মুন্সী মো.আল ইমরান :চাঁদাবাজদের দখলে চলে গেছে যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন এলাকা নেই কোন দায়িত্ববোধ,নেই কোন জবাবদিহিতা। ঈদকে সামনে রেখে যাত্রাবাড়ীর ফুটপাথ ও মার্কেটে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চাঁদাবাজ গ্রুপ। চাঁদাবাজদের হাতে জিম্মি বিভিন্ন শ্রেণির ব্যবসায়ীরা। ফুটপাথের ব্যবসায়ী থেকে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী সবাইকে গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের চাঁদা। যারা চাঁদা তোলেন, তাদেরকে বলা হয় লাইনম্যান। এ লাইনম্যানদের মাধ্যমে তোলা চাঁদার টাকা যাচ্ছে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, দুর্নীতিবাজ কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা এবং অদৃশ্য গডফাদারদের পকেটে।
যাত্রাবাড়ী
থানার সামনে ও পেছনে মহাসড়ক দখল করে কাঁচাবাজার বসে প্রতিদিন। আছে অবৈধ লেগুনা,
ট্রাক ও পিকআপ স্ট্যান্ড। এখান থেকে দৈনিক কয়েক লাখ টাকা চাঁদা তোলা হয়। এছাড়া
যাত্রাবাড়ী মাছ, ফল ও কাঁচাবাজারে ট্রাক-পিকআপে মাছ নিয়ে এলেই বেপারিদের গুনতে
হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। বিভিন্ন নামে-বেনামে এসব চাঁদা আদায় করা হয়। এছাড়া
যাত্রাবাড়ী মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ দোকান ও ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত শনির আখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল,
তুষারধারা, সাদ্দাম মার্কেট, মহাসড়কের ওপর ফুটপাথ দখল করে অবৈধ সিএনজি, ইজিবাইক ও
অটোরিকশা, প্রাইভেট কার স্ট্যান্ড এবং সড়কের দুইপাশে দোকান বসিয়ে চলছে বেপরায়া
চাঁদাবাজি। কতিপয় পুলিশ সদস্যের যোগসাজশে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ ও
সহযোগী সংগঠনের নেতা নামধারীরা এখান থেকে চাঁদা তোলে। সরেজমিনে দেখা যায়,যাত্রাবাড়ী
থানার সামনে ও পেছনে হিউম্যান হলার ও লেগুনা পরিবহণ স্ট্যান্ড রয়েছে। মহাসড়কে
লেগুনা পরিবহণ নিষিদ্ধ হলেও ২ শতাধিক লেগুনা মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়ায়। প্রতি লেগুনা
পরিবহণ থেকে জিপির নামে দৈনিক ৫৫০ টাকা, লাইনম্যানের নামে ২০ টাকা করে আদায় করা
হয়। যাত্রাবাড়ী ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে সুফিয়া প্লাজা পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাথে ৩০টি
দোকান বসিয়ে প্রতি দোকান থেকে দৈনিক ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা করে আদায় করেন জনৈক
সোনামিয়া।
ডিসি
মো. শাহ ইফতেখার আহম্মেদ বলেন, অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে অবৈধ দখল ও অব্যবস্থাপনা এখন
বাস্তবতা। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক মহলের সজাগ দৃষ্টি প্রয়োজন। তবে চাঁদাবাজির সঙ্গে
পুলিশের জড়িত থাকার বিষয়টি অনেক সময় লাইনম্যানরা বলে বেড়ায়। তারপরও চাঁদাবাজির
সঙ্গে কতিপয় অসাধু পুলিশ, রাজনীতিক ও প্রভাবশালী মহলের সমন্বয় থাকতে পারে। যদি
কোনো পুলিশের সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে
চাঁদাবাজির বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ অনেক ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের দাবি, ঈদের আগে
ব্যবসায় অনেক লাভ হয় আর এই সময়ে মিডিয়ার সামনে এসব বললে চাঁদাবাজরা তাদের ওপর
ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধ করে দিতে পারে এজন্য তারা কিছুই বলতে চান না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগি কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান,এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামেও চাঁদা তোলা হচ্ছে।