Logo
শিরোনাম

শিশুদের টিকা নিতে নিবন্ধন করতে হবে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৮ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ |

Image

করোনা মহামারি প্রতিরোধে ৫ থেকে ১২ বছরের শিশুদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। টিকা নিতে তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে এক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সভাপতি মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

তিনি বলেন, ৫ থেকে ১২ বছরের শিশুদের যাদের জন্ম নিবন্ধন নেই, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করে নিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আবেদন করার পর দ্রুত শিশুদের এই টিকা দেওয়া হবে।

মীরজাদী সেব্রিনা সবাইকে করোনার বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পাশাপাশি আসন্ন কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।


আরও খবর



মুজিবনগর সরকার : মুক্তিযুদ্ধে প্রভাব

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ |

Image

সোহেল মাজহার: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সঠিকভাবে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে মুজিবনগর সরকারের ঐতিহাসিক ভূমিকা অপরিসীম। অর্থাৎ অস্থায়ী প্রবাসী মুজিবনগর সরকার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কার্যকর ও আইনসঙ্গত নেতৃত্ব প্রদান করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৬৬ সালে তার ঐতিহাসিক ছয় দফা উত্থাপন করেন। ছয় দফা উত্থাপনের কারণে বঙ্গবন্ধু মুজিবকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মুখোমুখি হতে হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি ও ছয় দফার পক্ষে প্রবল জনমত গঠন হয়। একই ধারাবাহিকতায় ৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি অভিনব ও স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তি পান এবং ২৩ ফেব্রয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে ছাত্র জনতার পক্ষে তোফায়েল আহমেদ তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন। ছয় দফার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ ৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদে ১৬৭ টি আসন ও প্রাদেশিক পরিষদে ২৮৮টি আসনে জয়লাভ করে।

৭১-এর মার্চের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাববিস্তারি ঘটনা হলো রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ। এই ভাষণে মাত্র ১৭/১৮ মিনিটে পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক ২৩ বৎসরের শাসন-শোষণ ও বঞ্চনার নির্মম ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি বাঙালি জাতির গৌরবময় আন্দোলন সংগ্রামের কথা স্মরণ করেন। ভাষণের একটি পর্যায়ে বলেন, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট, যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।

 আরো উল্লেখ করেন, প্রত্যেক পাড়ায়-মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুলুন। একেবারে শেষ পর্যায়ে তিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা, অমোঘ বাণী উচ্চারণ করেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। মূলত এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু মুজিব আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠ করা ছাড়া অলিখিতভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক সংগঠন, সশস্ত্র ট্রেনিং গ্রহণ, সেল্টার ও গেরিলা যুদ্ধ সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামরিক পরিচালনার দিকনির্দেশনা ছিল ৭ মার্চের ভাষণে।

৭ মার্চের ভাষণের আলোকে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র অসহযোগ আন্দোলন সংঘটিত হয় । এই সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু মুজিবের নির্দেশে সমগ্র জাতির উদ্দেশ্যে ৩৫ দফা নির্দেশনা ঘোষণা করেন। এদিকে ৭ মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে খোদ ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক ট্রেনিং সেন্টার স্হাপিত হয়। আবার ১৯ মার্চ জয়দেবপুরে ঘটে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী জয়দেবপুরে অবস্থানরত বাঙালি রেজিমেন্টেকে নিরস্ত্র করতে চাইলে মেজর শফিউল্লাহ এর নেতৃত্বে বাঙালি সৈনিকগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করে, তা প্রতিরোধ করে।

এই ঘটনায় মনু মিয়া, হুরমত ও নিয়ামতসহ স্হানীয় চারজন শহিদ হন। অন্যদিকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী কালক্ষেপণ করে সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করে। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ঢাকা শহরে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে। প্রাথমিক অবস্হায় একযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, আবাসিক ভবন - ডরমিটরি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও ই.পি.আর পিলখানায় ব্যাপত গনহত্যা চালায়। এই রাতেই গণহত্যা ঢাকা শহরের বস্তি এলাকা, রাজপথ ও ফুটপাতেও চলে। মোদ্দাকথা এক রাতের মধ্যে ঢাকা শহর মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠে। পাকিস্তান বাহিনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ৩২নং ধানমন্ডি, তাঁর বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বমুহূর্তে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি করতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।

২৬ মার্চ থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইপিআর, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীসহ স্হানীয় মুক্তিকামী মানুষ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে। এ সকল যুদ্ধ ছিল অবিচ্ছিন্ন, অসংগঠিত , তাৎক্ষণিক এবং অনেক ক্ষেত্রে তা নেতৃত্বহীন-অদূরদর্শী। একথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেরণার মূলে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা ও ৭ মার্চের ভাষণ। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের একটি প্রবল আইনগত ও সাংবিধানিক ভিত্তি আছে। আর তা হলো ৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয় অর্জন।

এটিই মুক্তিযুদ্ধকে সমগ্র পৃথিবীতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক ও আইনি বৈধতা দান করে। পৃথিবীর অনেক দেশের ন্যায্য স্বাধীনতা ও মুক্তির লড়াই শুধুমাত্র নিরঙ্কুশ রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি স্বাধীনতাকামী গ্রুপগুলো নিজেদের মধ্যে অন্তঃ লড়াইয়ে যুক্ত হয়ে তা দীর্ঘস্হায়ী হয়েছে । আফগানিস্তান, কাশ্মীর ও আরাকানসহ পৃথিবীতে এরকম অনেক উদাহরণ আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তাঁর উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। যতটুকু অন্তঃবিরোধ, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ছিল, তা যৎসামান্য। মূলত ১৭ এপ্রিল মুজিব নগর সরকার গঠিত হওয়ার ফলে একটি রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সফলভাবে পরিচালিত হয়।

বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হয়ে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। আওয়ামী লীগের অনেক জাতীয় নেতা আত্মগোপন করেছেন। নেতারা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। অনেকের কাছেই অনেকের খবর নেই। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হলেও পাকিস্তান বাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণে রক্ষণাত্মক ভূমিকায় যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকছে না। রাজনৈতিক নেতৃত্ব শিথিল কিংবা নেই। স্হানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অনেক এমএনএ ও এমপিএ প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ অধিকাংশজন আত্মগোপনে চলে যায়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ এই নেতৃত্বহীনতা ও বঙ্গবন্ধু মুজিবের অনুপস্থিতি তীব্রভাবে অনুভব করেন। পাকিস্তান বাহিনীর গণহত্যার পর প্রাথমিকভাবে আত্মরক্ষা করে তিনি ঢাকা থেকে গা ঢাকা দেন। ২৭ মার্চ তিনি ঝিনাইদহ উপস্থিত হন৷ তৌফিক এলাহি ও মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রমের প্রমুখের সহায়তায় সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত চলে যান। মার্চের ৩০ তারিখ পশ্চিম বাংলা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২ এপ্রিল তিনি দিল্লিতে যান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সবধরনের সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দেন। উভয় নেতা বাংলাদেশের স্বাধীনতা তথা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি রাজনৈতিক সরকারের অভাব অনুভব করেন। তাজউদ্দিন আহমদ দিল্লি থেকে ফিরে এসে কুষ্টিয়া সীমান্তে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত এমএনএ ও এমপিদের নিয়ে একটি অধিবেশন আয়োজন করেন।

অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০ এপ্রিল অস্থায়ী প্রবাসী সরকার গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের কারাগারে রেখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপরাষ্ট্রপতি এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। প্রধানমন্ত্রী হন তাজউদ্দিন আহমদ। মন্ত্রিপরিষদের অন্যন্য সদস্যগণ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এ এইচএম কামারুজ্জামান ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ। অস্হায়ী প্রবাসী সরকার ১৭ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার ঐতিহাসিক আম্রকাননে শফথ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ, ভারত ও পৃথিবীর আরো কয়েকটি দেশের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকার অধ্যাপক ইউসুফ আলী। মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। শফথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ সংক্ষিপ্ত ও তাৎপর্যময় বক্তব্য রাখেন।

তাজউদ্দিন আহমদ তার বক্তব্যে বৈদ্যনাথ তলার নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম করেন মুজিবনগর। এই নতুন নামকরণের মধ্য দিয়ে প্রবাসী সরকার মুজিবনগর সরকার নামে অধিক পরিচিতি পায়। মুজিবনগর সরকারের নামকরণের তাৎপর্য অন্য জায়গায়। এই নামকরণের মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হলো পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকলেও বঙ্গবন্ধু মুজিবই মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক। তার নেতৃত্বেই অস্থায়ী প্রবাসী সরকার ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হচ্ছে। কার্যত মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বিকল্প ছিল না। যে কারণে অনেকে বিশ্বাস করতেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্ত আছেন এবং তিনি সশরীরে যুদ্ধ পরিচালনা করছেন।

এর আগে আরো কিছু ঘটনা ঘটে। ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। ৪ এপ্রিল বাংলাদেশের কিছু ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা সিলেটের তেলিয়াপাড়া চা বাগানে মেজর খালেদ মোশাররফের অস্থায়ী দপ্তরে মিলিত হন। তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সামরিক বিবেচনায় তারা সমগ্র বাংলাদেশকে চারটি অঞ্চলে বিভক্ত করে। দায়িত্বগুলো ছিল নিম্নরূপ ১. চট্টগ্রাম অঞ্চল - মেজর জিয়াউর রহমান ২. কুমিল্লা অঞ্চল - মেজর খালেদ মোশাররফ ৩. সিলেট অঞ্চল - কে. এম শফিউল্লাহ ও ৪. যশোর অঞ্চল - মেজর কে.এম আবু ওসমান চৌধুরী। কিন্তু যাই হোক প্রবাসী মুজিবনগর সরকার গঠিত না হলে এসব কিছুকে অনুমোদন ও বৈধতা দেওয়ার কেউ ছিল না। মুক্তিযুদ্ধ আইনের দৃষ্টিতে স্বাধীনতা যুদ্ধ না হয়ে বিচ্ছিনতাবাদী যুদ্ধে রূপান্তরিত হতো।

যা হোক, প্রবাসী সরকারের দপ্তর স্থাপিত হয় ৮ থিয়েটার রোড কলকাতায়। ইতোমধ্যে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর স্বাধীনতা ঘোষণা প্রবাসী সরকার অনুমোদন করে। মুক্তিযুদ্ধকে সফলভাবে পরিচালনা করার জন্য শফথ গ্রহণের পূর্বেই ১১ এপ্রিল এম এ জি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করে ১১ জন সেক্টর কমান্ডারের ওপর দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়।

'ভারতের মাটিতে অবস্থান করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য ভারতসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতা আদায়ের রাজনৈতিক সরকারের কোনো বিকল্প ছিল না। কারণ সরকার কিংবা বৈধ প্রতিনিধি না থাকলে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকার কার সঙ্গে কথা বলবে, নেগোসিয়েটেড করবে। বাংলাদেশের অস্থায়ী প্রবাসী মুজিব নগর সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক সরকার গঠনের পাশাপাশি প্রশাসন কাঠামো ও সুসংহত আমলাতন্ত্র গঠন করেছিল। ১১ জুলাই সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। মুক্তিবাহিনীর সেক্টর গঠনের সমান্তরালে ১১টি আঞ্চলিক পরিষদ ( zonal Council) গঠন করে। ১১টি আঞ্চলিক পরিষদ ১১ জন করে চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে মূলত মুক্তিবাহিনীর উপর বেসামরিক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়।

২০ তারিখের মন্ত্রিপরিষদের সভায় সরকার একটি পূর্ণাঙ্গ সরকার কাঠামো গঠনের লক্ষ্যে কতগুলো মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ২. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৩. অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪. মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয় ৫. সাধারণ প্রশাসন বিভাগ ৬. স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় ৭. তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয় ৮. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়(৯) ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় (১০) সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (১১) কৃষি বিভাগ (১২) প্রকৌশল বিভাগ। মন্ত্রী পরিষদের কর্তৃত্বে আরও কয়েকটি সংস্থা গঠিত হয়। সংস্থাগুলো হলো ১. পরিকল্পনা কমিশন ২. শিল্প ও বাণিজ্য বোর্ড ৩. নিয়ন্ত্রণ বোর্ড, যুব অভ্যর্থনা শিবির ৪. ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিটি ৫. শরনার্থী কল্যাণ বোর্ড। উপরিউক্ত মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্হা সৃষ্টি করা ছাড়াও অগ্রিম পরিকল্পনা প্ল্যানিং সেল, গণহত্যা সেল ও উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে। বিশেষত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনের জন্য প্রতিনিধিদল প্রেরণ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এভাবেই সোভিয়েত ব্লক সহ পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশসহ তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ব্যক্ত করে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকগণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দাঁড়ানোর পিছনে প্রবাসী সরকারের তৎপরতা ছিল লক্ষণীয়।

ভারত বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর জন্য ট্রেনিং সেন্টার স্হাপন, অস্ত্র-রশদ সরবরাহ ও লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদান, ভারতের মাটিতে প্রায় ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার পেছনে অস্থায়ী সরকারের ভূমিকা ছিল। ৩ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী গঠন, ৬ ডিসেম্বর ভুটানের কাছ থেকে স্বীকৃতি আদায়, ৭ ডিসেম্বর ভারতের স্বীকৃতি প্রদান প্রবাসী সরকারের বড় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সাফল্য। সবচেয়ে বড়ো কথা বাংলাদেশের ১১ টি সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিবাহিনী প্রবাসী সরকারের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের অধীনে ছিল। প্রবাসী সরকারের অনুমোদন ছাড়া তা মুক্তিযুদ্ধ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে না। মুক্তিবাহিনী সরকারের অনেকগুলো বিভাগের মধ্যে একটি বিভাগ। অবশ্য এটিই ছিল সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ বা অঙ্গ। কাজেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুজিবনগর সরকার ও মুক্তিযুদ্ধ অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত।

লেখক : অধ্যাপক, কবি ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক। ইমেইল : [email protected]


আরও খবর

ভালো থাকুক পৃথিবীর সব মা

রবিবার ১২ মে ২০২৪




টি-টোয়েটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের স্কোয়াড চূড়ান্ত

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ |

Image

আর মাত্র দেড় মাস পরেই যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েটি বিশ্বকাপের নবম আসর। এই আসরকে কেন্দ্র করে স্কোয়াড গোছাতে মাঠে নেমে পড়েছে দলগুলো। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়, শক্তিশালী দল তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পারছে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নির্বাচক প্যানেল।

বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড প্রায় চূড়ান্ত বিসিবির। শুধু কয়েক জায়গায় বার বার চিন্তা করছে নির্বাচক, কোচ ও অধিনায়ক।

শ্রীলঙ্কার সিরিজের মাঝ পথে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। তবে আসন্ন বিশ্বকাপে তার ওপরেই ভরসা রাখছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তার সঙ্গী হিসেবে দেখা মিলবে সৌম্য সরকারের। বাড়তি ওপেনার হিসেবে দলে জায়গা পাচ্ছেন তরুণ তানজিদ তামিম।

লঙ্কানদের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে সৌম্যর বদলি হিসেবে খেলতে নেমে ৮১ বলে ৮৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে কোচ এবং টিম ম্যানেজমেন্টের বিশ্বাস অর্জন করেছেন তানজিদ হাসান তামিম। তিনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, এরপর তাওহীদ হৃদয় এবং সাকিব আল হাসানের জায়গা নিশ্চিত।

ফিনিশারের ভূমিকা পালনের জন্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পাশাপাশি তরুণ জাকের হোসেনকে দলে রাখতে চায় নতুন নির্বাচক প্যানেল। বিপিএলের পর লঙ্কানদের বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছিলেন এই ডান হাতি ব্যাটার।

বাংলাদেশের স্কোয়াডে তিন পেসার অটোচয়েজ। যেখানে রয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ। তবে পেস বিভাবে শক্তি বাড়াতে লড়াই হচ্ছে তানজিম হাসান সাকিব ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের মধ্যে। দীর্ঘ দিন ধরেই পেস বোলিং অলরাউন্ডারের অভাব ভালোভাবেই টের পাচ্ছে টাইগাররা।

তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট হওয়ায় বিশ্বকাপ দলে সাইফউদ্দিনই এগিয়ে রয়েছে। কারণ, নতুন বলে সুইং এবং ডেথ ওভারে এই ডান বোলারের ইয়োরকার দেওয়ার দক্ষতা যেকোনো দলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

অন্যদিকে স্পিন বিভাগে মূল ভূমিকায় থাকবেন সাকিব আল হাসান। তার সঙ্গে দেখা যাবে লেগ স্পিন অলরাউন্ডার রিশাদ হোসেন ও অফ স্পিন অলরাউন্ডার শেখ মাহেদী। বিপিএল এবং লঙ্কানদের বিপক্ষে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন এই দুই ক্রিকেটার। ফলে ১৫ সদস্যের স্কোয়াডের ১৪ জন ক্রিকেটার চূড়ান্ত।

তবে ১৫ নম্বর সদস্য কে হবে তা নিয়ে বিশেষভাবে চিন্তা করছে নির্বাচকরা। একটি জায়গার জন্য লড়াই করছেন তানজিম হাসান সাকিব, শামীম হোসেন পাটেয়ারী ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। তবে সাইফউদ্দিনকে দিয়ে চার পেসার নিশ্চিত হওয়ায় এই লড়াই থেকে পিছিয়ে পড়েছেন তানজিম সাকিব।

তাই মিডিল অর্ডারের অভাব পূরণের জন্য শামীম ও আফিফের মধ্যে একজনকে বেঁছে নিতে চাইবে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে আফিফের বিপিএলের ব্যর্থতা এবং দীর্ঘ দিন জাতীয় দলের বাইরে থাকায় শামীমের জায়গা অনেকটাই নিশ্চিত। এ ছাড়াও কোচ হাথুরুসিংহের অপছন্দের তালিকায় রয়েছেন আফিফ। ফলে সব কিছু মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয়তো মিস করতে চলেছে এই বাঁহাতি ব্যাটার।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য বিশ্বকাপ স্কোয়াড: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়, মাহমদুউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলি, রিশাদ হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিদ হাসান তামিম, শেখ মাহেদী ও শামীম পাটোয়ারী।


আরও খবর



কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের ১০ চুক্তি স্বাক্ষর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ |

Image

দ্বৈতকর পরিহারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয়ে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও কাতার।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।

চুক্তিগুলো হলোউভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষাসংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকিসংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতাসংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দুদেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠনসংক্রান্ত চুক্তি।

আর সমঝোতা স্মারকগুলো হলোকূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।

এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক হয় তাদের। দুপুরে চামেলী হলে দুদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আমির।


আরও খবর



বাইডেনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাফায় ইসরায়েলি হামলা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ |

Image

ইসরাইলকে সতর্ক করেছে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা যখন যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে কায়রোতে, তখন সব সতর্কতাকে থোড়াই কেয়ার করে রাফায় হামলা চালিয়েছে ইসরাইল সোমবার রাতভর  সেখানে বিভিন্ন অবস্থানে হামলা চালিয়েছে তারা এতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন মিশর সীমান্তের সঙ্গে রাফা ক্রসিং পয়েন্টেরও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা একদিকে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা, অন্যদিকে ইসরাইলের নৃশংস যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিরতি চেষ্টাকে অনিশ্চিত করে তুলেছে সৌদি আরব সতর্ক করে বলেছে, অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে ইসরাইলি বাহিনী তাদের ভূমিকাকে প্রত্যাখ্যান করে সৌদি আরব তারা বলেছে, এর ফলে রাফায় মানবিক সংকট তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে খর্ব করা হচ্ছে

ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব ওদিকে সোমবারই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তিনিও রাফায় হামলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ওদিকে কাতার মিশরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত মেনে নেয় হামাস কিন্তু ইসরাইল ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তারা জানায়, এতে তাদের দাবি পূরণ হয়নি

 

জন্য মধ্যম পর্যায়ের ইসরাইলি কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদলের গতকাল আবার কায়রো যাওয়ার কথা। তবে তারা কি ভূমিকা নেবেন, তা স্পষ্ট নয়। ২৭শে এপ্রিলের প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তাতে যুদ্ধ বন্ধের কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে ইসরাইল থেকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক কমপক্ষে ১৩০ জিম্মির মুক্তির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। তারা বলেছে, এই প্রস্তাবের মধ্যে ফিলিস্তিনি বন্দি মারওয়ান বারঘোতির মতো নেতাদের মুক্তির কথা বলা হয়েছে। তিনি এমন একজন নেতা ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ হামলায় যার ভূমিকা আছে। জন্য তাকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়েছে। ইসরাইলি কর্মকর্তারা বলছেন, হামাসের এসব বন্দিকেও মুক্তি দিতে হবে। জন্য না বলে দিয়েছে ইসরাইল। অবস্থায় যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এরই মধ্যে মিশরের রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট আল কাহেরা নিউজ টিভি রিপোর্ট করেছে যে, উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা গতকালও চলছিল। মিশরীয় কর্মকর্তারা রাফায় ইসরাইলের অভিযান অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু ইসরাইলি প্রতিনিধিদল কায়রো পৌঁছানোর আগেই মিশরের সঙ্গে রাফা ক্রসিং পয়েন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ইসরাইল। এর ফলে গাজায় মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো। কারণ, অন্য সব সীমান্ত বন্ধ থাকলেও রাফা সীমান্ত দিয়ে নিরীহ অভাবী গাজাবাসীর কাছে আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছাচ্ছিল। তার নিয়ন্ত্রণ ইসরাইলিরা নেয়ার ফলে তা বন্ধ হয়ে গেল 

সোমবার দিবাগত রাতভর রাফায় বিভিন্ন ভবনের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে ইসরাইলিরা এতে কমপক্ষে ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মিশর লাগোয়া রাফা সীমান্তে ট্যাঙ্ক ভারী অস্ত্রের মাধ্যমে এই হামলা চালিয়েছে তেল আবিব হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেয়া সত্ত্বেও রাফায় ইসরাইলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে মিশর তারা বলেছে, এতে যুদ্ধবিরতির যে প্রচেষ্টা চলছে, তা হুমকিতে পড়বে রাফা সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ইসরাইলি সেনাবাহিনী নেয়ার পরপরই এমন বিবৃতি দিয়েছে মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবস্থায় জাতিসংঘ বলেছে, রাফা সীমান্তে জাতিসংঘকেও প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না ইসরাইল জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র জেন্স লায়েরকে বলেন, রাফা সীমান্তে এখন আমাদের কোনো সদস্যের শারীরিক উপস্থিতি নেই আমাদের প্রবেশাধিকারকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নতুন করে যে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা শুরু হয়েছিল, তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে 

ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া কাতারের প্রধানমন্ত্রী এবং মিশরের গোয়েন্দা প্রধানকে তাদের প্রস্তাব মেনে নেয়ার কথা জানানোর পরেও সোমবার দিবাগত রাতে রাফায় হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইল। এতে যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব এখন অনেকটাই অনিশ্চিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে হামাস মিশর এবং কাতারের প্রস্তাবে সম্মত হলেও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই প্রস্তাবের শর্তগুলো তাদের দাবি পূরণ করেনি। ইসরাইল চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার পাশাপাশি রাফাতে হামলা অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ বলছেÑ রাফায় হামলা অব্যাহত থাকলে চরম দুর্ভিক্ষে পতিত হবে গাজাবাসী

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ই অক্টোবর ইসরাইলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামলা চালায় হামাস এরপর থেকে গাজায় যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করে উপত্যকাটিতে পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরাইল যাতে যাবৎ প্রাণ হারিয়েছে ৩৪ হাজার ৭৩৫ ফিলিস্তিনি আহতের সংখ্যা ৭৮ হাজারের বেশি তারপরও সোমবার গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বোমা ফেলেছে ইসরাইলি বাহিনী এতে শিশু সহ বিপুল সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন  উল্লেখ্য, নুসেইরা হলো এমন একটি এলাকা, যেখানে রাফা থেকে পালিয়ে আসা নিরীহ ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছেন 

ওদিকে লেবাননে উদ্ধারকারীদের ওপর ইসরাইলের হামলায় সাতজন নিহত হওয়ায় মঙ্গলবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তারা একে নিরীহ, বেসামরিক লোকজনের বিরুদ্ধে অন্যায় হামলা বলে অভিহিত করেছে। ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করতে। ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে হামাস রকেট হামলা চালানোর পর হামাসের মিত্র হিজবুল্লাহ ইসরাইলি সেনাদের মধ্যে প্রায়দিনই ইসরাইল-লেবানন সীমান্তে হামলা-পাল্টা হামলা হচ্ছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ২৭শে মার্চ লেবাননের হাবারিয়ে গ্রামে একটি জরুরি রিলিফ সেন্টারে ইসরাইল হামলা চালিয়েছে। এতে সাতজন স্বেচ্ছাসেবী নিহত হয়েছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে এসব নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। যেহেতু এটা যুদ্ধাপরাধ বলে মনে হচ্ছে, তাই এর তদন্ত হওয়া উচিত


আরও খবর

চীন সফরে যাচ্ছেন পুতিন

বুধবার ১৫ মে ২০২৪




ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ |

Image

তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া ৮ বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) মর্গ থেকে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় নৌকাডুবিতে তাদের মৃত্যু হয়।

আজ বিকেলে ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সায়েম ইমরানের উপস্থিতে বিমানবন্দর থানার এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম মৃতদেহগুলোর আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন। যেহেতু ওই দেশে ইতিপূর্বে তাদের ময়নাতদন্ত হয়েছে তাই নতুন করে আর করা হয়নি।

মৃতরা হলেন- মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সেনদিয়া গ্রামের সজল বৈরাগী (২২), একই থানার কদমবাড়ি গ্রামের মৃত পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস (১৮), সরমঙ্গল গ্রামের মামুন শেখ (২৪), কোদালিয়া গ্রামের কাজী সজীব (১৮), কেশরদিয়া গ্রামের তোতা খলিফার ছেলে কায়সার খলিফা (৩৫) গোপালগঞ্জ জেলার মোকসেদপুর থানার দাদন শেখের ছেলে রিফাত শেখ (২৪) একই থানার পদ্মপট্টি গ্রামের আবুল কাশেম শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৫) এবং পদ্মাপট্টি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপন (২৩)।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা হয়েছে। আপনারা জানেন, সৌদি এয়ারলাইন্সে বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে মরদেহগুলো বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। মাননীয় পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখানে উপস্থিত আছেন। সবার মতামতে, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পূর্ব নির্ধারিত ফরেনসিক চিকিৎসক প্রভাষক ডা. ফাহমিদা হকসহ আমরা তিনজন, ডেড বডিগুলোর আলামত দেখলাম।

দেশের বাইরে যে পোস্টমোর্টেম হয়েছে তা দেখলাম, সেখানে কোনোরকম কোনো প্রবলেম আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য। এখানে যাদের গার্ডিয়ান আছে, ম্যাজিট্রেট স্যারের উপস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস চেক করে, মরদেহগুলো তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করি।

তিনি আরো বলেন, এই মামলায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন- যুবরাজ ও কামাল।

তাদেরকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে যে সব তথ্যাবলি পাওয়া গেছে, তা যাচাই করা হচ্ছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক চক্র, এদের সাথে যাদের কানেক্টিভিটি আছে দেশে এবং দেশের বাইরে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনিটরিং করছেন বলেও জানান তিনি। এর সাথে যারই কানেক্টিভিটি পাব বা থাকবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।


আরও খবর