Logo
শিরোনাম

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোনও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি : রাশিয়া

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ায় সফররত উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোনো সামরিক চুক্তি করেননি বলে জানিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন।

গত মঙ্গলবার ট্রেনে করে রাশিয়ায় পৌঁছান পারমাণবিক শক্তিসমৃদ্ধ দেশ উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। তার এ সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছিল, রাশিয়ার কাছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিক্রির চুক্তি করতে পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে দেশটিতে যাবেন কিম।

তবে শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ক্রেমলিন জানিয়েছে, এ ধরনের কোনো চুক্তি হয়নি।  

এদিকে পুতিনের সঙ্গে কিমের এ বৈঠক নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলো। কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়াকে স্যাটেলাইট ও রকেট উৎক্ষেপণের প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে রাশিয়া।

তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে করা চুক্তির একটিও ভঙ্গ করবেন না তারা।

এ ব্যাপারে পুতিন বলেছেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের প্রতিবেশী, এবং আমাদের অবশ্যই, যে কোনো ভাবে বা যে কোনো উপায়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে প্রতিবেশীসূলভ সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘হ্যাঁ, কিছু নির্দিষ্ট বিষয় কোরিয়ান উপদ্বীপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, আমরা এগুলো নিয়ে আলোচনা করি, আমরা প্রকাশ্যে এগুলো নিয়ে আলোচনা করি। আর এক্ষেত্রে আমরা কোনো কিছু ভঙ্গ করি না এবং ভঙ্গ করবও না।’

দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়া কোনো সামরিক চুক্তি করলে এর মাধ্যমে জাতিসংঘের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করা হবে।



আরও খবর



অক্টোবরেই ভোটের হিসাব চুকাতে চায় দুই দল

প্রকাশিত:রবিবার ০১ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

অক্টোবরেই ভোটের হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে নিতে বেশ ব্যস্ত দেশের প্রধান প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান চাইছে দল দুটি। আর সব যদি ঠিক থাকে তাহলে নভেম্বরেই ঘোষণা হবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির ব্যাপারে বিপরীতমুখী অবস্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপি। ভিসানীতির ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মনোভাব নেতিবাচক হলেও এর ঠিক বিপরীত অবস্থানে বিএনপি। এ অবস্থায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের রাজনীতিতে দেশ নিয়ে প্রধান দুটি দলই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মনোভাব স্পষ্টভাবে জানার অপেক্ষায়।

বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর প্রয়োজন মনে করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ অবস্থায় খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা প্রসঙ্গ উঠে আসতেই ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে দল দুটির। তাকে দেশের বাইরে পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে পারছে না বিএনপি। দলীয় প্রধানকে বিদেশ পাঠানোর জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হলেও নির্ধারিত সময় পর তাদের নীরবতাকে দুর্বলতা হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ।

এ পরিস্থিতিতে প্রায় মহলেই প্রশ্নএ অক্টোবরে রাজনীতির মাঠে কী হবে, সমঝোতা না সংঘাত? নাকি ভিন্ন কিছু? বিএনপি জানিয়েছে, এ অক্টোবরেই বর্তমান সরকারের পতন হবে। আর আওয়ামী লীগ বলেছে, সরকারের উন্নয়নের চমকে এই অক্টোবরেই কবর হবে বিএনপির রাজনীতির।

আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন শুধুই দুই দলের যেমন দূরত্ব বাড়ছে, একই সঙ্গে অস্থিরতা তৈরি করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের ভাষ্যমতে, তফসিল ঘোষণার আগেই চলমান সমস্যার সমাধান করতে হবে। কিন্তু সমস্যা সমাধানে এখনো কোনো আভাস দেখা যাচ্ছে না। দুদলই তাদের অবস্থানে অটল।

ক্ষমতাসীন দল সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নির্বাচন আয়োজন এবং অংশগ্রহণে অটল। কিন্তু প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল বিএনপির অবস্থান ভিন্ন। এ দল কোনোভাবেই প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না। আর এই সমস্যা ঠিক কতদিন চলবে কিংবা কখন এর সমাধান হবে, তা নিয়েই এখন যত জল্পনা-কল্পনা। তবে সব সমস্যাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আস্থার পরিবেশ না থাকলেও রাজনীতিতে সংলাপের ভূমিকা রয়েছে। যদিও আগের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছিলেন, কিন্তু তাতে সমাধান আসেনি। তারপরও সংলাপের বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, এবারও সরকারি দলের পক্ষ থেকে সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ আরও সুন্দর করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এতে বিরোধী দলের আস্থা আসবে। সংকটও কেটে যাবে। আর বিদেশিরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক যে নির্বাচনের কথা বলছে, এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নির্বাচনের জন্য উদ্যোগী হতে হবে সরকারকে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, শুধু সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হতে পারে। সংকট নিরসনে এর কোনো বিকল্প নেই। দেশের মানুষও সংলাপ চায়। তবে এ সংলাপ হতে হবে শর্তহীন। আর সমস্যার যদি সমাধান না হয় তাহলে একতরফা নির্বাচন হবে। এতে অস্থির পরিবেশ হবে। যা কখনোই কাম্য নয়। বিদেশিরা ভোটাধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলতেই পারেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান আমাদেরই করতে হবে। সেটিও অবশ্যই বাইরে থেকে নয়।

এদিকে সংলাপের ক্ষেত্রে শর্তজুড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগের সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেয়ার পরই হতে পারে সংলাপ। কিন্তু এ প্রস্তাব মানতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবি থেকে বিএনপি যদি সরে আসে তবেই সংলাপ হতে পারে।

দুই দলের এ বক্তব্যে এটা স্পষ্ট, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি শর্তহীন সংলাপে রাজি নয়। ফলে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য করছেন উভয় দলের শীর্ষ নেতারা। এ অবস্থায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ যে পথে চলছে তাতে ধ্বংস হয়ে যাবে তারা। এই আওয়ামী লীগের পতন অক্টোবরেই হবে। আর এর জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, সরকারের উন্নয়নের চমকে অক্টোবরেই কবর হবে বিএনপির।

বিএনপির আন্দোলন : আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে অক্টোবরজুড়ে রাজপথে সক্রিয় থাকার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুটি দলই ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করছে। তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার পতনের এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে চাইছে বিরোধী দল বিএনপি। এ দল রোডমার্চ ও সমাবেশের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর কৌশল নেবে। নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা রাখার জন্য মাঠ দখলে রাখতে চাইছে।

আন্দোলন পরবর্তী ধাপে সরকার পতন ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি বাস্তবায়নে কঠোর কর্মসূচির ব্যাপারেও নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির। এ জন্য সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওসহ অবস্থান ও হরতালের মতো কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে। আর এসবই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ার ওপর। এ অবস্থায় যদি আন্দোলনকে দমন-পীড়নের মাধ্যমে বন্ধ করার চেষ্টা করা হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপি ও সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর।

সরকারের উন্নয়ন ও সমাবেশ : এদিকে অক্টোবরজুড়ে সরকারের উন্নয়ন প্রদর্শনের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে আওয়াম লীগ। এ মাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল, পদ্মা সেতুতে রেল চলাচল, বঙ্গবন্ধু টানেল এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল উদ্বোধন করা হবে। এসব উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধনের পর জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আগামী ৭ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন বিমানবন্দর এলাকায় আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। ১০ অক্টোবর উদ্বোধন করা হবে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা ট্রেন চলাচল। উদ্বোধনের দিন ফরিদপুরে ভাঙ্গা স্টেডিয়ামে আয়োজিত সমাবেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এ সমাবেশে পাঁচ লাখ মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।


আরও খবর

আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে ছাড় নয়

মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩




এসএমইতে সর্বনিম্ন বিনিয়োগ সীমা পুনঃনির্ধারণ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ০২ অক্টোবর 2০২3 |

Image

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ছোট মূলধনী কোম্পানির জন্য গঠিত এসএমই মার্কেটে লেনদেন করতে হলে ন্যূনতম ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এমন বিধান বহাল রেখেছে উচ্চ আদালত।

এর আগে, গত বছর এসএমই মার্কেটে বিনিয়োগের সর্বনিম্ন বিনিয়োগের পরিমাণ ২০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ লাখ করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসির এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের ১৩ নভেম্বর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন রাজু হাসান নামের একজন বিনিয়োগকারী।

তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামালের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ন্যূনতম ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগের নিয়ম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এরপর আপিল নিষ্পত্তি শেষে বিএসইসির আদেশ বহাল রেখেছেন উচ্চ আদালত। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর দেওয়া তথ্য মতে, ডিএসইর এসএমই মার্কেটে যোগ্য বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তারা শেয়ার বিক্রি করেন। এখন থেকে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের লেনদেন করতে হলে ন্যূনতম বিনিয়োগ থাকতে হবে ৩০ লাখ টাকা। তবে কেবল তারা এসএমই মার্কেটে লেনদেন করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, বর্তমানে এসএমই মার্কেটে বেঙ্গল বিস্কুটস, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়স, এপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস, মাস্টারফিড অ্যাগ্রোটেক, অরিজা অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ও হিমাদ্রি লিমিটেডসহ ১৭টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে বেঙ্গল বিস্কুটস, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়স, এপেক্স ওয়েভিং, হিমাদ্রি লিমিটেড ও ইউসূফ ফ্লাওয়ার মিলসকে ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট (ওটিসি) থেকে এসএমই প্লাটফর্মে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি ১২টি কোম্পানি এ মার্কেটে কোয়ালিফায়েড ইনভেস্টর অফারের (কিউআইও) মাধ্যমে নতুন করে তালিকাভুক্ত হয়েছে।


আরও খবর

সন্ত্রাসীদের তালিকা করছে র‌্যাব

মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩




আত্রাইয়ে আ’লীগ নেতাকে মারপিট, ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ জন কারাগারে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

রাণীনগর (নওগাঁ) সংবাদদাতা : নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিশা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মোল্লাকে মারপিটের মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন তোফাসহ ৯ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রাজজ আদালতের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ এ আদেশ দেন।

আসামিরা হলেন উপজেলার বিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন তোফা, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বিধু ভূষন দাস।অন্যরা হলেন মকবুল শেখ, মিলন হোসেন, সজল, সাদ্দাম হোসেন, বুলু, হাবিবুর রহমান ও লিমন। তাদের সবার বাড়ি আত্রাই উপজেলার বৈঠাখালী,সমাসপাড়া,মোহনঘোষ ও চক্রধর এলাকায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১আগস্ট দুপুরে উপজেলার বিশা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মোল্লা মটরসাইকেল নিয়ে সমাসপাড়া বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ অফিসে যাওয়ার সময় ভাঙ্গা জাঙ্গাল চার মাথার মোড়ে আসামীরা তাকে মারপিট করে খুন জখম করে। এ ঘটনায় ২আগস্ট আব্দুল মান্নানের ভাই চাঁদ মোল্লা বাদী হয়ে আত্রাই থানায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এঘটনায় পুলিশ হারুন,ফরিদ এবং শাহাজাহান নামে ৩ আসামীকে  গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করেন। ঘটনার পর থেকে আসামীরা পলাতক ছিলেন। আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রাজজ আদালতের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ তাদেরকে  কারাগারে প্রেরণ করেন।

বাদী চাঁদ মোল্লা বলেন,আসামিরা আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

বাদী পক্ষের সরকারী কৌশলী (পিপি) আব্দুল খালেক বলেন, আসামিরা উচ্চ আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তা না মনঞ্জুর করে তাদেরকে ৬সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেক আজ আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন চাইলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন


আরও খবর



পাল্টে যাচ্ছ মহাদেবপুর শহর চৌমাশিয়া বাজারের চিত্র

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর মহাদেবপুর সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ চলছে, কাজ সম্পূর্ণ হলে পাল্টে যাবে উপজেলা সদর শহরের চিত্র, কমবে জন-দূর্ভোগ। ইতি মধ্যেই সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। গত বছর শুরু হওয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের উন্মেষ সূচনা ঘটবে। একই সাথে পাল্টে যাবে মহাদেবপুর উপজেলা সদর শহর সহ এলাকার সড়কের চেহারা। এমনটিই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

সওজ বিভাগ নওগাঁ থেকে আত্রাই, বদলগাছী, মহাদেবপুর আর মান্দা থেকে নিয়ামতপুর পর্যন্ত ৬টি সড়কে মোট ১৪টি প্যাকেজে আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়নের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এজন্য বরাদ্দ করা হয়েছে এক হাজার একশ’ কোটি টাকা। মহাদেবপুর অংশে ব্যয় হবে একশ’ ২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে রয়েছে নওগাঁ টু মহাদেবপুর হয়ে পত্নীতলা সড়কের চৌমাশিয়া বাজার (নওহাটামোড়) থেকে আখেড়া পর্যন্ত। শুধু মহাদেবপুর না ইতি মধ্যেই নওগাঁ জেলার মধ্যেমনি স্থান হিসেবে পরিচিত চৌমাশিয়া (নওহাটামোড়) বাজারে ব্যাপক উন্নয়ন এর ছোয়াতে পাল্টে গেছে এবাজারের চেহারা। পুঠে ওঠেছে এক সুন্দর বাজার এর চিত্র। তারপরও চলমান রয়েছে আরো কাজ। কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে জনগুরুত্বপূর্ণ তিন-মাথা চৌমাশিয়া (নওহাটামোড়) বাজার সর্বসাধারনের কাছে বিনোদন কেন্দ্র হয়ে ফুটে ওঠবে বলেই মনে করছেন মানুষজন। মহাদেবপুরে চলমান আখেড়া থেকে কালুশহর মোড় পর্যন্ত এবং কালুশহর মোড় থেকে পত্নীতলা বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত প্রতি প্যাকেজে ৯ থেকে ১০ কিলোমিটার। এছাড়া মহাদেবপুর কুঞ্জবন থেকে ছাতুনতলী নতুন হাট পর্যন্ত ০ থেকে ৯ কিলোমিটার। 

চৌমাশিয়া (নওহাটামোড়) বাজার থেকে পত্নীতলা বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত সড়কের স্বাভাবিক চওড়া হবে ১০ দশমিক ৩ মিটার অর্থাৎ ৩৪ ফুট। তবে মহাদেবপুর উপজেলা সদর এলাকায় বচনা ব্রিজের পশ্চিমে চাউল কল মালিক গ্রুপের অফিস থেকে ঘোষপাড়ার মোড় আলফা ক্লিনিকের সামনে পর্যন্ত মোট এক কিলোমিটার ৩০০ মিটার সড়ক হবে আরসিসি ঢালাই। আর চওড়া হবে ৬৮ ফুট। মাঝখানে থাকবে আইল্যান্ড। ইতিমধ্যেই এর ৬০০ মিটার ঢালাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৭০০ মিটারের কাজ রয়েছে চলমান। মহাদেবপুর কুঞ্জবন থেকে ছাতুনতলী নতুন হাট পর্যন্ত সড়ক হবে ১৮ ফুট চওড়া। আর বিভিন্ন বাজার এলাকায় হবে ২৪ ফুট আরসিসি ঢালাই। 

এসব সড়কে প্রয়োজনীয় স্থানে নতুন ব্রিজ ও কালভার্টও নির্মাণ করা হবে। 

পাশাপাশি মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ডে বর্তমানে যে মাছের মোড়ের মাছের ফোয়ারা আর চারমাথা বকের মোড়ের বকের ফোয়ারা আর থাকবেনা। এ দুটি স্থানে তৈরি হবে চৌমাশিয়া (নওহাটামোড়) বাজারের আদলে বিশাল ইন্টারসেকশন। আগামী এক দের বছরের মধ্যেই এগুলোর কাজ শেষ হবে। এগুলো সম্পন্ন হলে মহাদেবপুর উপজেলা সদর শহরের চেহারাও পাল্টে যাবে। জাতীয় সংসদ-৪৮, নওগাঁ-৩, মহাদেবপুর-বদলগাছী আসনের এমপি আলহাজ্ব মোঃ ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিম এর উদ্যোগে বিশাল বাজেট এর উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এমপি'র প্রচেষ্টায় ৩৪ ফুট চওড়া ঢালাই সড়ক বচনা ব্রিজ এলাকা থেকে বাড়িয়ে আখেড়া ওসমান গণির বয়লারের ওপার কালভার্ট পর্যন্ত এবং ঘোষপাড়ার মোড় আলফা ক্লিনিকের সামনে থেকে বাড়িয়ে বরেন্দ্র মোড় পর্যন্ত বর্ধিত করার চেষ্টা চলছে ৬৮ ফিট করণের। এছাড়া উপজেলা সদরের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে মহাসড়কের পাশ দিয়ে নতুন ড্রেনেজ ব্যবস্থাও সংযোগের উদ্যোগ নিয়েছেন এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার। 

সরেজমিনে উপজেলা সদরের বুলবুল সিনেমা হল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া শিবগঞ্জ মোড়ে সড়কে আরসিসি ঢালাই দেয়া হচ্ছে। সেখানে পাওয়া গেলো সড়ক ও জনপথ বিভাগ নওগাঁর পত্নীতলা উপ-বিভাগের মহাদেবপুর এর দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি প্রকৌশলী নুর আহমেদকে। তিনি জানালেন প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। প্রকল্পটি শেষ হলে এলাকার সড়ক যোগাযোগে প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হবে। অপরদিকে নওগাঁ জেলার মধ্যেবর্তী স্থান ও জেলার জনগুরুত্বপূর্ণ তে-মাথা চৌমাশিয়া (নওহাটামোড়) বাজারে ও ব্যাপক উন্নয়ন কাজ দ্রুত গতীতে এগিয়ে চলেছে। কাজ সব সম্পূর্ণ হলে এবাজার এর চেহারাও পাল্টে যাবে বলেই বলাবলি করছেন সর্ব-সাধারন।


আরও খবর



মহান সাধক সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল-হাসানী (রহ.)

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর 20২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

অধ্যাপক ড. এস. এম. রফিকুল আলম : আল্লাহ তাআলা মানুষকে পৃথিবীতে খলিফা হিসাবেই প্রেরণ করেছেন। মানুষের প্রতি আল্লাহর খলিফা বিশেষণের মাহাত্ম্য যথাযথ অনুধাবন না করার কারণে আল্লাহর গুণ ও মানুষের যোগ্যতার মধ্যকার ব্যবধান একাকার করে গোলিয়ে ফেলি এবং কথায় কথায় শিরক-বিদআতের ফতোয়া দিই। আল্লাহর নিরানব্বই বা ততোধিক গুণবাচক নাম যেমন, সত্য ও বাস্তব; সে গুণবাচক নামের প্রতি আমাদের ঈমান যেমন যথাযথ থাকা আবশ্যক তেমনি মানুষ নামক সৃষ্ট জীব দুনিয়াতে আল্লাহর খলিফা (প্রতিনিধি) সেটাও সত্য। খলিফা হিসাবে দুনিয়াতে মানুষকে মেনে নেয়াও ঈমানের অংশ।

ইবলিশ মানুষকে দুনিয়াতে খলিফা হিসাবে মেনে সিজদা না করাতে অভিশপ্ত হয়েছে।
আল্লাহ কে? আল্লাহপাক হচ্ছেন তাঁর নিরানব্বই বা ততোধিক গুণে অসীম শক্তির অধিকারী। আল্লাহর পবিত্র জাত ও গুণের অস্তিত্বকে অকপটে সন্দেহাতীতভাবে স্বীকার করা একজন মুমিনের জন্য ঈমানের প্রধান শর্ত। কোন মানুষ আল্লাহর পবিত্র জাত কিংবা গুণের কোন একটিকে অস্বীকার বা সন্দেহ করলে তাকে ঈমানদার বা বিশ্বাসী বলা যাবেনা। মানুষ সৃষ্টি করা না হলে কিন্তু এ বিশ্বাসের প্রতিফলন সম্ভব ছিলনা। কেননা আল্লাহ নিরাকার, আল্লাহকে দেখা, কল্পনায় চিত্রায়িত করা, তাঁর গুণের বাস্তব চিত্রায়ণ মানুষের পক্ষে সম্ভব ছিলনা। নিরাকার আল্লাহর অস্তিত্ব বা গুণ কোনটাই মানুষের পক্ষে বাস্তবে বিশ্বাস করাও সম্ভব ছিলনা; যদিনা সে গুণ খলিফা তথা
মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি। খলিফা বা প্রতিনিধির কাজ কি? পৃথিবীতে আল্লাহর কাজের আন্জাম দেয়াই প্রতিনিধির কাজ।

পৃথিবীতে আল্লাহর কাজ কি? আল্লাহর নিরানব্বইটি গুণই আল্লাহর কাজ। আল্লাহর খলিফাগণ পৃথিবীতে তাঁর নিরানব্বই গুণের প্রতিফলন ঘটাবে।

তাহলে কি তারা আল্লাহ হয়ে গেল ? নাউযু বিল্লাহ। খলিফা আল্লাহ হতে যাবেন কেন? খলিফা তো সৃষ্ট আলাদা সত্তা। খলিফার মধ্যে আল্লাহর গুণের প্রতিফলন তো আল্লাহ প্রদত্ত যোগ্যতা। যিনি যোগ্যতা দান করেছেন কৃতিত্বতো তাঁরই। খলিফার মধ্যে আল্লাহ গুণের প্রতিফলন তো কৃত্রিমভাবে। গুণের মৌলিকত্বতো আল্লাহর সাথে। সুতরাং বান্দার মধ্যে আল্লাহর গুণের বা আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিফলন মানলে বা বিশ্বাস করলে আল্লাহর সাথে বান্দাকে শরিক করা হবেনা বরং বান্দাকে আল্লাহর প্রকৃত খলিফা হিসাবে স্বীকার করা হবে।


খলিফার অর্থ বা সংজ্ঞার ব্যপারে আমাদের স্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণে খলিফা ও আল্লাহর মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয় করার যোগ্যতা অর্জিত হয়না। যার ফলে বান্দা কখন শিরক করে আবার কখন ইবাদত করে তা আমাদের বোধগম্য হয় না। তাই আমরা যখন তখন, যাকে তাকে, যেখানে সেখানে, শিরকের ফতোয়া দিয়ে ফেলি। সুতরাং যে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকবে না সে বিষয়ে সাবধানে কথা বলা উচিত। আল্লাহর গুণের প্রতিফলন মানুষের মধ্যে অস্বিক্বার করলে দুনিয়া অর্থহীন হয়ে যাবে। মানুষ সৃষ্টির আসল রহস্যই অস্পষ্ট থেকে যাবে। মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। আল্লাহ প্রত্যেক মানুষকে আল্লাহর গুণের প্রতিফলনের যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এ কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। তাই কোন মানুষের মধ্যে আল্লাহর কোন গুণের প্রতিফলন দেখার বর্ণনা দিলেই তিনি শিরক করেছেন বলে ফতোয়া দেয়া জগন্য অন্যায়। বরং দেখা উচিৎ তিনি কি ঐ মানুষকে আল্লাহর আসনে সমাসিন করছেন নাকি তাকে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে স্বীকার করেই তাঁর গুণের বর্ণনা দিচ্ছেন। তাই যদি হয়, তাহলে তিনি তো আল্লাহর প্রিয় বান্দার খিলাফতকে স্বীকার করেছেন মাত্র। এতে তো তার ঐ বান্দার দোষের কিছু নেই। বরং তা আল্লাহ ও আল্লাহর বান্দার যোগ্যতা ও উদ্দেশ্যকে তুলে ধরেছেন।


এ তো গেলো আল্লাহর খিলাফত। এ খিলাফতের আহাল দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর সব মানুষ।
এখানে প্রশ্ন আসতে পারে, “আল্লাহর খিলাফতও আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফত কি এক? নাকি ভিন্ন ভিন্ন? এর উত্তর হচ্ছে, ভিন্ন ভিন্ন। কেন না, আল্লাহর খলিফা পৃথিবীর সব মানুষ- যাদের মধ্যে আল্লাহর নিরানব্বই গুণের প্রতিফলন আছে। এরা সবাই কিন্তু, আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফতের অনুসারী বা ওয়ারিশ নন। শুধুমাত্র তারাই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খলিফা (প্রতিনিধি, উত্তরাধিকার-ওয়ারিশ) হবেন। যিনি আল্লাহকে ইলাহমেনে আনুগত্য স্বীকার করে, নিজের স্বাধীন সত্তাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার আনিত দ্বীনের প্রতি সোপর্দ করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি তাঁর মধ্যকার আল্লাহ প্রদত্ত খিলাফতকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফতের প্রতি সোপর্দ করেছেন, কেবল মাত্র তার খিলাফতই আল্লাহর নিকট গৃহিত হবে, অন্যথায় হবে না। আমাদের সমাজের ওলামায়ে কিরামগণ যে কোন কারণে হউক না কেন আল্লাহর খিলাফত ও রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফত কে একাকার করে ফেলার কারণে, কথায় কথায় শিরকের ফতোয়া দিয়ে থাকেন। এটা এক ধরনের অজ্ঞতা বৈ কিছু নয়।


আল্লাহর খিলাফত আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবার উপায় কি? সব মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর খলিফা হলেও সবার খিলাফত কি আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য? এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, না? সবার খিলাফত আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। তা হলে কোন্ খিলাফত আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য, আর কোন্ খিলাফত নয়? এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, আল্লাহর খিলাফত যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার খিলাফতের আলোকে হবে, তখন তাঁর খিলাফত (প্রতিনিধিত্ব) আল্লাহর নিকট গৃহিত হবে, অন্যথায় হবেনা। যাঁরা আল্লাহর খলিফা হয়ে আল্লাহর রাসূলের খিলাফতের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন আমার আজকের আলোচ্য ব্যক্তি হচ্ছেন তাদের অন্যতম।


নিম্নে হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজের উপর কিঞ্চিত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হলো। আমাদের হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজের আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার সাধারণ কোন খলিফা নন। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার উত্তরাধিকারও বটে। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার বংশধরদেরও একজন। তিনি সাধারণ অর্থে আল্লাহর রাসূলের খলিফা ছিলেন না; তিনি তাঁর যুগে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার আশেক ও জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের একনিষ্ঠ খাদেম হিসাবে বলিষ্ট ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি আল্লাহর রাসূলের ক্বদম ব-কদম অনুসারী ছিলেন। তিনি একমাত্র ওলি যিনি জাতিসংঘ নামক বিশ্ব দরবারে প্রিয়নবী মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার শানকে সম্মানের সাথে প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশে মিলাদুন্নবী উদযাপনের মত সাহসী কর্মসূচি বা বাস্তবায়ন করেছিলেন। তিনি বিশ্বব্যাপী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা-বিশ্বাসকে বিশ্ব মুসলিম জনতার মধ্যে প্রতিস্থাপন করার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি তাঁর যুগে মুজাদ্দিদের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।


তিনি আচরণের দিক থেকে অসম্ভব বিনয়ী, ভদ্র ও নম্র ছিলেন। তিনি হুবহু রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার পদাংক অনুসরন করতেন। তিনি মেহমানদারীতেও আল্লাহর রাসূলের সুন্নাতের অবিকল আদর্শ ছিলেন। তিনি নিজের উপর অন্যকে প্রাধান্য দিতেন। তাঁর চেহারা মোবারক ও আচরণ দেখলে আল্লাহর রাসূল ও তাঁর সাহাবীগনের কথা স্মরণ হয়ে যেত। তাঁর সুঠাম উজ্জ্বল দেহ, নূরানী চেহারা, পরনে ধবধবে সাদা লুঙ্গী বা পাজামা, গায়ে সাদা পাঞ্জাবী, মাথায় টুপী, ইত্যাদি মিলিয়ে যেই ব্যক্তিত্তের প্রকাশ ঘটত, তা সত্যিই অভাবনীয়। তাঁর পৌরুষ দীপ্ত ও বীরোচিত আচরণ যে কোনো ধর্মের কিংবা দলের- মতের লোককে কাবু করে ফেলত। তাঁকে দেখা মাত্র মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সবাই মাথা নত করে ফেলত। ভক্তবৃন্দ সুবোধ বালকের মত শান্তশিষ্ট নিবেদিত প্রাণ হয়ে যে কোনো হুকুম কালবিলম্ব না করে তামিল করতে কোনো রকম কুণ্ঠাবোধ করতো না। হুজুরের যে কোনো নির্দেশ তামিল করাকে নিজের জন্য সৌভাগ্য মনে করত।


তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত অকর্ষণ ক্ষমতা, উষ্ণ হে প্রবণতা, দায়িত্ববোধ, উন্নত জীবনাদর্শ, সেবামূলক মনোভাব, জ্ঞানপিপাসু মন, ভক্ত ও শাগরিদদের প্রতি মমত্ত, নৈতিক আদর্শ, মানষিক সুস্থতা, ধৈর্য, দৃঢ়চেতা মনোভাব, সমাজ সচেতনতা, ব্যক্তিগত অধিকার ও মর্যাদায় বিশ্বাস, নির্ভীকতা, দল মত জাতি নির্বিশেষে সবার প্রতি স¤প্রীতি ও সদ্ভাব সারা জীবন অক্ষুণœ ছিলো। তাঁর খোদাভীরুতা, রসুল-প্রেম, ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন বলয়ে নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিক সফলতা দেশ, জাতি ও আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তির দিশা হিসাবে ভূমিকা পালন করত। তাঁর উপস্থিতি যে কোনো মজলিশ বা অনুষ্ঠানকে নক্ষত্রের মত উদ্ভাসিত ও আলোকিত করত।


অনেক সময় আল্লাহ তাআলা তাঁর বিশেষ বান্দাকে দিয়ে বিশেষ কোন গুণের বিশেষ প্রতিফলন ঘটিয়ে ঐ বান্দার মর্যাদাকে বাড়িয়ে দেন। উদ্দেশ্য ঐ বান্দার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করা। যখন কোন মকবুল বান্দার মধ্যে এ ধরনের কোন গুণের অস্বাভাবিক প্রতিফলন ঘটে তখন সাধারণ বান্দার কাজ হচ্ছে, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা বাড়িয়ে তাকে অনুসরণ করা। তাঁকে অবহেলা বা তাঁর সমালোচনা করা নয়। এতে আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হন। কারণ কোন বান্দার অস্বাভাবিক ঘটনা; কারামাত, অলৌকিক ঘটনা আল্লাহ তাআলার ইচ্ছাতে ঘটে। এর দ্বারা হিদায়ত উদ্দেশ্য। গোমরাহী নয়। আমরা হেদায়তের পথেই থাকি। গোমরাহীর পথে নয়। ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসারীরা গোমরাহীর পথকে বেছে নিয়েছে। আমরা যেন তা না হই।


বান্দা যখন তাঁর দাসত্ব দ্বারা আল্লাহর অধিক নিকটে হয়ে যান তখন তাঁকে স্বাভাবিকতার ঊর্ধ্বে নিয়ে গিয়ে তাঁকে দুনিয়বাসীর জন্য মডেল (আদর্শ) হিসাবে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে তাঁকে দিয়ে তাঁর (আল্লাহর) শক্তির বিশেষ প্রদর্শন ঘটান। উদ্দেশ্য তাঁকে দুনিয়াবাসীর নিকট বিশেষ মর্যাদার আসনে আসীন করানো এবং অন্য বান্দাগণকে আল্লাহর দাসত্বে তাঁর অনুগত ও অনুসারী বানানো। অদূরদর্শিরা এটা গ্রহণে ব্যর্থ হয়। ফলে তারা তাঁর অনুগত হতেও বঞ্চিত হয়। অবশ্য কিছু সুবিধাবাদী এর জন্য দায়ী। যারা নিজেদের দুনিয়াবী সুবিধার জন্য আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের এ ধরণের অলৌকিক ঘটনাকে ব্যবহার করে নিজেদের দুনিয়াবী সুবিধা আদায় করে নেয়। তাঁদের ব্যাপারে সাবধান হওয়া প্রয়োজন আছে।
হযরত শাহ্সূফী সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজ অন্তরদৃষ্টির অধিকারী ছিলেন। তিনি একজন মানুষকে দেখে তাঁর অন্তরের অবস্থা বুঝে নিতেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও গ্রহণ করতেন। অলি-আল্লাহগণের অন্তরদৃষ্টি সম্পর্কে আল্লাহর রাসূলের একটি পবিত্র হাদীস নিরূপ: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামা তাঁর পবিত্র যবানীতে বলেন, উচ্চারণ: ইত্তাকু ফিরাসাতিল মুমিনি ফায়িন্নাহু ইয়ানজুরু বিনুরিল্লাহি

 

(অর্থাৎ, তোমরা মুমিনের অন্তর দৃষ্টিকে ভয় কর কেননা তাঁরা আল্লাহর নূর দ্বারা দৃষ্টিপাত করেন।) পুরা হাদিছটি নিম্নরূপ:


উচ্চারণ: আন আবি সাঈদিল খুদরী ক্বালা ক্বলা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লামা ইত্তাকু ফিরাসাতিল মুমিনি, ফায়িন্নাহু ইয়ানজুরু বিনূরিল্লাহি ছুম্মা ক্বারা আ- ইন্না ফী জালিকা লাআইয়াতিল লিল মুতা ওয়াস সিমিন। অর্থাৎ, হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামা ইরশাদ করেছেন, তোমরা মুমিনগণের অন্তরদৃষ্টিকে ভয় কর, কেননা তাঁরা আল্লাহর নূর দ্বারা দৃষ্টিপাত করেন। ইমাম তিরমিযী রহমাতুল্লাহি তায়ালা আলাইহি তাঁর সহীহ গ্রন্থের ৩১২৭ নম্বরে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন।


আমার আলোচনার সাথে সংশ্লিষ্ট ছোট্ট একটি ঘটনার বিবরন দিয়ে আমার লেখার ইতি টানবো। চট্টগ্রামস্থ আল্লামা রুমী সোসাইটির একটি তাসাউফের প্রোগ্রামে হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজ উপস্থিত ছিলেন। সময়টি ছিল রমজান মাস। উক্ত তাসাউফের প্রোগ্রামে অন্যান্য সদস্যদের সাথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রফেসর ড.গিয়াসুদ্দীন তালুকদারও উপস্থিত ছিলেন। তিনি হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজকে কৌতুহলের বসে ভালোভাবে অনুধাবন করছিলেন।

 

 হুজুর কেবলা সাধারণ ইফতারী গ্রহণে মাজুর ছিলেন বিধায় তিনি নিজ বাসা থেকে নিজের ইফতারী নিয়ে এসেছিলেন। তাও আবার অসাধারণ কিছু নয়; দুধ-ছিড়া-কলা মাত্র। উক্ত ধরনের খাবার বর্ণিত প্রফেসর সাহেবেরও প্রিয় ছিল। তিনি খাবারের লোভে নয়; বরং কৌতুহলী হয়েই হুজুর কেবলার দিকে একটু দৃষ্টি দিয়েছিলেন। কিন্তু এতেও হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজের দৃষ্টি এড়ায়নি। তিনি তাঁর অন্তরদৃষ্টি দিয়ে উল্লেখিত প্রফেসর সাহেবের মনের অবস্থা দেখে ফেলেন, তাই তিনি তাঁর বাসা থেকে আনিত ইফতারি অল্পকিছু খেয়ে বাকী সবটুকু প্রফেসর সাহেবকে দিয়ে খাবার অনুরোধ করেন। প্রফেসর সাহেব হুজুর কেবলার এহেন উদার আচরণ দেখে কিছুটা অবাক হন। অন্যরা তাঁকে বাহবা দিয়ে বলেন, আপনার জীবন ধন্য। আমরা যা পাওয়ার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষায় থাকি, আপনি তা সৌভাগ্য বসত: পেয়ে গেলেন। এ ছোট্ট ঘটনাতে হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজের উদারতা, ইছার ও অন্তরদৃষ্টিসম্পন্ন হবার প্রমাণ পাওয়া যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাঁর অলিগণের ব্যাপারে সতর্ক হবার তৌফিক দান করুন।

 

লেখক : আরবী বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


আরও খবর