভারত বলেছে- কানাডিয়ান কূটনীতিকদের মোট এই সংখ্যা থেকে ৪১ জন কমানো উচিত।

অবশ্য এ বিষয়ে ভারতীয় এবং কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর এর আগে বলেছিলেন, কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের জন্য সহিংসতার পরিবেশ এবং ভীতি প্রদর্শনের পরিবেশ রয়েছে। এছাড়া উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর উপস্থিতি নয়াদিল্লিকে হতাশ করেছে বলেও সেসময় জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কানাডার শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারত সরকারের দিকে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সেসময় পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা শিখ নেতা নিজ্জারের হত্যার সাথে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে।

কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের একটি শিখ মন্দিরের বাইরে গত ১৮ জুন গুলি করে হত্যা করা হয় ৪৫ বছর বয়সী হরদীপ সিং নিজ্জারকে। হাউস অব কমন্সের সভায় প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, কানাডার মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে হত্যার পেছনে ভারতীয় এজেন্টরা জড়িত থাকতে পারে বলে বিশ্বাস করার মতো বিশ্বাসযোগ্য কারণ রয়েছে।

ভারত অবশ্য দীর্ঘদিন ধরে কানাডার শিখ সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এছাড়া ভারত ২০২০ সালে নিজ্জারকে সন্ত্রাসী হিসাবে ঘোষণা করে এবং নিজ্জারকে হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর আনা অভিযোগটিকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি।

এছাড়া ভারতের বিরুদ্ধে ট্রুডোর এই অভিযোগ সামনে আসার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনার একপর্যায়ে উভয় দেশ একে অপরের একজন করে কূটনীতিককে বহিষ্কার করে এবং পরে কানাডিয়ান নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা স্থগিত করে ভারত।


আরও খবর

পাকিস্তানি ১৬ ভিক্ষুক আটক

সোমবার ০২ অক্টোবর 2০২3




অক্টোবরেই ট্রেন যাবে কক্সবাজার

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর 20২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ০২ অক্টোবর 2০২3 |

Image

রোকসানা মনোয়ার : নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ইতোমধ্যে ৯৫ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি পাঁচ কিলোমিটার রেললাইন অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে। এরপর অক্টোবরের মাঝামাঝি এই রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের জন্য পটিয়া স্টেশনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ছয়টি বগি ও দুই হাজার ২০০ সিরিজের একটি ইঞ্জিন। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন।

এ প্রসঙ্গে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ৯৫ কিলোমিটারে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। বাকি কাজ আগামী ছয় মাসের মধ্যে শেষ হবে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে রেললাইন দিয়ে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হবে। অক্টোবরের মাঝামাঝি এ রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এরপর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে।

প্রকল্প কর্মকর্তা আরও বলেন, এ প্রকল্পে ৩৯টি বড় সেতু, ২৪২টি কালভার্ট ও ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৯টি রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে ছয়টি স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাকি তিনটি স্টেশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। সব কটি স্টেশনে থাকবে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম।

পটিয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, গত ১ আগস্ট থেকে কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ শুরু হয়। ৭ আগস্ট থেকে ব্রিজ দিয়ে ট্রেন এবং যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগেই ৬ আগস্ট ছয়টি নতুন বগি এবং একটি দুই হাজার ২০০ সিরিজের ইঞ্জিন আনা হয়। যেগুলো রাখা আছে পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনের সামনে।

তিনি আরও বলেন, কোরিয়া থেকে আনা এসব বগিতে ৬০ জন করে যাত্রী বসতে পারবেন। শিগগিরই এ রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে শুনেছি।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, রেললাইনের কাজ শেষ পর্যায়ে। অক্টোবরেই আমরা পরীক্ষামূলক ট্রেন চালাবো। তবে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চালাতে আরও দুই-তিন মাস সময় লাগবে। প্রাথমিকভাবে এ রুটে দুই জোড়া ট্রেন চলবে। পর্যায়ক্রমে যাত্রীর চাহিদা বিবেচনা করে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। ১০০ কিলোমিটার গতিতে এ রুটে ট্রেন চলাচল করবে।

প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার প্রায় সাত বছর পর ২০১৮ সালে ডুয়েল গেজ এবং সিঙ্গেল ট্র্যাক রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৮৫২ কোটি টাকা।

২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এতে অর্থায়ন করেছে এশিয়ান ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৯২ কিলোমিটার অংশে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।


আরও খবর

সন্ত্রাসীদের তালিকা করছে র‌্যাব

মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩




রাণীনগরে মাদক ব্যবসায়ী দুইজন আটক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ)  : নওগাঁর রাণীনগরে অভিযান চালিয়ে হেরোইন ও ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী দুইজনকে আটক করেছে থানাপুলিশ । সোমবার সন্ধ‍্যায় পৃথক অভিযানে তাদেরকে আটক করা হয়। এঘটনায় রাতেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে মঙ্গলবার আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।

রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন,সোমবার সন্ধ‍্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার চকাদিন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের ছেলে শরিফ উদ্দীন মন্ডলকে দুইগ্রাম হেরোইনসহ আটক করা হয়। এছাড়া একই এলাকায় অভিযান চালিয়ে চকমুনু গ্রামের বিদ্যুত শেখের ছেলে রাব্বি শেখ (২৫) কে নেশাজাতীয় আট পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ আটক করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে রাতেই মাদক মামলা রুজু করে মঙ্গলবার আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।


আরও খবর



দুর্গাপুরে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের স্মারকলিপি প্রদান

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

রিফাত আহমেদ রাসেল :

সারাদেশে ন্যায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দরা। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। 

এই সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড উপজেলা শাখার সভাপতি আনিসুল হক সুমনের নেতৃত্বে অন্যান্য মাঝে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ বজলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মতি মিয়া, হাবিব মিয়া, মেহেদী হাসান তোফাজ্জল, শুক্কুর মিয়া সহ সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। 

স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেছেন, আদি সংবিধান মোতাবেক আদালতের নির্দেশনা প্রতিপালনে চাকরিতে সর্বক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহল ও প্রয়োগ করা। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল করা। ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংবিধানে সংশোধনের মাধ্যমে সামরিক শাসন আমলের সকল আদেশ নির্দেশ আইনে বাতিল হয়েছে। তাই ১৯৭৬ এবং ১৯৮৫ সালে যথাক্রমে ২০% ও ৫% জেলা কোটা কমানো সংবিধানের (অনুচ্ছেদ ১০) পরিপন্থী তদ্ররুফ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ। ১ম ও ২য় শ্রেণীতে কোটা প্রয়োগ না করাও সংবিধান পরিপন্থী। বঙ্গবন্ধু সরকার ঘোষিত ১৯৭২ এ প্রদত্ত ৮০% জেলা (আঞ্চলিক) কোটা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সাংবিধানিক বিধি বিধান প্রতিপালনে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানায় অন্যথায় এটা সংবিধান লঙ্ঘন বা পরিপন্থি

কার্যক্রম হিসেবে পরিগনিত হবে বলে মনে করছেন সংগঠনের নেতা কর্মীরা। এছাড়াও বিভিন্ন দাবী দাওয়া স্মারকলিপির মাধ্যমে তুলে ধরেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। একই দাবিতে সারাদেশে মহানগর, জেলা, উপজেলা এবং সংগঠনটি বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিটের সদস্যরা এই স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। 


আরও খবর



মহান সাধক সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল-হাসানী (রহ.)

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর 20২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

অধ্যাপক ড. এস. এম. রফিকুল আলম : আল্লাহ তাআলা মানুষকে পৃথিবীতে খলিফা হিসাবেই প্রেরণ করেছেন। মানুষের প্রতি আল্লাহর খলিফা বিশেষণের মাহাত্ম্য যথাযথ অনুধাবন না করার কারণে আল্লাহর গুণ ও মানুষের যোগ্যতার মধ্যকার ব্যবধান একাকার করে গোলিয়ে ফেলি এবং কথায় কথায় শিরক-বিদআতের ফতোয়া দিই। আল্লাহর নিরানব্বই বা ততোধিক গুণবাচক নাম যেমন, সত্য ও বাস্তব; সে গুণবাচক নামের প্রতি আমাদের ঈমান যেমন যথাযথ থাকা আবশ্যক তেমনি মানুষ নামক সৃষ্ট জীব দুনিয়াতে আল্লাহর খলিফা (প্রতিনিধি) সেটাও সত্য। খলিফা হিসাবে দুনিয়াতে মানুষকে মেনে নেয়াও ঈমানের অংশ।

ইবলিশ মানুষকে দুনিয়াতে খলিফা হিসাবে মেনে সিজদা না করাতে অভিশপ্ত হয়েছে।
আল্লাহ কে? আল্লাহপাক হচ্ছেন তাঁর নিরানব্বই বা ততোধিক গুণে অসীম শক্তির অধিকারী। আল্লাহর পবিত্র জাত ও গুণের অস্তিত্বকে অকপটে সন্দেহাতীতভাবে স্বীকার করা একজন মুমিনের জন্য ঈমানের প্রধান শর্ত। কোন মানুষ আল্লাহর পবিত্র জাত কিংবা গুণের কোন একটিকে অস্বীকার বা সন্দেহ করলে তাকে ঈমানদার বা বিশ্বাসী বলা যাবেনা। মানুষ সৃষ্টি করা না হলে কিন্তু এ বিশ্বাসের প্রতিফলন সম্ভব ছিলনা। কেননা আল্লাহ নিরাকার, আল্লাহকে দেখা, কল্পনায় চিত্রায়িত করা, তাঁর গুণের বাস্তব চিত্রায়ণ মানুষের পক্ষে সম্ভব ছিলনা। নিরাকার আল্লাহর অস্তিত্ব বা গুণ কোনটাই মানুষের পক্ষে বাস্তবে বিশ্বাস করাও সম্ভব ছিলনা; যদিনা সে গুণ খলিফা তথা
মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি। খলিফা বা প্রতিনিধির কাজ কি? পৃথিবীতে আল্লাহর কাজের আন্জাম দেয়াই প্রতিনিধির কাজ।

পৃথিবীতে আল্লাহর কাজ কি? আল্লাহর নিরানব্বইটি গুণই আল্লাহর কাজ। আল্লাহর খলিফাগণ পৃথিবীতে তাঁর নিরানব্বই গুণের প্রতিফলন ঘটাবে।

তাহলে কি তারা আল্লাহ হয়ে গেল ? নাউযু বিল্লাহ। খলিফা আল্লাহ হতে যাবেন কেন? খলিফা তো সৃষ্ট আলাদা সত্তা। খলিফার মধ্যে আল্লাহর গুণের প্রতিফলন তো আল্লাহ প্রদত্ত যোগ্যতা। যিনি যোগ্যতা দান করেছেন কৃতিত্বতো তাঁরই। খলিফার মধ্যে আল্লাহ গুণের প্রতিফলন তো কৃত্রিমভাবে। গুণের মৌলিকত্বতো আল্লাহর সাথে। সুতরাং বান্দার মধ্যে আল্লাহর গুণের বা আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিফলন মানলে বা বিশ্বাস করলে আল্লাহর সাথে বান্দাকে শরিক করা হবেনা বরং বান্দাকে আল্লাহর প্রকৃত খলিফা হিসাবে স্বীকার করা হবে।


খলিফার অর্থ বা সংজ্ঞার ব্যপারে আমাদের স্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণে খলিফা ও আল্লাহর মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয় করার যোগ্যতা অর্জিত হয়না। যার ফলে বান্দা কখন শিরক করে আবার কখন ইবাদত করে তা আমাদের বোধগম্য হয় না। তাই আমরা যখন তখন, যাকে তাকে, যেখানে সেখানে, শিরকের ফতোয়া দিয়ে ফেলি। সুতরাং যে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকবে না সে বিষয়ে সাবধানে কথা বলা উচিত। আল্লাহর গুণের প্রতিফলন মানুষের মধ্যে অস্বিক্বার করলে দুনিয়া অর্থহীন হয়ে যাবে। মানুষ সৃষ্টির আসল রহস্যই অস্পষ্ট থেকে যাবে। মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। আল্লাহ প্রত্যেক মানুষকে আল্লাহর গুণের প্রতিফলনের যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এ কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। তাই কোন মানুষের মধ্যে আল্লাহর কোন গুণের প্রতিফলন দেখার বর্ণনা দিলেই তিনি শিরক করেছেন বলে ফতোয়া দেয়া জগন্য অন্যায়। বরং দেখা উচিৎ তিনি কি ঐ মানুষকে আল্লাহর আসনে সমাসিন করছেন নাকি তাকে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে স্বীকার করেই তাঁর গুণের বর্ণনা দিচ্ছেন। তাই যদি হয়, তাহলে তিনি তো আল্লাহর প্রিয় বান্দার খিলাফতকে স্বীকার করেছেন মাত্র। এতে তো তার ঐ বান্দার দোষের কিছু নেই। বরং তা আল্লাহ ও আল্লাহর বান্দার যোগ্যতা ও উদ্দেশ্যকে তুলে ধরেছেন।


এ তো গেলো আল্লাহর খিলাফত। এ খিলাফতের আহাল দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর সব মানুষ।
এখানে প্রশ্ন আসতে পারে, “আল্লাহর খিলাফতও আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফত কি এক? নাকি ভিন্ন ভিন্ন? এর উত্তর হচ্ছে, ভিন্ন ভিন্ন। কেন না, আল্লাহর খলিফা পৃথিবীর সব মানুষ- যাদের মধ্যে আল্লাহর নিরানব্বই গুণের প্রতিফলন আছে। এরা সবাই কিন্তু, আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফতের অনুসারী বা ওয়ারিশ নন। শুধুমাত্র তারাই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খলিফা (প্রতিনিধি, উত্তরাধিকার-ওয়ারিশ) হবেন। যিনি আল্লাহকে ইলাহমেনে আনুগত্য স্বীকার করে, নিজের স্বাধীন সত্তাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার আনিত দ্বীনের প্রতি সোপর্দ করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি তাঁর মধ্যকার আল্লাহ প্রদত্ত খিলাফতকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফতের প্রতি সোপর্দ করেছেন, কেবল মাত্র তার খিলাফতই আল্লাহর নিকট গৃহিত হবে, অন্যথায় হবে না। আমাদের সমাজের ওলামায়ে কিরামগণ যে কোন কারণে হউক না কেন আল্লাহর খিলাফত ও রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফত কে একাকার করে ফেলার কারণে, কথায় কথায় শিরকের ফতোয়া দিয়ে থাকেন। এটা এক ধরনের অজ্ঞতা বৈ কিছু নয়।


আল্লাহর খিলাফত আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবার উপায় কি? সব মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর খলিফা হলেও সবার খিলাফত কি আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য? এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, না? সবার খিলাফত আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। তা হলে কোন্ খিলাফত আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য, আর কোন্ খিলাফত নয়? এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, আল্লাহর খিলাফত যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফতের আলোকে হবে, তখন তাঁর খিলাফত (প্রতিনিধিত্ব) আল্লাহর নিকট গৃহিত হবে, অন্যথায় হবেনা। যাঁরা আল্লাহর খলিফা হয়ে আল্লাহর রাসূলের খিলাফতের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন আমার আজকের আলোচ্য ব্যক্তি হচ্ছেন তাদের অন্যতম।


নিম্নে হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজের উপর কিঞ্চিত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হলো। আমাদের হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজের আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার সাধারণ কোন খলিফা নন। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার উত্তরাধিকারও বটে। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার বংশধরদেরও একজন। তিনি সাধারণ অর্থে আল্লাহর রাসূলের খলিফা ছিলেন না; তিনি তাঁর যুগে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার আশেক ও জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের একনিষ্ঠ খাদেম হিসাবে বলিষ্ট ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি আল্লাহর রাসূলের ক্বদম ব-কদম অনুসারী ছিলেন। তিনি একমাত্র ওলি যিনি জাতিসংঘ নামক বিশ্ব দরবারে প্রিয়নবী মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার শানকে সম্মানের সাথে প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশে মিলাদুন্নবী উদযাপনের মত সাহসী কর্মসূচি বা বাস্তবায়ন করেছিলেন। তিনি বিশ্বব্যাপী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা-বিশ্বাসকে বিশ্ব মুসলিম জনতার মধ্যে প্রতিস্থাপন করার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি তাঁর যুগে মুজাদ্দিদের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।


তিনি আচরণের দিক থেকে অসম্ভব বিনয়ী, ভদ্র ও নম্র ছিলেন। তিনি হুবহু রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার পদাংক অনুসরন করতেন। তিনি মেহমানদারীতেও আল্লাহর রাসূলের সুন্নাতের অবিকল আদর্শ ছিলেন। তিনি নিজের উপর অন্যকে প্রাধান্য দিতেন। তাঁর চেহারা মোবারক ও আচরণ দেখলে আল্লাহর রাসূল ও তাঁর সাহাবীগনের কথা স্মরণ হয়ে যেত। তাঁর সুঠাম উজ্জ্বল দেহ, নূরানী চেহারা, পরনে ধবধবে সাদা লুঙ্গী বা পাজামা, গায়ে সাদা পাঞ্জাবী, মাথায় টুপী, ইত্যাদি মিলিয়ে যেই ব্যক্তিত্তের প্রকাশ ঘটত, তা সত্যিই অভাবনীয়। তাঁর পৌরুষ দীপ্ত ও বীরোচিত আচরণ যে কোনো ধর্মের কিংবা দলের- মতের লোককে কাবু করে ফেলত। তাঁকে দেখা মাত্র মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সবাই মাথা নত করে ফেলত। ভক্তবৃন্দ সুবোধ বালকের মত শান্তশিষ্ট নিবেদিত প্রাণ হয়ে যে কোনো হুকুম কালবিলম্ব না করে তামিল করতে কোনো রকম কুণ্ঠাবোধ করতো না। হুজুরের যে কোনো নির্দেশ তামিল করাকে নিজের জন্য সৌভাগ্য মনে করত।


তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত অকর্ষণ ক্ষমতা, উষ্ণ হে প্রবণতা, দায়িত্ববোধ, উন্নত জীবনাদর্শ, সেবামূলক মনোভাব, জ্ঞানপিপাসু মন, ভক্ত ও শাগরিদদের প্রতি মমত্ত, নৈতিক আদর্শ, মানষিক সুস্থতা, ধৈর্য, দৃঢ়চেতা মনোভাব, সমাজ সচেতনতা, ব্যক্তিগত অধিকার ও মর্যাদায় বিশ্বাস, নির্ভীকতা, দল মত জাতি নির্বিশেষে সবার প্রতি স¤প্রীতি ও সদ্ভাব সারা জীবন অক্ষুণœ ছিলো। তাঁর খোদাভীরুতা, রসুল-প্রেম, ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন বলয়ে নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিক সফলতা দেশ, জাতি ও আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তির দিশা হিসাবে ভূমিকা পালন করত। তাঁর উপস্থিতি যে কোনো মজলিশ বা অনুষ্ঠানকে নক্ষত্রের মত উদ্ভাসিত ও আলোকিত করত।


অনেক সময় আল্লাহ তাআলা তাঁর বিশেষ বান্দাকে দিয়ে বিশেষ কোন গুণের বিশেষ প্রতিফলন ঘটিয়ে ঐ বান্দার মর্যাদাকে বাড়িয়ে দেন। উদ্দেশ্য ঐ বান্দার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করা। যখন কোন মকবুল বান্দার মধ্যে এ ধরনের কোন গুণের অস্বাভাবিক প্রতিফলন ঘটে তখন সাধারণ বান্দার কাজ হচ্ছে, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা বাড়িয়ে তাকে অনুসরণ করা। তাঁকে অবহেলা বা তাঁর সমালোচনা করা নয়। এতে আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হন। কারণ কোন বান্দার অস্বাভাবিক ঘটনা; কারামাত, অলৌকিক ঘটনা আল্লাহ তাআলার ইচ্ছাতে ঘটে। এর দ্বারা হিদায়ত উদ্দেশ্য। গোমরাহী নয়। আমরা হেদায়তের পথেই থাকি। গোমরাহীর পথে নয়। ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসারীরা গোমরাহীর পথকে বেছে নিয়েছে। আমরা যেন তা না হই।


বান্দা যখন তাঁর দাসত্ব দ্বারা আল্লাহর অধিক নিকটে হয়ে যান তখন তাঁকে স্বাভাবিকতার ঊর্ধ্বে নিয়ে গিয়ে তাঁকে দুনিয়বাসীর জন্য মডেল (আদর্শ) হিসাবে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে তাঁকে দিয়ে তাঁর (আল্লাহর) শক্তির বিশেষ প্রদর্শন ঘটান। উদ্দেশ্য তাঁকে দুনিয়াবাসীর নিকট বিশেষ মর্যাদার আসনে আসীন করানো এবং অন্য বান্দাগণকে আল্লাহর দাসত্বে তাঁর অনুগত ও অনুসারী বানানো। অদূরদর্শিরা এটা গ্রহণে ব্যর্থ হয়। ফলে তারা তাঁর অনুগত হতেও বঞ্চিত হয়। অবশ্য কিছু সুবিধাবাদী এর জন্য দায়ী। যারা নিজেদের দুনিয়াবী সুবিধার জন্য আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের এ ধরণের অলৌকিক ঘটনাকে ব্যবহার করে নিজেদের দুনিয়াবী সুবিধা আদায় করে নেয়। তাঁদের ব্যাপারে সাবধান হওয়া প্রয়োজন আছে।
হযরত শাহ্সূফী সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজ অন্তরদৃষ্টির অধিকারী ছিলেন। তিনি একজন মানুষকে দেখে তাঁর অন্তরের অবস্থা বুঝে নিতেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও গ্রহণ করতেন। অলি-আল্লাহগণের অন্তরদৃষ্টি সম্পর্কে আল্লাহর রাসূলের একটি পবিত্র হাদীস নিরূপ: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামা তাঁর পবিত্র যবানীতে বলেন, উচ্চারণ: ইত্তাকু ফিরাসাতিল মুমিনি ফায়িন্নাহু ইয়ানজুরু বিনুরিল্লাহি

 

(অর্থাৎ, তোমরা মুমিনের অন্তর দৃষ্টিকে ভয় কর কেননা তাঁরা আল্লাহর নূর দ্বারা দৃষ্টিপাত করেন।) পুরা হাদিছটি নিম্নরূপ:


উচ্চারণ: আন আবি সাঈদিল খুদরী ক্বালা ক্বলা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লামা ইত্তাকু ফিরাসাতিল মুমিনি, ফায়িন্নাহু ইয়ানজুরু বিনূরিল্লাহি ছুম্মা ক্বারা আ- ইন্না ফী জালিকা লাআইয়াতিল লিল মুতা ওয়াস সিমিন। অর্থাৎ, হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামা ইরশাদ করেছেন, তোমরা মুমিনগণের অন্তরদৃষ্টিকে ভয় কর, কেননা তাঁরা আল্লাহর নূর দ্বারা দৃষ্টিপাত করেন। ইমাম তিরমিযী রহমাতুল্লাহি তায়ালা আলাইহি তাঁর সহীহ গ্রন্থের ৩১২৭ নম্বরে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন।


আমার আলোচনার সাথে সংশ্লিষ্ট ছোট্ট একটি ঘটনার বিবরন দিয়ে আমার লেখার ইতি টানবো। চট্টগ্রামস্থ আল্লামা রুমী সোসাইটির একটি তাসাউফের প্রোগ্রামে হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজ উপস্থিত ছিলেন। সময়টি ছিল রমজান মাস। উক্ত তাসাউফের প্রোগ্রামে অন্যান্য সদস্যদের সাথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রফেসর ড.গিয়াসুদ্দীন তালুকদারও উপস্থিত ছিলেন। তিনি হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজকে কৌতুহলের বসে ভালোভাবে অনুধাবন করছিলেন।

 

 হুজুর কেবলা সাধারণ ইফতারী গ্রহণে মাজুর ছিলেন বিধায় তিনি নিজ বাসা থেকে নিজের ইফতারী নিয়ে এসেছিলেন। তাও আবার অসাধারণ কিছু নয়; দুধ-ছিড়া-কলা মাত্র। উক্ত ধরনের খাবার বর্ণিত প্রফেসর সাহেবেরও প্রিয় ছিল। তিনি খাবারের লোভে নয়; বরং কৌতুহলী হয়েই হুজুর কেবলার দিকে একটু দৃষ্টি দিয়েছিলেন। কিন্তু এতেও হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজের দৃষ্টি এড়ায়নি। তিনি তাঁর অন্তরদৃষ্টি দিয়ে উল্লেখিত প্রফেসর সাহেবের মনের অবস্থা দেখে ফেলেন, তাই তিনি তাঁর বাসা থেকে আনিত ইফতারি অল্পকিছু খেয়ে বাকী সবটুকু প্রফেসর সাহেবকে দিয়ে খাবার অনুরোধ করেন। প্রফেসর সাহেব হুজুর কেবলার এহেন উদার আচরণ দেখে কিছুটা অবাক হন। অন্যরা তাঁকে বাহবা দিয়ে বলেন, আপনার জীবন ধন্য। আমরা যা পাওয়ার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষায় থাকি, আপনি তা সৌভাগ্য বসত: পেয়ে গেলেন। এ ছোট্ট ঘটনাতে হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজের উদারতা, ইছার ও অন্তরদৃষ্টিসম্পন্ন হবার প্রমাণ পাওয়া যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাঁর অলিগণের ব্যাপারে সতর্ক হবার তৌফিক দান করুন।

 

লেখক : আরবী বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


আরও খবর